মোস্তাফিজুর রহমান- রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। এতে গবাদি ও পশু পাখি নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারি ও কৃষকরা। এরই মধ্যে মাঠে নেমেছে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের মেডিকেল দল। তারা ভ্রাম্যমাণভাবে সেবা দিচ্ছেন ওইসব প্রাণীর। সম্প্রতি বদরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের উদ্যোগে প্রাণী সেবায় বিভিন্ন কর্মসূচি চলমান রেখেছে। ইতিমধ্যে খামারিদের নিয়ে উঠান বৈঠক স্যালাইন ও সচেতনমূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রচার সহ খামার পরিদর্শনে পশু পাখির চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডঃ মো. আজমল হুদা তপন বলেন, এই দপ্তরের এলএসপি স্যালো ও টেকনিশিয়ান সহ মাঠ পর্যায়ে সকল কর্মীদের মাধ্যমে সচেতন মূলক প্রচার-প্রচারণা করা হচ্ছে। যাতে করে তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে কোন খামারে প্রাণীর ক্ষতি না এ ব্যাপারে তৎপরতা রাখা হয়েছে। এছাড়াও খামারিদের তৎক্ষণিক সেবা দেওয়ার জন্য ভেটেরিনারি ক্লিনিকের মাধ্যমে জরুরি সেবা কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
তাপপ্রবাহে প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় করণীয় কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, গবাদী প্রাণী বা পোল্টির ঘর শীতল রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য শেভের চালে ভেজা চট, বস্তা বা কাপড় বিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে। ঘরের ভিতরেও ভেজা চট বস্তা কাপড় ঝুলিয়ে রাখলে তা ঘরের ভিতর তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করবে। ঘরের ভিতরেই পাঁচ ওয়াক্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে প্রয়োজনে ফ্যান ব্যবহার করতে হবে। গবাদি প্রাণীকে দিনে একাধিকবার গোসল করানো ও পাইপের সাহায্যে পানি ছিটিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে। গবাদি প্রাণী ও পোল্ট্রিকে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করতে হবে। পানির সাথে উপযুক্ত পরিমাণে লবণ ভিটামিন সি এর ইলেকট্রোলাইট/গ্লুকোজ ইত্যাদি মিশিয়ে যাওয়া যেতে পারে। সকাল দশটা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত অবাধ্য করে বা খোলা মাঠে গবাদি প্রাণী না রেখে গাছের প্রাকৃতিক ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে। গবাদি প্রাণী কে খর বা অতি পরিপক্ক শক্ত আশ যুক্ত খাবার সরবরাহ পরিহার করে নরম কচি ঘাস সরবরাহ করতে হবে। যাতে করে হজমের সময় তাপ বৃদ্ধি কমাতে দুগ্ধজাত গরুকে কম আঁশ এবং উচ্চশক্তির সম্পন্ন খাবার সরবরাহ করলে তা হিট স্ট্রোস কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। দিনের অতিরিক্ত গরমের সময় খাদ্য সরবরাহ কমিয়ে শীতল সময় বাড়িয়ে দিতে হবে। সম্ভব হলে মিনারেল মিক্সচার ব্লক সরবরাহ করা যেতে পারে। প্রচন্ড গরমে পারতপক্ষে ক্রিমিনাশক ব্যবহার বা টিকা প্রদান কিংবা গবাদি প্রাণী পরিবহন পরিহার করতে হবে। দিনের অপেক্ষাকৃত শীতল সময়ে এ কাজগুলো করা যেতে পারে। জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় প্রাণী সম্পদ দপ্তরের সাথে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখতে হবে।