বৃষ্টি ও ভারতীয় উজানের ঢলে পানি বাড়ছে যমুনা নদীতে। ফলে নদীভাঙনে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বগুড়া অংশের ৪৫ কিলোমিটারের মধ্যে ছয়টি স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে সারিয়াকান্দির ইছামারা এলাকা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, সারিয়াকান্দির ইছামারায় ৫০০ মিটার, হাটশেরপুরে ৩০০, কর্নীবাড়িতে ১০০, সোনাতলার সুজাতপুরে ১৫০, সারিয়াকান্দির শিমুলদায়েরে ৬ এবং ধুনটের শহড়াবাড়িতে ৬ মিটার ঝুঁকির মুখে আছে।
ইছামারা গ্রামের মাসুম জানান, গ্রামের বেশির ভাগ যমুনায় বিলীন। গতবার ভাঙনে ১ হাজার ৭০০ মিটার নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এবারও ওই ভাঙনের দক্ষিণ পাশে ফের ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন গতবারের মতো হলে একদিনও লাগবে না বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আঘাত হানতে।
শহড়াবাড়ি গ্রামের গফুর আলী জানান, সেখানে ভাঙন শুরু হওয়ার পরই জিওব্যাগ ভর্তি বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে। তবে স্রোতের তীব্রতা বাড়লে কি হবে বলা যাচ্ছে না।
পাউবোর বগুড়া সার্কেলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হুমায়ন কবির জানান, দীর্ঘ ৪৫ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে এখনও কোনো ঝুঁকি দেখছি না। ছয়টি পয়েন্টে নদী ভাঙলেও সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ইছামারা অংশে।
‘কারণ, নদী থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দূরত্ব মাত্র ৩০০ মিটার। গত বছর সেখানে ১ হাজার ৭০০ মিটার ভেঙে ছিল। সেখানে কাজ করা হয়েছে। যমুনার ভাঙনের যে গতি তাতে তীব্র ভাঙন শুরু হলে বাঁধ পর্যন্ত ঠেকে যেতে বেশি সময় লাগবে না।’
তিনি আরও জানান, ঘণ্টায় প্রায় ২সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ৫৩ সেন্টিমিটার। তবে পানি এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বগুড়া-৫ (ধুনট- শেরপুর) আসনের সংসদ সদস্য মজিবর রহমান মজনু জানান, ‘শহড়াবাড়িতে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে পাউবোকে নির্দেশনা দিয়েছি। সেখানে কাজ চলছে। ভাঙন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনটের বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘুরে দেখেছি। জনগণের কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্টদের দ্রæত উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।’