সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৩৩ ভারত ১ম ইনিংস: ২১ ওভারে ১৭৩/৪
বাংলাদেশের ব্যর্থ রিভিউ
সাকিব আল হাসানের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি রিভার্স সুইপের চেষ্টা করলেন রিশাভ পান্ত। তবে ঠিকঠাক খেলতে পারলেন না। বল তার প্যাডে লাগতেই সাকিবের জোরাল আবেদন। সাড়া দিলেন না আম্পায়ার।
প্রবল আত্মবিশ্বাসে তাৎক্ষণিক রিভিউয়ের ইঙ্গিত দেন সাকিব। দ্বিমত করেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। রিপ্লেতে দেখা যায়, পান্তের ব্যাটের নিচের কানা ছুঁয়ে গেছে বল। তাই বৃথা যায় বাংলাদেশের রিভিউ।
১৮ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৪৫ রান। পান্ত ৮ বলে ৭ ও ভিরাট কোহলি ৩ বলে ২ রানে অপরাজিত।
গিলকে ফেরালেন সাকিব
চা বিরতির পর দ্বিতীয় ওভারে ড্রেসিং রুমে ফিরে গেলেন শুবমান গিল। সাকিব আল হাসানের বলে ছক্কার চেষ্টায় লং অফে ক্যাচ দিলেন তরুণ টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যান। ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৬ বলে ৩৯ রান করেন গিল।
ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান ভিরাট কোহলি।
ভারতের ঝড়
মধ্যাহ্ন বিরতির পর ভুলে যাওয়ার মতো এক সেশন কাটাল বাংলাদেশ। মাত্র ২৮ রানে শেষ ৪ উইকেট হারানোর পর ভারতের ঝড়ের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ল তারা।
চা বিরতি পর্যন্ত ১৬ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৩৮ রান। বাংলাদেশের চেয়ে আর ৯৫ রানে পিছিয়ে তারা।
বাংলাদেশের হয়ে একপ্রান্ত আগলে রেখে ১০৭ রানে অপরাজিত থাকেন মুমিনুল হক।
এরপর শুরু হয়ে রোহিত শার্মা ও ইয়াশাসবি জয়সওয়ালের তাণ্ডব। মাত্র ২৩ বলে ৫৫ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন তারা। রোহিতের বিদায়ের পর দায়িত্ব নেন জয়সওয়াল। ১১তম ওভারে দলকে তিনি পৌঁছে দেন একশ রানে।
তবে ইনিংস বেশি বড় করতে পারেননি তরুণ বাঁহাতি ওপেনার। ১২ চার ও ২ ছক্কায় ৫১ বলে ৭২ রান করে ফেরেন জয়সওয়াল।
শুবমান গিল ৩০ বলে ৩৭ ও রিশাভ পান্ত ৫ বলে ৪ রান নিয়ে শেষ সেশনের খেলা শুরু করবেন।
রিভিউ নিয়ে বাঁচলেন পান্ত
চা বিরতির আগের ওভারে সাকিব আল হাসানের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের ডেলিভারি দূর থেকে খেলার চেষ্টা করলেন রিশাভ পান্ত। বল তার ব্যাটের ওপর দিয়ে চলে গেল উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে।
আবেদনের চেয়ে বরং উদযাপনই শুরু করলেন সাকিব ও লিটন কুমার দাস।
কয়েক মুহূর্তে আঙুল তুলে দিলেন আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নিলেন পান্ত। রিপ্লেতে দেখা যায়, ব্যাটের কোনো অংশে লাগেনি বল। তাই বদলে যায় মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত। ৩ রানে বেঁচে যান পান্ত।
ভারতের ছক্কার রেকর্ড
ইনিংসের ১৫ ওভারে ৬টি ছক্কা মেরেছে ভারত। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত চলতি বছর তাদের ছক্কা ৯০টি। তারা গড়েছে এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড।
২০২২ সালে ৮৯টি ছক্কা মেরেছিল ইংল্যান্ড। ২০২৪ সালের ৯ মাস পূর্ণ হওয়ার দিন সেই রেকর্ড নিজেদের করে নিয়েছে ভারত।
জয়সওয়ালকে ফেরালেন হাসান
