মোকছেদুল মমিন মোয়াজ্জেম, হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলি উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নে নিজ স্কুলের অর্থ কেলেঙ্কারির ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে কোকতাড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন কুমার সরকারকে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাময়িক বরখাস্ত করেছেন অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি সুমন মন্ডল।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকাল সাড়ে এগারোটায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোকতাড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে সভাপতি সুমন মন্ডল প্রধান শিক্ষক রতন কুমার সরকারকে সাময়িক বরখাস্ত করে উক্ত পদে সিনিয়র সহকারী শিক্ষক নওশাদ আলীকে দ্বায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। এরপর স্বেচ্ছায় প্রধান শিক্ষক চাবি জমা দিয়ে চলে যান বলে দাবি সভাপতির। অপর দিকে জোড় পূর্বক এসব করা হয়েছে বলে দাবি প্রধান শিক্ষককের।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোকতাড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুমন মন্ডল।
তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের অর্থ কেলেঙ্কারির সাথে তিনি সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে চলতি মাসের ১০ তারিখের কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১১ মার্চ তারিখে প্রধান শিক্ষককে কৈফত তলফ করা হয় এবং কেন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে না মর্মে সাত কার্য দিনের মধ্যে সন্তোষ জবাব দিতে বলা হয়। তিনি কৈফত এর কোন জবাব না দেওয়ায় গত ২১ মার্চ তারিখে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ২৫ মার্চ তাকে পত্র মারুফত জানানো হয়।
আজ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে স্কুলের সকল শিক্ষক ও সদস্যদের উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষক রতন কুমার সরকারকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্কুলের সকল কার্যক্রম সুষ্ঠ ভাবে পরিচালনার জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে নতুন দ্বায়িত্ব নওশাদ আলীকে দেওয়া হয়েছে। পরে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক স্বেচ্ছায় চাবি ও রেজুলেশন বহি জমা দিয়ে চলে যায়। পরে শুনতেছি নিজের দোষ ধামাচাপা দিতে আমাকেসহ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা সদস্য সহ চার জনের নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছে। পুলিশ এসে তদন্ত করে চলে গেছেন। আমি সাময়িক বরখাস্ত এর বিষয়টি তাৎক্ষণিক মুঠো ফোনে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসকে অবগত করিয়েছি।
দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নওশাদ আলী বলেন, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন এর জন্য আমরা সকল শিক্ষক ও কর্মচারীরা স্কুলে আসি এবং যথারিতি জাতীয় দিবস উদযাপন করি। পরে জানতে পারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কিছু অনিয়ম এর অভিযোগে কমিটির সভাপতি ও সকল সদস্য প্রধান শিক্ষক রতন কুমার সরকারকে সাময়িক বরখাস্ত করে সিনিয়র হিসেবে আমাকে প্রধানের চেয়ারে বসে দেন। পরে রতন কুমার সরকার স্বেচ্ছায় চাবি ও রেজুলেশন বহি জমা দিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক রতন কুমার সরকারকে বার বার মুঠো ফোনে যোগা যোগ এর চেষ্টা করে না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আহমদ আহসান হাবিব বলেন, বিষয়টা আমাকে বিদ্যালয়ের সভাপতি মুঠো ফোনে জানিয়েছেন এবং পরবর্তীতে সব কাগজপত্র পাঠিয়ে দিতে চেয়েছেন। এছাড়াও আমাকে থানা থেকে ফোনে বলা হয়েছে পুলিশ ঘটনা স্হলে গিয়ে তদন্ত করে এসেছে। এদিকে বিষয়টি ইউএনও মহোদয় ও আমাকে বলেছেন। হঠাৎ করে কেন এমন হলো বিষয়টা আমি খতিয়ে দেখবো এবং আগামীকাল সভাপতি, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক, দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ সবাইকে আমার অফিসে ডেকেছি। দেখা যাক আলোচনার মাধ্যমে মিমাংসা করা যায় না কি?।