পাভেল মিয়া, সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বাঙালি নদীর পানি আবারও বেড়েছে। সেইসঙ্গে ব্যাপক ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙ্গনে গাছপালা, গরুর গোয়ালঘর ও বাড়ীর আঙ্গিনাসহ প্রায় ২৫ মিটার নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।
ভাঙন অব্যাহত থাকায় হুমকির মুখে পড়েছে ২০টি পরিবারের বসতভিটা ও মসজিদ। এতে চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন-রাত যাপন করছেন নদীপাড়ের মানুষজন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ডোমকান্দি গ্রামে বাঙ্গালী নদীতে ব্যাপক ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। নদীভাঙনের কারণে বসতবাড়ি সরানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। গভীর রাতে স্থানীয়রা নদী ভাঙ্গনের শব্দ শুনতে পান। তড়িঘড়ি করে গরু ছাগল আসবাবপত্র অন্যত্র সরে নেন। ঘটনার সাথে সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন যায়গায় যোগাযোগ করেন স্থানীয়রা। বুধবার সকাল ১১ টায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দেখা গেলেও রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো কাজ দেখা যায়নি। বাঙ্গালী নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের অবহেলার কারণে নদী ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।
স্থানীয়রা আরও জানান, শুকনো মৌসুমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবি কনস্ট্রাকশন ৫০০ মিটার নদীর তীর রক্ষার কাজ শুরু করেন। বাঁধা দিলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবি কনস্ট্রাকশন এর কর্মকর্তারা বর্ষার পূর্বে কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দেন। নদীর গাইড ওয়ালের কাজ করে, বেড ও জিও বিছায়ে রেখে কাজ বন্ধ রাখেন। পরে বর্ষার মৌসুম চলে আসায় বাঙ্গালী নদীতে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বাসিন্দা আফতাব হোসেন দোলা বলেন, নদী এই গ্রাম থেকে অনেকদূরে ছিল। কিন্তু এখন ভাঙতে ভাঙতে অনেক কাছে চলে এসেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা, বজলু প্রাং, সহিদা বেগম ও আব্দুল হান্নান সরকার জানান,মূলত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের কোনো অগ্রগতি না থাকায় নদী ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে বেশি। তারা আরও বলেন, এখানে মূল ঠিকাদার কাজ না করে সাব-ঠিকাদার দিয়ে কাজ করায় কাজের কোনো অগ্রগতি পাওয়া যায়নি। সাব-ঠিকাদারের সাথে বার বার যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া না পাওয়ায় আজকের এই নদী ভাঙ্গন কবলে স্বীকার হয়েছি।
এবি কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী আজম জানান, ডোমকান্দি এলাকায় যোগাযোগের ব্যবস্থা ভালো না থাকায় ঐ জায়গায় ব্লক তৈরি করা সম্ভব হয়নি। অন্য জয়গায় ব্লক তৈরি করে নৌকাযোগে আনতে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে ড্রামপিং, বেড ও জিও বিছানো হয়েছে। নদী ভাঙ্গন রক্ষার্থে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক জানান, আমাদের হাতে ড্রামপিং ব্লক ও বস্তা মজুদ আছে সেগুলো ফেলার নির্দেশ দিয়েছি। আমাদের লোক ওখানে গিয়েছে তারা নৌকা ঠিক করে আজকেই কাজ করবে।