নেপালে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ১১২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।এছাড়াও, ১০০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছেন। হিমালয়ের কোলে অবস্থিত দেশটিতে এই বিপর্যয়ের কারণে নিখোঁজ হওয়া ৬৮ জনকে খুঁজে বের করতে উদ্ধার অভিযান চলছে। এই বন্যায় গত শুক্রবার দেশটির কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। উদ্ধারকাজে নেমেছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল। তবে বৃষ্টি না থামায় নদীগুলোর পানির স্তর বেড়েই চলেছে। থেকে থেকে হড়পা বান পরিস্থিতি আরও প্রতিকূল করে তুলছে।
বাসিন্দারা অনেকে বলছেন, এই ধরনের বিপর্যয় আগে কখনও দেখেননি। তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এসব দুর্যোগের তীব্রতা বাড়ছে। শনিবার নেপালে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩২৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা ৫৪ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। দেশটির ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এনডিআরআরএমএ) অনুসারে বর্ষা-সম্পর্কিত দুর্যোগের কারণে ৪ লাখ ১২ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। হেলিকপ্টার ও মোটরবোটের সাহায্যে উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করতে ৩,০০০ এর বেশি নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। রাজধানী কাঠমান্ডুর চারপাশের নদীগুলো কূল ছাপিয়ে প্লাবিত হয়েছে। ভারী বর্ষণে কাঠমান্ডুর প্রধান নদী বাগমতিও বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রকাশিত ছবিতে বন্যা কবলিত লোকেদের বিল্ডিংয়ের উপরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ঘোলা পানির মধ্যে দিয়ে নিরাপদে যাওয়ার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। ভিডিওতে উদ্ধারকারী দলগুলোকে র্যাফ্ট ব্যবহার করে জীবিতদের নিরাপদে উদ্ধারের চিত্র দেখা গেছে। নেপাল পুলিশের মুখপাত্র ডন বাহাদুর কর্কি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘বিভিন্ন হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা চলছে। অন্তত ২০০টি হড়পা বান এবং ধসের ঘটনা ঘটেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। অনেকগুলো বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’
অনেক পর্যটকও আটকে পড়েছেন নেপালে। গত শুক্রবার বিকেল থেকে কাঠমান্ডু বিমাবন্দরে সমস্ত অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট ১৫০টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট- এর জলবায়ু ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ অরুণ ভক্ত শ্রেষ্ঠা বলেছেন, ‘কাঠমান্ডুতে আমি আগে কখনও এত বড় বন্যা দেখিনি।’
সূত্র : ইন্ডিয়া টুডে