কোরবানি ঈদের এক মাসের বেশি সময় বাকি থাকলেও, দেশের বাজারে বেড়েছে সব ধরনের মসলার দাম। এক বছরের ব্যবধানে শুধু এলাচের দামই বেড়েছে ৬০ ভাগের বেশি। বাড়তি অন্যসব মসলার দামও। এ জন্য ডলার সংকটসহ নানা অজুহাত দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। ভোক্তাদের অভিযোগ, বাজারে পর্যাপ্ত নজরদারি না থাকায় বাড়ছে দাম।
বছরের অন্য সময়ের তুলনায় কোরবানির ঈদে মসলার চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। এবার ঈদের আগেই ঊর্ধ্বমুখী মসলার বাজার।
একজন ক্রেতা ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘এখন তো দাম দিন দিন বাড়ছে। যেটার দাম একবার বাড়ে সেটা আর কমে না। ১০০ টাকার জিনিস ২০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।’
ঢাকার খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি এলাচ মানভেদে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির তথ্য মতে, গত বছরের একই এলাচের কেজি ছিল ১ হাজার ৬ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা। বছরের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ৬২ শতাংশ। বেড়েছে অন্যান্য মসলার দামও।
একজন খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, ‘ডিসেম্বরে প্রতিকেজি এলাচ আমরা ২ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি করেছি। এটার এখন দাম ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৯০০ টাকা। মানে কেজিতে প্রায় ১ হাজার ৫০০ টাকার মতো বেড়েছে।’
রাজধানীর পাইকারি বাজারে দেখা যায়, এলাচের কেজি সাড়ে ৩ হাজার টাকা, জিরা ৬৮০, লবঙ্গ ১ হাজার ৪০০, দারুচিনি ৪০০ টাকা। চট্টগ্রামের পাইকারী বাজার, খাতুনগঞ্জেও দাম বাড়তি।
রাজধানীর এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, ‘মুলত এলসি সমস্যার কারণেই দামটা বেড়েছে। অনেকেই এলসি কমিয়ে দিয়েছেন। এরমধ্যে ডলারের দামও হঠাৎ বেড়ে গেলো।’
আমদানি করা পাইকারি পণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের আমদানিকারক এহসান উল্লাহ জাহেদী বলেন, ‘গত ১৫ দিন আগেও আমরা দেখেছি এলাচের বাজার প্রায় ৪ হাজার থেকে ৪১০০ টাকায় চলে গিয়েছে। এরপর দুই তিনদিনের ব্যবধানে এটি কমে ৩৫০০ টাকায় চলে এসেছে। গত দুদিন ধরে আবার এটা ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়ে ৩৭০০ থেকে ৩৮০০ টাকা হয়েছে।’
হঠাৎ এই দাম বৃদ্ধির জন্য ডলারের দাম বৃদ্ধিসহ এলসি সংকটের অজুহাত দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। মসলাজাত পণ্যের আমদানিতে সরকারের সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ মসলা ব্যবসায়ী সমিতির।
বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘যখন বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাবে, তখন ডিউটি (শুল্ক) কমে যাবে। তাহলে এটা ব্যালেন্স হবে, মানুষ খেতে পারবে। কিন্তু সরকার তো পাল্লা দিয়ে আরও বাড়ায়। এটার দাম বেড়েছে, এটার ডিউটি বাড়া। তারপর ট্যারিফের নামে একটা ফাঁদ তৈরি করে রেখেছে।’