নতুন স্পেলে আক্রমণে ফিরে ইয়াশাসবি জয়সওয়ালের ঝড় থামালেন হাসান মাহমুদ। বেশ নিচু হয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে বোল্ড হলেন বাঁহাতি ওপেনার।
১২ চারের সঙ্গে ২ ছক্কায় ৫১ বলে ৭২ রান করেন জয়সওয়াল। তার বিদায়ে ভাঙল ৬৩ বলে ৭২ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি।
দ্রুত রানের তাগিদেই হয়তো ভিরাট কোহলির বদলে চার নম্বরে রিশাভ পান্তকে নামাল ভারত।
১৪.৩ ওভারে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১২৮ রান। ২৫ বলে ৩০ রানে খেলছেন শুবমান গিল।
জয়সওয়াল-গিল জুটির পঞ্চাশ
রোহিত শার্মাকে ফেরানোর পরও তেমন স্বস্তি নেই বাংলাদেশের। একই ছন্দে খেলে মাত্র ৪০ বলে দ্বিতীয় উইকেটে পঞ্চাশ রানের জুটি গড়ে ফেললেন ইয়াশাসবি জয়সওয়াল ও শুবমান গিল।
১১ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ১ উইকেটে ১১০ রান। জয়সওয়াল ৪২ বলে ৬৯ ও গিল ১২ বলে ১৬ রানে অপরাজিত।
১১তম ওভারে ভারতের একশ
সাদা পোশাকে লাল বলের ক্রিকেটে রীতিমতো টি-টোয়েন্টি খেলছে ভারত। শুরু থেকেই বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে মাত্র ১০.১ ওভারে একশ রান পূর্ণ করে ফেলেছে তারা।
টেস্ট ইতিহাসে বল বাই বল তথ্য থাকা ম্যাচগুলোর মধ্যে এটিই দ্রুততম শতরানের রেকর্ড।
গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২.২ ওভারে একশ রান করেছিল ভারত। এবার নিজেদের রেকর্ডই নতুন করে লিখেছে তারা।
রোহিত-জয়সওয়ালের রেকর্ড
নতুন বলে বাংলাদেশের বোলারদের দিশেহারা করে মাত্র ২৩ বলে ৫৫ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছেন রোহিত শার্মা ও ইয়াশাসবি জয়সওয়াল। ওভারপ্রতি তাদের রান তোলার হার ১৪.৩৪!
টেস্ট ক্রিকেটে বল বাই বল তথ্য থাকা ম্যাচগুলোতে ১৬ হাজারের বেশি পঞ্চাশছোঁয়া জুটির মধ্যে এটিই সবচেয়ে দ্রুততম।
গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে ওভারপ্রতি ১১.৮৬ রান নিয়ে মাত্র ৪৪ বলে ৮৭ রানের জুটি গড়েছিলেন বেন ডাকেট ও বেন স্টোকস। এত দিন এটিই ছিল সবার ওপরে।
৩১ বলে জয়সওয়ালের ফিফটি
শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে মাত্র ৩১ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ফিফটি করে ফেললেন ইয়াশাসবি জয়সওয়াল। ১১ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এটি তার ষষ্ঠ ফিফটি, এর সঙ্গে আছে ৩টি সেঞ্চুরি।
বলের হিসেবে বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো ব্যাটসম্যানের এটিই দ্রুততম ফিফটি।
ভারতের হয়ে এর চেয়ে কম বলে ফিফটি আছে শুধু দুজনের- রিশাভ পান্ত (২৮ বল) ও কপিল দেব (৩০ বল)। এছাড়া শার্দুল ঠাকুরের আছে ৩১ বলে ফিফটির রেকর্ড।
রিভিউ নিয়ে বাঁচার পর বোল্ড রোহিত
মেহেদী হাসান মিরাজের শর্ট ডেলিভারি পুল করতে গিয়ে ব্যাটে লাগাতে পারলেন না রোহিত শার্মা। বল প্যাডে লাগতেই জোরাল আবেদনে আঙুল তুলে দিলেন আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন ভারত অধিনায়ক।
রিপ্লেতে দেখা যায়, বলের ইমপ্যাক্ট ছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে। তাই বদলে যায় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত।
পরের বলে আর বাঁচতে পারেননি রোহিত। মিরাজের নিখুঁত টার্নে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি কিছুটা নিচু হয়ে তার ব্যাটের ফাঁক হলে আঘাত করে স্টাম্পে। বিদায়ঘণ্টা বাজে রোহিতের ১ চার ও ৩ ছক্কায় খেলা ১১ বলে ২৩ রানের ইনিংসের।
