বাংলাদেশ পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যসহ প্রাধিকারপ্রাপ্ত ১০টি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রেশন সামগ্রী চাল ও গমের বিক্রয়মূল্য কয়েক গুণ বাড়িয়ে পরিপত্র জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। যা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দীর্ঘ ৩৩ বছর পর রেশনের দাম বাড়ালো। এর আগে সর্বশেষ ১৯৯১ সালে রেশন পণ্যের দাম নির্ধারণ করেছিল সরকার।
পরিপত্রে বলা হয়, রেশনের চাল ও গমের দাম হবে এ দুটি পণ্যের অর্থনৈতিক মূল্যের ২০ শতাংশ। এতে প্রতি কেজি রেশনের চালের দাম পড়বে ১১ টাকা, গমের কেজি ৯ টাকা; তবে গমের আটার ক্ষেত্রে এটি হবে প্রায় ১২ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি রেশনের চাল, গম ও গমের আটার মূল্য প্রতিষ্ঠানভেদে ১ টাকা ৯ পয়সা থেকে ২ টাকা ১০ পয়সার মধ্যে। অর্থাৎ এ দুই পণ্যের দাম কয়েক গুণ বাড়ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এখন থেকে প্রতি অর্থবছরের শুরুতে এসব পণ্য বাজারমূল্যের ওপর ভিত্তি করে পরিবহন, সংরক্ষণ, সরবরাহ খরচসহ অর্থনৈতিক মূল্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জানানো হবে। পরে এ মূল্যের ২০ শতাংশ হারে দাম নির্ধারণ হবে। চলতি অর্থবছরে প্রতি টন চালের অর্থনৈতিক মূল্য হচ্ছে ৫১ হাজার ৮৯৪ টাকা এবং প্রতি টন গমের অর্থনৈতিক মূল্য ৪৭ হাজার ৩০২ টাকা। পরের অর্থবছরে এ দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
এখন ১০ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী রেশন সুবিধা পেয়ে থাকেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো– স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর (এনএসআই), সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ (সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী), বাংলাদেশ পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), আনসার, গ্রাম প্রতিরক্ষা অধিদপ্তর, দুর্নীতি দমন কমিশন, কারা অধিদপ্তর, বেসামরিক প্রতিরক্ষা অগ্নিনির্বাপণ অধিদপ্তর এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
এসব প্রতিষ্ঠানে চাল ও গম বা আটার পাশাপাশি রেশন হিসেবে চিনি, মসুর ডাল ও সয়াবিন তেলও সাশ্রয়ী মূল্যে দেওয়া হয়। তবে এসব পণ্যে দাম বাড়বে কিনা তা জানা যায়নি। বর্তমানে সংস্থাভেদে চার সদস্যের একটি পরিবার প্রতি মাসে ১ টাকা ৯ পয়সা থেকে ২ টাকা ১০ পয়সা দরে ৩৫ কেজি চাল ও ৩০ কেজি করে গমের আটা পেয়ে থাকে। এ ছাড়া প্রায় ৩ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি চিনি, ১ টাকা ২০ পয়সা টাকা দরে ৮ কেজি মসুর ডাল এবং ২ টাকা ৩০ পয়সা দরে ৮ লিটার সয়াবিন তেল পায়।
রেশনের আওতায় একেকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবারের আকারভেদে এ সুবিধা পাচ্ছেন। অবসরে যাওয়ার পরও তারা আজীবন এ সুবিধা ভোগ করেন। চাল ও গমের দাম বাড়ানোর কারণে ভর্তুকির পরিমাণ কিছুটা কমবে। আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে খাদ্য ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা।