কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় ২০২৩ সালের ১৮ জুন শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর থেকে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় এজেন্টদের বিদেশে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে ভূমিকা নিয়ে তীব্র কূটনৈতিক উত্তেজনা চলছে।
গত ২৫ জুন কানাডায় নিজ্জর হত্যাকাণ্ডের শুনানি হয়। সেখানে প্রসিকিউটররা ভারতের সম্পৃক্ততার অভিযোগের প্রমাণ উপস্থাপন করেন। এছাড়া, শিখ নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নিখিল গুপ্তকে চেক প্রজাতন্ত্র থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ করা হয়েছে।নিজ্জরের মৃত্যুর প্রথম বার্ষিকীতে ভ্যাঙ্কুভারে ভারতীয় কনস্যুলেটের বাইরে শিখ কর্মীরা প্রতিবাদ মিছিল করে। এসময় কারাগারে বন্দীর পোশাক পরিহিত মোদির একটি কুশপুত্তলিকা বহন করে তারা ভারত সরকারের ভূমিকার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়।
কানাডার পার্লামেন্টে নিজ্জরের প্রতি সম্মান জানিয়ে কিছু সময় নীরবতা পালন করা হয়, যা ভারতে ক্ষোভের সঞ্চার করে। ভারত সরকার ২০১৯ সালে নিজ্জরকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল।
কানাডার শিখরা একটি পৃথক শিখ রাষ্ট্র খালিস্তান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণভোট আয়োজন করে আসছে। পরবর্তী ভোট আগামী ২৮ জুলাই ক্যালগারিতে অনুষ্ঠিত হবে।
ভারত এই ঘটনাগুলোতে তাদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে আসছে। কানাডা-ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে নিজ্জর হত্যায় ভারতের সম্ভাব্য জড়িত থাকার বিষয়ে তদন্তের কথা বলেছিলেন, যা ভারত প্রত্যাখ্যান করেছে।
নিজ্জর হত্যাকাণ্ড নিয়ে কানাডা ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। ভারত কানাডার জন্য ভিসা প্রক্রিয়া স্থগিত করেছিল এবং কূটনীতিকদের প্রত্যাহার করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রে পান্নুন হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নিখিল গুপ্তের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি চলছে। গুপ্তর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ায় ভারতীয় এজেন্টদের বিরুদ্ধে শিখ জনগোষ্ঠীকে হয়রানি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ নিয়েও তদন্ত চলছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানিজ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সম্মানিত করলেও এসব অভিযোগ নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। সূত্র : আল জাজিরা