৪ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৫৫ রান। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান শুবমান গিল।
৩ ওভারে ভারতের পঞ্চাশ
প্রথম ওভারে হাসান মাহমুদের বলে টানা তিন চার মারলেন ইয়াশাসবি জয়সওয়াল। পরের ওভারে সৈয়দ খালেদ আহমেদের প্রথম দুই বল ছক্কায় ওড়ালেন রোহিত শার্মা।
তৃতীয় ওভারে হাসানের বলে রোহিতের ছক্কার পর দুই চার ও এক ছক্কা মারলেন জয়সওয়াল। মাত্র ৩ ওভারেই পঞ্চাশ হয়ে গেল ভারতের।
টেস্ট ইতিহাসে এটিই কোনো দলের দ্রুততম পঞ্চাশ রান।
৩ ওভারে ভারতের সংগ্রহ কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫১ রান। জয়সওয়াল ১৩ বলে ৪০ ও রোহিত ৬ বলে ১৯ রানে অপরাজিত।
সুযোগ হারাল বাংলাদেশ
তৃতীয় ওভারে হাসান মাহমুদের প্রথম বল ঠিকঠাক খেলতে পারেননি রোহিত শার্মা। ব্যাটের নিচের কানায় লেগে বল চলে যায় লিটন কুমার দাসের গ্লাভসে। কিন্তু কাভারের ফিল্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ ছাড়া কেউই আওয়াজ পাননি।
তাই রিভিউ নেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। পরে রিপ্লেতে দেখা যায়, রিভিউ নিলে কট বিহাইন্ড হতে পারতেন ভারত অধিনায়ক।
জাদেজার ‘৩০০’
২৯৯ উইকেট নিয়ে চেন্নাই টেস্ট শেষ করেছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। কানপুরে বাংলাদেশের একের পর এক উইকেট পড়লেও পাচ্ছিলেন না বাঁহাতি স্পিনার। শেষ ব্যাটসম্যান সৈয়দ খালেদ আহমেদকে ফিরিয়ে সেই অপেক্ষার সমাপ্তি টানেন তিনি।
ভারতের প্রথম বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে টেস্টে ৩০০ উইকেট নিলেন জাদেজা। সব মিলিয়ে ৩০০ উইকেট নেওয়া বিশ্বের তৃতীয় বাঁহাতি স্পিনার তিনি। আগের দুজন- রাঙ্গানা হেরাথ (৪৩৩) ও ড্যানিয়েল ভেটোরি (৩৬২)।
২৩৩ রানে অলআউট বাংলাদেশ
জাসপ্রিত বুমরাহর পুরো ওভারে সিঙ্গেল নিতে পারলেন না মুমিনুল হক। পরের ওভারে রবীন্দ্র জাদেজার বলে টিকতে পারলেন না সৈয়দ খালেদ আহমেদ। ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন বাংলাদেশের শেষ ব্যাটসম্যান।
২৩৩ রানে গুটিয়ে গেল সফরকারীরা। চতুর্থ দিনে ৩৯.২ ওভারে ১২৮ রান করতেই বাকি ৭ উইকেট হারাল তারা।
অন্যদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একপ্রান্তে ১০৭ রানে অপরাজিত রইলেন মুমিনুল। আর কেউ ৩৫ রানও করতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
ভারতের পক্ষে বুমরাহ নেন ৩ উইকেট। এছাড়া আকাশ দিপ, মোহাম্মদ সিরাজ ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের শিকার ২টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৭৪.২ ওভারে ২৩৩ (জাকির ০, সাদমান ২৪, মুমিনুল ১০৭*, শান্ত ৩১, মুশফিক ১১, লিটন ১৩, সাকিব ৯, মিরাজ ২০, তাইজুল ৫, হাসান ১, খালেদ ০; বুমরাহ ১৮-৭-৫০-৩, সিরাজ ১৭-২-৫৭-২, অশ্বিন ১৫-১-৪৫-২, আকাশ ১৫-৬-৪৩-২, জাদেজা ৯.২-০-২৮-১)
সিরাজের শিকার হাসান
জাসপ্রিত বুমরাহ দুটি বল ঠেকিয়েও দিলেও মোহাম্মদ সিরাজের ওভারে টিকতে পারলেন না হাসান মাহমুদ। ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হলেন লেজের সারির ব্যাটসম্যান।
৭৩ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ২৩৩ রান। ক্রিজে শেষ ব্যাটসম্যান সৈয়দ খালেদ আহমেদ।
