উন্নত চিকিৎসার জন্য ৮ নভেম্বর লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে যাচ্ছেন মেডিকেল বোর্ডের ৭ চিকিৎসক।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
এ সময় জানানো হয়, খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাচ্ছেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডাক্তার জাহিদ, শাহাবুদ্দিন, আরেফিন, নূর উদ্দিন, এফ এম সিদ্দিক, জাফর, মামুন।
এর আগে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
ঐ সময় এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছিলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে প্রথমে লং ডিসেটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডন নেয়া হবে। সেখানে থেকে তাকে তৃতীয় একটি দেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টারে নেয়া হবে।
তিনি জানান বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বিদেশে নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
জাহিদ বলেন, অতি দ্রুত যেন ওনাকে বিদেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি হাসপাতালে নিতে প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। তার অংশ হিসেবে আমরা লং ডিসটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করার জন্য কাজ শুরু করেছি, যোগাযোগ চলছে। প্রথমে ম্যাডামকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে স্টেওভারের পরে মাল্টি ডিসেপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টার যে দেশে আছে সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে।
তিনি আশা করেন, প্রক্রিয়া শেষ করে অতি দ্রুতই খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে পারবেন।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কেমন জানতে চাইলে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ম্যাডাম গুলশানের বাসায় আগের মতোই মেডিকেল বোর্ডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধায়নে আছেন। উনার অবস্থা স্থিতিশীল।
তিনি জানান, খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার ব্যবস্থা করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও চিঠি দেওয়া হয়েছে।
জাহিদ বলেন, কারণ ম্যাডামের সঙ্গে চিকিৎসক-নার্সসহ আত্বীয়-স্বজন যারা যাবেন তা জানানো হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সনের লিভার ট্রান্সপারেন্ট করতে হবে। এটি যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র দুই-একটি সেন্টার রয়েছে। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস,কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে আইসিইউতে রেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে দীর্ঘ সময়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানান, খালেদা জিয়াকে এমন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বিদেশে নেয়া হবে, সেখানে সব ধরনের চিকিৎসা সহায়তার ব্যবস্থা থাকতে হবে। বর্তমান শর্ট ডিসেটেন্সে চার ঘণ্টায় যাওয়ার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে যা সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডে রোগী নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু লন্ডন যেতে ১৪ ঘণ্টার লং ডিসটেন্স এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পৃথিবীর কয়েকটি দেশে রয়েছে সেসব দেশের সঙ্গে চিকিৎসকরা আলোচনাও করেছেন।
এ সময় জানানো হয়, খালেদা জিয়ার সঙ্গে যারা যাবেন তাদের পাসপোর্ট ভিসা হয়ে গেছে। ১৫ জন যাবেন।
ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে সরকার পতনের পর গত ২১ আগস্ট এভারকেয়ার হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসাধীন থেকে বাসায় ফেরেন।