1. editor@dailybogratimes.com : dailybogratimes. :
লালমনিরহাটে তিস্তার বন্যায় পানিবন্দী ২৫ হাজার পরিবার » Daily Bogra Times বগুড়া টাইমস
Logo শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
বগুড়ায় মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ইসরায়েলের প্রশ্নে ইরান ‘দ্বিধা’ করবে না : খামেনি ভিজিডি কার্ডের ১৮ মাস চাল না দেওয়ার অভিযোগ ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের মামলায় গংগাচড়া বেতগাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের সোনাহাট স্থলবন্দর শাখা অফিস উদ্বোধন  শেখ হাসিনার কীভাবে প্রায় অসম্ভব প্রত্যাবর্তন ঘটতে পারে : টাইম ম্যাগাজিন বেনাপোলে রাসূল সা: এর বিরুদ্ধে কটুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত  আদমদীঘিতে নাশকতা মামলায় যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার মহানবী (সা:) সম্পর্কে কটুক্তি করার প্রতিবাদে আদমদীঘিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের নামে বসে বেতন নিচ্ছেন শিক্ষক, নেই কোন নজরদারি  আবাম ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের উদ্যোগে দুইটি হুইল চেয়ার উপহার  উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে গণমানুষের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে হবে-উপাচার্য ওবায়দুল ইসলাম পাঠ্যপুস্তক সমন্বয় কমিটি বাতিল ইস্যুতে ১৫১ আলেমের বিবৃতি শেরপুরে পাহাড়ি ঢলে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

লালমনিরহাটে তিস্তার বন্যায় পানিবন্দী ২৫ হাজার পরিবার

লুৎফর রহমান,লালমনিরহাট প্রতিনিধি‍ঃ
  • রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৫ বার পঠিত
লালমনিরহাটে তিস্তার বন্যায় পানিবন্দী ২৫ হাজার পরিবার
print news

লুৎফর রহমান,লালমনিরহাট প্রতিনিধি‍ঃ উজানের পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা ভারি বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে বিপদ সীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। লালমনিরহাটে সৃষ্ট বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২৫ হাজার পরিবার।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ১৭ মিটার। যা বিপদ সীমার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকলেও সন্ধ্যা ৬টা বিপদ সীমার ২০সেঃমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহীত হতে থাকে।এর আগে শনিবার দুপুর থেকে বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হয়। ফলে নদী তীরবর্তী অঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।

বামতীরের জেলা লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২৫ হাজার পরিবার। প্রতিমুহুর্তে বাড়ছে এর সংখ্যা। আতংকিত হয়ে পড়ছে তিস্তাপাড়ের মানুষ।

বন্যা সতর্কীকরন কেন্দ্র ও চরবাসী জানান, ভারতে সিকিমে উৎপত্তি স্থল থেকে ভারতে  প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে তিস্তা নদী। নদীর বাংলাদেশ অংশের উজানে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে তিস্তা পানি নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি ফারাক্কা গেট খুলে বাংলাদেশ অংশে ছেড়ে দেয়া হয়। একই ভাবে শুস্ক মৌসুমে গেট বন্ধ করে বাংলাদেশকে মরুভুমি করে তিস্তার পানি একক ব্যবহার করছে ভারত সরকার।

বর্ষাকাল শুরু হওয়ায় উজানে ভারতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় ভারত তাদের অতিরিক্ত পানি বাংলাদেশ অংশে ছেড়ে দেয়া। এই উজানের ঢল ও ভাড়ি বর্ষনে  তিস্তার পানি ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পায়। তাই বর্ষাকাল শুরু হলেই তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয় পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রন করতে। টানা কয়েকদিনের ভাড়ি বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। এতে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপদ সীমার কাছাকাছি দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

