ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতাঃভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার প্রধানতম নদী দুধকুমারের পানি বিপৎসীমার ২৮ সে.মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে নদী অববাহিকার চর ও ডুবোচরে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় সহস্রাধিক পরিবার। রাস্তা ঘাট তলিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র বন্যা পুর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, শনিবার (৬ জুলাই ) দুপুর ১২টায় দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি বৃদ্ধির ফলে এসব নদীর তীরবর্তী নিচু অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চরাঞ্চলে পানি ওঠার ফলে পানি বন্দি হয়ে পড়েছে এসব চরাঞ্চলের বাসিন্দারা। পানিতে তলিয়ে গেছে এসব চরের শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ। এছাড়াও এসব এলাকার অন্তত ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে।
দুধকুমার নদীর অববাহিকার তিলাই ইউনিয়নের ২,৩,৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ তিলাই ও দক্ষিণছাট গোপালপুর গ্রামের তিন শতাধিক বাড়ি ঘরে পানি ঢুকেছে। ৪ নং ওয়ার্ডের রাস্তাটি ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
পাইকেরছড়া ইউনিয়নের ছিটপাইকের ছড়া ও পাইক ডাঙ্গা, সোনাহাট ইউনিয়নের চরবলদিয়া, চর শতিপুরি, চর- ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর ও আন্ধারিঝাড় ইউনিয়নের চর বাড়ুইটারী, চরধাউরারখুটিসহ বেশকিছু চরাঞ্চল তলিয়ে গেছে।
দুধকুমার নদী পাড়ের বাসিন্দা রফিকুল , ফরিদুল, জুলহাস ও কামাল জানান, বাড়িতে পানি ওঠেছে, গবাদি পশু, হাঁস-মুরগী নিয়ে বিপদে আছি। ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন পার করছি।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক জানান, গত তিনদিন থেকে ইউনিয়নটির পাইকডাঙ্গা ও ছিট পাইকের ছড়া গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
তিলাই ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান জানান, আমার ইউনিয়নের ৪টি ওয়ার্ডের প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। আজ শুক্রবার পর্যন্ত কোন ত্রাণ বরাদ্দ পাইনি।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম ফেরদৌস জানান, জেলা প্রশাসন থেকে বন্যার জরুরী ত্রাণ সহায়তা হিসাবে নগদ ১ লক্ষ টাকা ও ১৩ মে.টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ইউপি চেয়ারম্যানগণকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা দিতে বলা হয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে।