উজ্জ্বল শুরুর পর খেই হারিয়ে ফেলল রোমানিয়া। নেদারল্যান্ডসের আক্রমণের ঢেউয়ে ভেসে যাওয়ার জোগাড় হলো তাদের। গ্রুপ পর্বের বিবর্ণতা ঝেড়ে, দাপুটে পারফরম্যান্সে দুর্দান্ত জয়ে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠল ডাচরা।
মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় গতকাল মঙ্গলবার ( ২ জুলাই) শেষ ষোলোর ম্যাচে ৩-০ গোলে জিতেছে রোনাল্ড কুমানের দল। প্রথমার্ধে কোডি হাকপো দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নেমে শেষ দিকে জোড়া গোল করেন ডোনিয়েল মালেন।নেদারল্যান্ডসের দাপটের চিত্র মেলে পরিসংখ্যানেও- পুরো ম্যাচে ৬৫ শতাংশ সময় পজেশন ধরে রেখে গোলের জন্য তারা শট নেয় মোট ২৩টি; ৬টি ছিল লক্ষ্যে, এর তিনটি সফল। রোমানিয়ার ৫ শটের একটি লক্ষ্যে ছিল।
সাহসী ফুটবলে ম্যাচের শুরুটা ভালো করে রোমানিয়া। প্রথম উল্লেখযোগ্য সুযোগটা পায় অবশ্য নেদারল্যান্ডস। ষষ্ঠ মিনিটে বক্সে ঢুকে সিমন্সের প্রচেষ্টা এগিয়ে এসে রুখে দেন গোলরক্ষক। চতুর্দশ মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় রোমানিয়া। বক্সের বাইরে জায়গা বানিয়ে দেনিস মানের নেওয়া শট ক্রসবার ঘেঁসে বেরিয়ে যায়।
২০তম মিনিটে চমৎকার গোলে নেদারল্যান্ডসকে এগিয়ে নেন হাকপো। সিমন্সের পাস ধরে বাম দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি, একজনের বাধা এড়িয়ে নিচু শটে কাছের পোস্ট দিয়ে খুঁজে নেন ঠিকানা। চলতি আসরে ২৫ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের গোল হলো ৩টি, জর্জিয়ার জর্জেস মিকাউতাদজে, জার্মানির জামাল মুসিয়ালা ও স্লোভাকিয়ার ইভান শারাঞ্জের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। ২০২২ সালের বিশ্বকাপেও ৩ গোল করেছিলেন হাকপো।
ওই গোলের পর থেকে রোমানিয়াকে চেপে ধরে ডাচরা। ২৭তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পান স্টেফান ডা ভ্রেই। মেমফিস ডিপাইয়ের কর্নারে ইন্টার মিলান ডিফেন্ডারের হেড পাশের জালে লাগে। ৪৪তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ হারান সিমন্স। ডান দিকের বাইলাইনের কাছ থেকে ডেনজেল ডামফ্রিসের কাটব্যাক পেনাল্টি স্পটের কাছে পেয়ে ঠিকমতো শট নিতে পারেননি তিনি। অনেকটা সময় ধরে ঘর সামলাতে ব্যস্ত থাকা রোমানিয়া প্রথমার্ধের শেষ দিকে একটি সুযোগও পেয়ে যায়। তবে গোলরক্ষক বরাবর দুর্বল শট করেন দেনিস দ্রাগাস।
দ্বিতীয়ার্ধেও একের পর এক আক্রমণ করে যায় নেদারল্যান্ডস। ৫৮তম মিনিটে ভাগ্যের ফেরে গোল পায়নি তারা, কর্নারে ভার্জিল ফন ডাইকের হেড পোস্টে লাগে। ৬৩তম মিনিটে হাকপো জালে বল পাঠালেও ভিএআরে ধরা পড়ে অফসাইড। একটু পর মেমফিসের শট পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায়।
অবশেষে ৮৩তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় ডাচরা। বক্সের ভেতর বাঁ দিকের বাইলাইনের কাছে প্রতিপক্ষের একজনের চ্যালেঞ্জ সামলে দারুণ পাস দেন হাকপো, ফাঁকা জালে বল পাঠান দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বদলি নামা মালেন। যোগ করা সময়ে তৃতীয় গোলটি করেন মালেন। নিজেদের অর্ধ থেকে বল ধরে এগিয়ে বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ২৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। নিশ্চিত হয়ে যায় তাদের জয়।