তাইজুলকেও ফেরালেন বুমরাহ
পরপর দুই ওভারে দুই উইকেট নিলেন জাসপ্রিত বুমরাহ। মেহেদী হাসান মিরাজের পর তাইজুল ইসলামকে ফিরিয়ে দিলেন তিনি। ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে বোল্ড হলেন ৫ রান করা তাইজুল।
ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান হাসান মাহমুদ। অন্য প্রান্তে ১৮৬ বলে ১০৬ রানে অপরাজিত মুমিনুল হক।
৭২ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৩১ রান।
মিরাজকে ফেরালেন বুমরাহ
প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি মেরে ওভারের শুরুটা দারুণ করলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে প্রতিশোধ নিতে সময় নিলেন না জাসপ্রিত বুমরাহ। চতুর্থ বলে তিনি ফিরিয়ে দিলেন মিরাজকে। স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হলেন ৪২ বলে ২০ রান করা মিরাজ।
৭০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২২৫ রান। নতুন ব্যাটসম্যান তাইজুল ইসলাম। ১৮৩ বলে ১০৬ রানে খেলছেন মুমিনুল হক।
মুমিনুল-মিরাজের জুটির পঞ্চাশ
লিটন কুমার দাস ও সাকিব আল হাসানের দ্রুত বিদায়ের পর প্রতিরোধ গড়েছেন মুমিনুল হক ও মেহেদী হাসান মিরাজ। সপ্তম উইকেটে এরই মধ্যে দুজন মিলে গড়েছেন পঞ্চাশ রানের জুটি, ৭৯ বলে।
৬৯.৩ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২২৪ রান। মুমিনুল হক ১৮২ বলে ১০৬ ও মিরাজ ৪১ বলে ২০ রানে অপরাজিত।
৩ উইকেটের সেশনে মুমিনুলের সেঞ্চুরি
একপ্রান্ত আগলে রেখে দারুণ সেঞ্চুরি করলেন মুমিনুল হক। কিন্তু অন্য পাশে তাকে সঙ্গ দিতে পারলেন না মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস ও সাকিব আল হাসান। ৩ উইকেটে ১০০ রান করে প্রথম সেশন পার করল বাংলাদেশ।
চতুর্থ দিনের মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত ৬৬ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২০৫ রান। মুমিনুল ১৭৬ বলে ১০২ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ২৬ বলে ৬ রানে অপরাজিত। দুজনের জুটির সংগ্রহ ৩৫ রান।
দিনের শুরুতে জাসপ্রিত বুমরাহর ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি ছেড়ে দিয়ে বোল্ড হন মুশফিক। পরে মোহাম্মদ সিরাজের বলে আক্রমণাত্মক শট খেলতে গিয়ে মিড অফে রোহিত শার্মার দারুণ ক্যাচে আউট হন লিটন।
এই ম্যাচের আগে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেওয়া সাকিবও পারেননি বেশিক্ষণ টিকতে। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে বাউন্ডারি মেরে পরের বল আবার বড় শট খেলতে গিয়ে সিরাজের দুর্দান্ত ক্যাচে ৯ রান করে ফেরেন সাকিব।
এরপর প্রথম সেশনে আর বিপদ ঘটতে দেননি মুমিনুল ও মিরাজ। নব্বই ছুঁয়ে জীবন পাওয়ার পর ক্যারিয়ারের ১৩তম ও দেশের বাইরে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেন মুমিনুল। ভারতের মাঠে সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান তিনি। প্রথমজন মুশফিক।
মুমিনুলের চমৎকার সেঞ্চুরি
ভারতের মাঠে প্রথম ফিফটিকে সেঞ্চুরিতে নিয়ে গেলেন মুমিনুল হক। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে সুইপ করে তিন অঙ্কে পৌঁছান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