নদী তীরবর্তি এলাকার বেশ কিছু  রাস্তাঘাট ব্রীজ কালভার্ট ভেঙে গেছে পানির তোরে।  উৎতি আমন ধান ও বিভিন্ন সবজি ক্ষেত ডুবে আছে বন্যার পানিতে। দীর্ঘ সময় ডুবে থাকলে এসব ফসলের মারাত্বক ক্ষতির শ্বঙ্কা করছেন চাষিরা। একই সাথে বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে বেশ কিছু পুকুরে মাছ। মারাত্বক ঝুঁকিপুর্ন হয়ে পড়েছে সলেডি স্প্যার বাঁধসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো। শনিবার রাতভর সলেডি স্প্যার বাঁধ ২ এর উপর দিয়ে অভার ফ্লো প্রবাহিত হয়। বাঁধ ভেসে যাওয়ায় শ্বঙ্কায় আতংকিত হয়ে পড়ে ভাটিতে থাকা শত শত পরিবার।  স্থানয়রা রাতে বালু ভর্তি বস্তা ফেলে রক্ষা করে।

সলেডি স্প্যার বাঁধ -২ এলাকার সাগর মিয়া বলেন, রাতে সলেডি স্প্যার বাঁধে ব্রীজ অংশের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। এ সময় বাঁধ কাঁপতেছিল। আমরা ভয় পেয়েছিলাম যে, স্প্যার বাঁধ বুঝি ভেসে যায়। স্থানীয়রা রাত জেগে বাঁধে বস্তা ফেলে রক্ষা করেছে। বন্যার সময় নির্ঘুম রাত কাটে তিস্তাপাড়ের মানুষদের।

গোবর্দ্ধন গ্রামের কৃষক রমজান মিয়া বলেন, কয়েকদিন থেকে রাত থেকে তিস্তা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করছে। আমাদের গ্রাম পানিতে ডুবে আছে। নৌকা দিয়ে এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ির যোগাযোগ করতে হচ্ছে। ডুবে থাকা  আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। এ নিয়ে চিন্তায় পড়েছি। আমন ক্ষেত ডুবেছে বন্যায়। বেশি সময় এমন থাকলে ধান গাছ পঁচে নষ্ট হতে পারে।

হাতীবান্ধা উপজেলার পশ্চিম বিছনদই গ্রামের তমিজ উদ্দিন বলেন, আমাদের গ্রামে আড়াই/তিন শত পরিবারের বসবাস। সবাই শুক্রবার রাত থেকে পানিবন্দি। দিন যত যাচ্ছে পানিবন্দির সংখ্যা তত বাড়ছে। বন্যার সময় শিশু বৃদ্ধ আর গবাদি পশুপাখি নিয়ে বড় বিপদে পড়তে হয়। বন্যা হলেই নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় তিস্তাপাড়ের মানুষদের। আমরা ত্রান নয়, চাই তিস্তার মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন।

ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নে তিন/সাড়ে তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিষয়টি উপজেলা ও জেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।

মহিষখোচা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ হোসত বলেন, আমাদের ইউনিয়নের ৩ হাজারের অধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বাঁধগুলো রক্ষায় সাধারন মানুষদের নিয়ে বস্তা ফেলে রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনিল কুমার বলেন, রোববার সকাল ৬ টায় তিস্তা নদী  ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বেড়ে বিপদ সীমার ২ সেন্টিমিটার উপর প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তাপাড়ে বন্যা দেখা দিয়েছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, কিছু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে তাদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী খুব দ্রুত পৌছে দেয়া হবে। একই সাথে যাতে বাঁধ বা সড়ক ভেঙে নতুন এলাকা প্লাবিত না হয়। সেটা নজরদারী করে ইতোমধ্যে জিও ব্যাগ দিয়ে তা রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিস্তা নদী বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে। বন্যা বাড়লে তা মোকাবেলা করতে জেলা উপজেলা প্রশাসন আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

এনাম হক / ডেইলি বগুড়া টাইমস

আরো খবর
dbt
© All rights reserved by Daily Bogra Times  © 2023
Theme Customized BY LatestNews