1. dailybogratimes@gmail.com : dailybogratimes. :
লিবিয়ায় নাটোরের ৪ যুবক জিম্মি, ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি » Daily Bogra Times
Logo বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:২৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
করাচি বন্দর থেকে চট্টগ্রামে আসবে ২৫ হাজার টন চিনি তারেক রহমানের খালাসে সুন্দরগঞ্জে আনন্দ মিছিল বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী পাঠাতে ভারতের লোকসভায় প্রস্তাব সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা, নাগরিকদের সতর্ক করল যুক্তরাজ্য জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস নওগাঁয় খড়বাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে; চালকসহ নিহত ২ দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে বগুড়ায় বিএনপির বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল বগুড়ার শিবগঞ্জে ভাঙ্গারি দোকানে আগুন মান্দায় ন্যায্য মূল্যে কৃষি পণ্য বিক্রয়ের উদ্বোধন করলেন আব্দুল আউয়াল ডিসি  ভারতীয় হাইক‌মিশনার কে জরুরি তলব পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বগুড়ায় পরকীয়ার যেরে প্রবাসীর বিরুদ্ধে বউ হত্যার অভিযোগ বগুড়ায় দুই দিনব্যাপী তথ্যমেলা শুরু মহাস্থান নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ জব্দ ২ দোকানীর ৭০ হাজার টাকা জরিমানা মহাদেবপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাক চালক ও সহকারির মৃত্যু

লিবিয়ায় নাটোরের ৪ যুবক জিম্মি, ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

নাটোর প্রতিনিধিঃ-
  • শুক্রবার, ৭ জুন, ২০২৪
লিবিয়ায় নাটোরের ৪ যুবক জিম্মি, ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি
print news

নাটোর: লিবিয়ায় নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চার যুবককে জিম্মি করে তাদের পরিবারের কাছে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাইছে অপহরণকারীরা। গত ছয় দিন ধরে অপহরণকারীরা মুক্তিপণের টাকা আদায়ে জিম্মি যুবকদের পরিবারের কাছে তাদের শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও পাঠাচ্ছে।দাবিকৃত মুক্তিপণ না দেওয়া হলে জিম্মিদের মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাতে জিম্মি থাকা ওই চার যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জিম্মি থাকা ওই চার যুবকের বাড়ি গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের বিয়াঘাট চরপাড়া গ্রামে। তারা হলেন, ওই গ্রামের মো. শাজাহান প্রাং এর ছেলে মো. সোহান প্রাং (২০), মো. তয়জাল শেখের ছেলে মো. সাগর হোসেন (২৪), মৃত-শুকুর আলীর ছেলে নাজিম আলী (৩২) ও ইনামুল ইসলামের ছেলে মো. বিদ্যুৎ হোসেন (২৬)। প্রায় দুই বছর ধরে লিবিয়ায় বিভিন্ন কাজে শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন ওই চার যুবক।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন জানান, জিম্মিদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানা পুলিশকে এখনো অবহিত করা হয়নি। বিষয়টি যেহেতু স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ। তাই ওই পরিবারগুলোর উচিত দ্রুত সরকারের ঊর্ধ্বতন অফিসে যোগাযোগ করা। তবে পুলিশি কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হলে তারা প্রস্তুত। এছাড়া ঘটনায় কতটুকু সত্যতা আছে তাও যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে লিবিয়াতে কাজের জন্য যান ওই চার যুবক। প্রবাস থেকে টাকা পাঠিয়ে সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাবেন, এমন ভাবনা থেকে সবার পরিবার জমি বন্ধক, গরু বিক্রি ও ঋণ করে সন্তানদের বিদেশে পাঠিয়েছিল।

সূত্র জানায়, গত ২ জুন লিবিয়া থেকে ওই চার প্রবাসীর পরিবারের ‘ইমো’ নম্বরে কল আসে। রিসিভ করতেই বলা হয় চার যুবককে অপহরণ করা হয়েছে। যারা অপহরণ করেছেন তারাও বাঙালি। তবে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ না দেওয়া হলে তাদের মেরে ফেলা হবে। এমন খবরে পরিবারের সদস্যরা স্তব্ধ হয়ে যান। এরপর থেকেই ‘ইমো’ নম্বরে জিম্মি যুবকদের শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও পাঠানো হয়। টাকা দিতে না পারলে নির্যাতনের মাত্রা প্রতিদিন বাড়তে থাকবে বলেও জানায় অপহরণকারীরা।

