বগুড়া জেলা কারাগারের কনডেম সেল থেকে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত চার কয়েদি পালানোর ঘটনায় এবার জেলার ফরিদুর রহমান রুবেলকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে কারা অধিদপ্তর৷ তাকে রাজশাহী ডিআইজি প্রিজন এর কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। গত সোমবার রাত সোয়া ১১টার দিকে জেলা সুপার আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেল সুপার বলেন, ‘দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে জেলার ফরিদুর রহমান রুবেলকে স্ট্যান্ড রিলিজের নির্দেশ দিয়েছে কারা অধিদপ্তর। তাকে রাজশাহী ডিআইজি প্রিজন কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।’
এর আগে, দায়িত্বে অবহেলার বিষয় উঠে আসায় বগুড়া কারাগারের ডেপুটি জেলার হোসেনুজ্জামান, প্রধান কারারক্ষী আব্দুল মতিনসহ ৫ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া আরও তিনজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়।
গত ২৬ জুন দিবাগত রাতে বগুড়া জেলা কারাগারের কনডেম সেলের ছাদ ফুটো করে বিছানার চাদরকে রশি হিসেবে ব্যবহার করে পালিয়ে যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি। তারা হলেন- কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দিয়াডাঙ্গা এলাকার নজরুল ইসলাম ওরফে মজনু (কয়েদি নম্বর -৯৯৮), নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার ফজরকান্দি এলাকার আমির হোসেন (কয়েদি নম্বর-৫১০৫), বগুড়ার কাহালু পৌরসভার মেয়র আবদুল মান্নানের ছেলে মো. জাকারিয়া (কয়েদি নম্বর-৩৬৮৫) এবং বগুড়ার কুটুরবাড়ি পশ্চিমপাড়া এলাকার ফরিদ শেখ (কয়েদি নম্বর-৪২৫২)।
এই ৪ কয়েদি একই সেলে থাকার কারণে, দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করে মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে তারা কনডেম সেলের ছাদ কেটে কাপড়ের রশি বানিয়ে ছাদ থেকে নেমে পালিয়ে যায়। পরে গত বুধবার (২৬ জুন) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জেলখানার অদূরে একটি বাজার থেকে স্থানীয়রা তাদের আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। জেল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে বিষয়টি জানায় ৩টা ৫৬ মিনিটে। এরপর পুলিশের সব ফাঁড়ি এবং টহল দলকে অ্যালার্ট করে দেয়া হয়। একপর্যায়ে ভোর সাড়ে ৪টায় সদর ফাঁড়ির সব-ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে পলাতক চার আসামিকে ধরে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে কারা কর্তৃপক্ষ যেয়ে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেন। পরে মামলা দায়েরের পর আদালতের মাধ্যমে আবারও তাদের কারাগারে পাঠানো হয় ৷
ওই ঘটনার দিন সকালেই জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, ডিআইজি প্রিজনসহ একাধিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন। এর পাশাপাশি কারা কর্তৃপক্ষসহ মোট ৩ টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়৷ এসব কমিটির তদন্তের কাজ চলমান রয়েছে।