ক্যারিয়ারের ১৩তম শতক করতে ১৭২ বল খেলেন মুমিনুল, ১৬ চারের সঙ্গে মারেন ১টি ছক্কা। দেশের বাইরে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।
নব্বই ছুঁয়ে জীবন পেলেন মুমিনুল
আগের ওভারে রবীন্দ্র জাদেজার দারুণ শটে ছক্কা মেরে নব্বইয়ে পা রাখেন মুমিনুল হক। পরের ওভারে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে বাজতে পারত তার বিদায়ঘণ্টা। তবে অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন বাঁহাতি অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি কাট করার চেষ্টায় ঠিকঠাক খেলতে পারেননি মুমিনুল। উইকেটের পেছনে যাওয়া বল গ্লাভসে জমাতে পারেননি রিশাভ পান্ত। অবশ্য বেশ কঠিন ক্যাচই ছিল সেটি। ৯৩ রানে বেঁচে যান মুমিনুল।
এর পরের ওভারে মোহাম্মদ সিরাজের বলে অল্পের জন্য স্লিপে ধরা পড়েননি মুমিনুল। দারুণ ক্ষিপ্রতায় ডাইভ দিয়েও হাতে নিতে পারেননি ভিরাট কোহলি।
৬৫ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৯৯ রান। মুমিনুল ১৭০ বলে ৯৬ রানে অপরাজিত। মেহেদী হাসান মিরাজ খেলছেন ২৬ বলে ৬ রানে।
ছক্কার চেষ্টায় অক্কা সাকিব
রবিচন্দ্রন অশ্বিনের আগের বলেই ক্রিজ ছেড়ে ইনসাইড আউট শট বাউন্ডারি মেরেছিলেন সাকিব আল হাসান। পরের ডেলিভারি আবারও একই শট খেলার চেষ্টা করলেন তিনি। তবে এবার কিছুটা টেনে দিলেন অশ্বিন।
তাই বলের পিচে পৌঁছতে পারলেন না সাকিব। দূর থেকেই খেলায় বল উঠে যায় আকাশে। মিড অফ থেকে অনেকটা পেছনে দৌড়ে শেষ মুহূর্তে লাফিয়ে বাম হাতে অসাধারণ ক্যাচ নেন মোহাম্মদ সিরাজ।
২ চারে ১৭ বলে ৯ রান করে ফেরেন সাকিব। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান মিরাজ।
৫৬ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৭০ রান। ১৪২ বলে ৭৫ রানে খেলছেন মুমিনুল।
অহেতুক শটে লিটনের বিদায়
বোলিংয়ে আসার পর থেকেই বারবার দুই ব্যাটসম্যানের মনে প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছিলেন মোহাম্মদ সিরাজ। অবশেষে সাফল্যও পেলেন তিনি।
পানি বিরতির পরের ওভারেই সিরাজের বলে ক্রিজ ছেড়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন লিটন কুমার দাস। মিড অফে অনেকটা লাফিয়ে এক হাতে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন রোহিত শার্মা।
৩ চারে ৩০ বলে ১৩ রান করেন লিটন। সাত নম্বরে নামলেন সাকিব আল হাসান।
৫০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৪৮ রান।
প্রথম ঘণ্টায় মুশফিককে হারাল বাংলাদেশ
চতুর্থ দিনের শুরুর ঘণ্টায় মুশফিকুর রহিমের উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। বিপরীতে ১৪ ওভারে তারা করেছে ৪১ রান।
খেলা শুরুর পর প্রথম ৬ ওভারে একদমই রানের সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ। ওই সময় ১ উইকেট হারিয়ে তারা করে মাত্র ৫ রান।
এরপর জাসপ্রিত বুমরাহর এক ওভারে ৩টি চার মারেন লিটন কুমার দাস। অন্য প্রান্তে মুমিনুল হক করেন ক্যারিয়ারের ২০তম ফিফটি।
৪৯ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৪৮ রান। মুমিনুল ১২১ বলে ৬২ ও লিটন ২৬ বলে ১৩ রানে অপরাজিত।
মুমিনুলের ফিফটি
রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়ার পরের বলেই দারুণ পুল শটে বাউন্ডারি মারলেন মুমিনুল হক। একইসঙ্গে পৌঁছে গেলেন ব্যক্তিগত পঞ্চাশে, ১০৯ বলে।
