কোভিড মহামারি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশন জটের সমস্যাকে বিবেচনায় নিয়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়টি ‘যৌক্তিক’ বলে মনে করছেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী; যিনি সম্প্রতি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন।
তিনি বলেছেন, আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে এই কমিটি বয়সসীমা বাড়ানোর ‘সুপারিশ করবে’। আজ বুধবার সচিবালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মুয়ীদ।
তিনি বলেন, এই কমিটির একটাই ফোকাস, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পর্যালোচনা। বয়সসীমা নিয়ে অনেকদিন ধরে আন্দোলন চলছে। এটার ভিত্তিতে সরকার আমাদের পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করে দিয়েছে। আমাদের আগামী এক সপ্তাহের মধ্য প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বয়স বৃদ্ধির দাবিতে যারা আন্দোলন করছে তাদের সঙ্গে আমরা বসেছিলাম। সরকারের বর্তমান নীতিমালা, ভবিষ্যত কর্মপন্থা ও সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে সবকিছু চিন্তা করে আমরা এ বিষয়ে সুপারিশ করব। বয়স বৃদ্ধি করার যৌক্তিকতা আছে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷
কী ধরনের যৌক্তিকতা দেখছেন জানতে চাইলে সাবেক এই সচিব বলেন, কোভিড, সেশন জটের অনেকের সমস্যা হয়েছে৷ এখন চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো উচিত৷
আন্দোলন শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি রাসেল আল মাহমুদ বলেন, বয়সসীমা পর্যালোচনা কমিটির সঙ্গে তাদের ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ আলোচনা হয়েছে। উনারা আমাদের যুক্তিগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কী সিদ্ধান্ত আসে আমরা সেটার অপেক্ষায় থাকব।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর নির্ধারণের বিষয়ে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে সরকার সিদ্ধান্ত দিতে চেয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন চাকরিতে ৩৫ প্রত্যাশী আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক রাসেল মাহমুদ৷
তিনি বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আমাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য টিম করে দিয়েছিলেন। সেই টিমের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে৷ তারা আমাদের কথা শুনেছেন৷ স্যাররা বলেছেন আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে একটা যৌক্তিক সমাধান দেবেন তারা৷
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা এখন ৩০ বছর। এটি ৩৫ করার দাবিতে কয়েক বছর ধরেই ‘চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ’ এর ব্যানারে নিয়মিত কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ সরকার সেই দাবি একাধিকবার নাকচ করে দেয়। গণআন্দোলনে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এরপর থেকে নানা দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন নিজ নিজ দাবিতে কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলনে নামে। বয়সসীমা নিয়ে আন্দোলনকারীরা সোমবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে জমায়েত হলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে পরামর্শ নিতে মুয়ীদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের এই ‘উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন’ কমিটি গঠন করে সরকার।