গৌরব প্রসাদ সাহা, ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর ধামইরহাটে আড়ানগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাজাহান আলী কমল ও আড়ানগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোসাদ্দেকুর রহমানকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় জনগণ ও ভুক্তভোগীরা।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটায় উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে নওগাঁ ও জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজী করার অভিযোগে ভুক্তভোগী পরিবার ও ছাত্র সমাজসহ উক্ত এলাকার সাধারণ জনগণের আয়োজনে মানববন্ধন করা হয়।
এসময় বক্তারা বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির আশ্বাস দিয়ে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন শাহাজাহান আলী কমল ও আড়ানগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেকুর রহমান। শুধু তাই নয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে একজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছেন অন্যজনকে।”
এসময় ভুক্তভোগী পরিবারসহ কয়েকশ জনগণকে তাঁদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে দেখা যায়।
সেননগর এলাকার ভুক্তভোগী আরিফ হোসেন বলেন, “সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজাহান আলী কমল আমাকে সমাজসেবা অফিসে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ১২ লাখ টাকা নেন। এরপর ওই চাকরির নিয়োগ শেষ হয়ে গেলে পরবর্তীতে আড়ানগর উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরি দেবেন বলে জানান। সে চাকরির নিয়োগও শেষ হয়ে যায়।”
তিনি আরও বলেন, “পোড়ানগর মাদ্রাসায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার প্রশিক্ষক হিসেবে আমাকে নিয়োগের আশ্বাস দিয়ে চেয়ারম্যানের বড় ছেলে বাবু আমার কাছে আরও ১৫ লাখ টাকা চায়। কিন্তু ২৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ওই চাকরিতে অন্যজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।”
আরেক ভুক্তভোগী উজ্জ্বল চন্দ্র রায় বলেন, “চেয়ারম্যান মোসাদ্দেকুর রহমান পলাশবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১৯ সালে চাকরি দেওয়ার কথা বলে আমার থেকে পাঁচ লাখ টাকা নেয়। এরপর এখন পর্যন্ত কোনো চাকরি তিনি আমাকে দেননি। চাকরির কথা বললে বারবার আশ্বস্ত করে বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়েছেন।”
এবিষয়ে আড়ানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেকুর রহমান বলেন, “আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এসবের কোনো ভিত্তি ও প্রমাণ নেই। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই একটা পক্ষ এসব কাজ করে বেড়াচ্ছে।”
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজাহান আলী কমলের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আসমা খাতুন বলেন, “স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি অনুষ্ঠানের জন্য একটু ব্যস্ত ছিলাম। মানববন্ধনের বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”