তবে গরু বিক্রি নিয়ে খামারিরা শঙ্কায় আছেন, তেমনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ক্রেতারাও। কারণ হিসেবে এ বছর গো-খাদ্যের দাম অত্যাধিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় কোরবানি পশু প্রস্তুতকরনে ব্যায় বেশি হয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্র জানায়, বর্তমানে উপজেলার প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষ এ পেশায় জরিত রয়েছেন। খামারি ছাড়াও উপজেলার সাধারণ কৃষকরা বাড়তি ইনকামের জন্য ঈদকে ঘিরে বাড়িতে একটি দুইটি করে গরু লালন পালন করেছেন। তারা কোরবানীর সময় বিক্রয় করেন। এবার উপজেলায় কোরবানির পশুর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৬৯ হাজার ৩২০। তবে খামারি ও প্রান্তিক কৃষক মিলে এবার প্রায় ৭২ হাজার ৯৬২টি পশু প্রস্তুত করেছেন। এতে প্রায় ৩ হাজার ৬৪২টি অতিরিক্ত রয়েছে।
এর মধ্যে ২২ হাজার ৫৬৪টি ষাঁড়, বলদ ৭ হাজার ২৫৬টি, গাভী ৪ হাজার ২১৪টি, মহিষ ১৫৪টি, ছাগল ৩৫ হাজার ৩৫২টি, ভেড়া ৩ হাজার ৪২২টি প্রস্তুত রয়েছে। এই সব পশু প্রায় ৫শ ৭১ কোটি টাকা লেনদেন হবে ।
প্রাণী সম্পদ সুত্রে আরো জানা যায়, কোরবানী পশু ক্রয় বিক্রয়ের জন্য শেরপুর পৌর শহরের বারোদুয়ারী, উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর ও ছোনকা, বিশালপুর ইউনিয়নের জামাইল, কুসুম্বী ইউনিয়নের বেলঘড়িয়া, খামারকান্দি ইউনিয়নের খামারকান্দিসহ উপজেলার ১০ ইউনিয়নের ১ পৌরসভায় ১১টি স্থায়ী অস্থায়ী হাট বাজার রয়েছে। এ সকল হাটে নিয়মিত পশু ক্রয় বিক্রয় চলছে।
সরে জমিনে উপজেলার মান্দাইন গ্রামে অবস্থিত ‘সমতা ডেইরি অ্যান্ড এগ্রো ফার্ম’ এর স্বত্ত্বাধিকারী মনজুরে মওলা মিল্টন বলেন, গত ২ বছরের বেশি সময় হলো তিনি এই খামার প্রতিষ্ঠা করেছেন। এর আগে তার বাড়িতে ২০টি গরু লালন পালন করা হতো। সেখান থেকেই উদ্বুদ্ধ হয়ে তার গরুর খামার করার পরিকল্পনা আসে। বর্তমানে তার খামারে বিভিন্ন প্রজাতির ৯৬টি পশু রয়েছে। এর মধ্যে দেশি গরু ৩০টি গরু, হোলস্টেইন ফ্রিজিয়ান ৪০টি এবং শাহীওয়াল গরু ২৬টি বর্তমানে খামারে রয়েছে তার। এছাড়া রয়েছে কয়েকটি মহিষও। তার খামারে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত দামের গরু রয়েছে। তিনি খামারের গরুগুলোকে ঘাস, ভুট্টা, ভূষি, সাইলেজ, খড়, দানাদার খাবার খাওয়ান।
শেরপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ রেহানা খাতুন বলেন, আমরা সারা বছর খামারীদের কিভাবে বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে গবাদি পশু পালন করে হৃষ্টপুষ্ট করা যায় সেই বিষয়ে আমরা পরামর্শ দিয়ে আসছি। দিক নির্দেশনা দিয়ে আসছি। ইতোমধ্যে আমরা প্রাণি সম্পদ দপ্তর থেকে ১১টি ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম গঠন করেছি। প্রতিটি স্থায়ী অস্থায়ী হাটে এই টিমটির কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। হাটে হঠাৎ তাপমাত্রা বেড়ে গেলে কি ধরণের মেজারমেন্ট নেবে , খাওয়া দাওয়ার বিষয়টি দেখবে। এছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসা যেমন হাটে নিয়ে আসার পর কোন পশু অসুস্থ হলে চিকিৎসা দেবে। এছাড়া হাটে নিয়ে আসা পশু অসুস্থ কিনা সেটা যাচাই করবে।