ক্যারিয়ারের ২০তম ফিফটি করতে ৯টি চার মারেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ভারতের মাঠে এটিই তার প্রথম পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংস।
৪৬ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৩১ রান। মুমিনুল ১১৩ বলে ৫৩ ও লিটন কুমার দাস ১৬ বলে ১২ রানে অপরাজিত। জাসপ্রিত বুমরাহর এক ওভারে তিন চার মেরে এই ১২ রান নেন লিটন।
রিভিউ নিয়ে বাঁচলেন মুমিনুল
আক্রমণে এসেই শর্ট অব লেংথ ডেলিভারিতে মুমিনুল হককে বেকায়দার ফেলে দিলেন মোহাম্মদ সিরাজ। অন সাইডে খেলার চেষ্টায় পারলেন না বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। বল তার প্যাড ছুঁয়ে জমা পড়ল শর্ট লেগ ফিল্ডারের হাতে।
জোরাল আবেদনে সাড়া দিলেন আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নিলেন মুমিনুল। রিপ্লেতে দেখা যায়, ব্যাটের কোনো অংশে লাগেনি বল। তাই বদলে যায় মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত। ৪৮ রানে বেঁচে যান মুমিনুল।
মুশফিককে ফেরালেন বুমরাহ
ওভারের প্রথম বল ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে বাউন্ডারি পেলেন মুশফিকুর রহিম। প্রায় একইভাবে ভেতরে ঢোকা পরের ডেলিভারি না খেলে ছেড়ে দিলেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। দারুণ ইনসুইংয়ে ওই বল এলোমেলো করে দিল অফ স্টাম্প।
নতুন দিনের শুরুতেই মুশফিকের উইকেট হারাল বাংলাদেশ। ২ চারে ৩২ বলে ১১ রান করেন মুশফিক।
দিনের প্রথম ৬ ওভারে মুশফিকের উইকেট হারিয়ে মোটে ৫ রান করতে পেরেছে বাংলাদেশ।
গত কয়েক ম্যাচের ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন এনে সাকিব আল হাসানের আগে ৬ নম্বরে নেমেছেন লিটন কুমার দাস। ৭ চারে ৯৪ বলে ৪০ রানে অপরাজিত মুমিনুল হক।
৪১ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১১২ রান।
সেশনের নতুন সূচি
তিন দিন বৃষ্টির বাধার পর সোমবার নির্ধারিত সময়ে শুরু হবে খেলা। সব কিছু ঠিক থাকলে ৯৮ ওভার খেলা হবে এদিন।
বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় শুরু হয়ে দুপুর ১২টা ১৫ পর্যন্ত চলবে প্রথম সেশন। এরপর ১২টা ৫৫ থেকে ৩টা ১০ মিনিট পর্যন্ত হবে মাঝের সেশন। আর চা বিরতির পর ৩টা ৩০ থেকে ৫টা ৩০ মিনিট চলবে শেষ সেশন।
বৃষ্টির বাগড়া পেরিয়ে খেলার আশা
তিন দিন মিলিয়ে খেলা সম্ভব হয়েছে কেবল ৩৫ ওভার। প্রথম দিনের পর বল আর মাঠেই গড়ায়নি।
কানপুর টেস্টে রু থেকেই বাগড়া দিয়েছে বৃষ্টি। প্রথম দিন খেলা শুরু হয়েছে দেরিতে। পরে বৃষ্টি আর আলোকস্বল্পতা মিলিয়ে ভেসে যায় প্রায় দুই সেশন।
দ্বিতীয় দিন বৃষ্টির জন্য খেলা শুরুর মতো কোনো পরিস্থিতি ছিলই না। চা-বিরতির আগে আগে দিনের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন দুই আম্পায়ার।
তৃতীয় দিন কোনো বৃষ্টি হয়নি। তবে আগের রাতের বৃষ্টির জন্য মাঠ ভেজা থাকায় সেদিনও কোনো বল মাঠে গড়ায়নি!
৩ উইকেটে ১০৭ রান নিয়ে সোমবার খেলা শুরুর আশায় বাংলাদেশ। ৮১ বলে ৪০ রানে অপরাজিত মুমিনুল হক। মুশফিকুর রহিম খেলছেন ১৩ বলে ৬ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (তৃতীয় দিন শেষে):
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩৫ ওভারে ১০৭/৩ (জাকির ০, সাদমান ২৪, মুমিনুল ৪০, শান্ত ৩১, মুশফিক ৬; বুমরাহ ৯-৪-১৯-০, সিরাজ ৭-০-২৭-০, অশ্বিন ৯-০-২২-১, আকাশ ১০-৪-৩৪-২)