এ ব্যাপারে লিবিয়ায় জিম্মি থাকা প্রবাসী যুবক সোহানের বাবা শাজাহান প্রাং জানান, ২ জুন তার মোবাইল ফোনের ‘ইমো’ নম্বরে লিবিয়া থেকে কল আসে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার ছেলে সোহান বলছিল, ‘মা বাচাঁও, বাবা বাচাঁও, আমাকে অপহরণ করে নিয়ে আসছে কারা যেন, বলতেছে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে, না দিলে মেরে ফেলবে, এবারের মত আমাকে বাঁচিয়ে আমার জীবন ভিক্ষা দাও মা। ’ তারপরে ছেলে সোহানকে একটি রুমের মধ্যে বেঁধে রেখে মারধরের ভিডিও পাঠানো হয় বলে জানান শাজাহান।

তিনি বলেন, প্রায় দুই বছর আগে জমি বন্ধক ও ঋণ করে চার লাখ টাকা খরচ করে লিবিয়াতে পাঠিয়েছি ছেলেকে। এখন আবার ছেলেকে জিম্মি করে মুক্তিপণ চাচ্ছে ১০ লাখ টাকা। আমাদের ঘরবাড়ি-ভিটে মাটি বিক্রি করলেও এত টাকা জোগাড় হবে না। এখন ছেলেকে কীভাবে উদ্ধার করবো।

তিনি তার ছেলেকে উদ্ধার করার জন্য সরকারের সহযোগিতা চান।

জিম্মি থাকা আরেক যুবক নাজিমের স্ত্রী নাদিরা বেগম জানান, এখনো বৃষ্টি হলে ঘরের চালা দিয়ে পানি পড়ে। সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক আশা নিয়ে স্বামীকে ঋণ করে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে প্রবাসে পাঠিয়েছিলেন। এখন সব আশা-স্বপ্ন ভেঙে গেছে। স্বামীকে অপহরণকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করতে হলে দিতে হবে ১০ লাখ টাকা। বাড়িতে ঠিকমত চাল থাকে না। অনেক সময় না খেয়ে থাকতে হয়। কীভাবে ১০ লাখ টাকা দিয়ে স্বামীকে তিনি ও তার পরিবার উদ্ধার করবেন। তার কোলে একটি শিশু সন্তান রয়েছে। আরও এক সন্তানের বয়স ১২ বছর। বৃদ্ধ শাশুড়ি ও সন্তানদের নিয়ে স্বামীর এমন বিপদ মুহূর্তে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। স্বামীকে উদ্ধারের জন্য তিনি ও তার পরিবার সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

জিম্মি প্রবাসী যুবক সাগরের মা ছকেরা বেগম বলেন, অনেকদিন আগে আমার স্বামী মারা গেছে। সরকারি টিআর-কাবিটা প্রকল্পের নারী শ্রমিক হিসেবে কাজ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। নিজের জমানো শেষ সম্বল ও এনজিও থেকে ঋণ করে আমিও ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছিলাম দুই বছর আগে। ঋণ এখনো পরিশোধ হয়নি। এখন আবার ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করছে ১০ লাখ টাকা।

তিনি বলেন, সরকার কিছু না করতে পারলে আমার কিডনি বিক্রি করে হলেও ছেলেকে উদ্ধার করতে চাই।

বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান সুজা জানান, লিবিয়ায় তার গ্রামের চার প্রবাসী যুবককে অপহরণ করা হয়েছে- এ বিষয়ে তিনি প্রতিবেশীদের কাছে শুনেছেন। তবে জিম্মি থাকা প্রবাসী যুবকদের পরিবারের লোকজন মনে করছে- জনপ্রতিনিধি, পুলিশ, সাংবাদিকদের বিষয়টি জানালে তাদের সন্তানদের ক্ষতি হবে। এ কারণে হয়তো তারা প্রথমে জানাননি। তবে তিনি নিজে থেকেই তাদের দ্রুত সরকারের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।

AH/ Daily Bogra Times

আরো খবর
dbt
© All rights reserved by Daily Bogra Times  © 2023
Theme Customized BY LatestNews