গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শান্তিরাম ইউনিয়নের মজুমদার বাজারে কুরবানির পশুর হাট বসানোকে কেন্দ্র করে পুলিশ-জনতার সংঘর্ষে আহত হয়েছেন পুলিশসহ অন্তত ১০ জন। এ সময় ৩ রাউন্ড শটগানের গুলি বিনিময় করেছে পুলিশ।
বুধবার (১২ জুন) বিকেলে উপজেলার মজুমদার বাজার সংলগ্ন পরিত্যক্ত জমিতে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও স্থানীয়ররা জানান, প্রতিদিনের হাট-বাজারেে মতই কুরবানি উপলক্ষ্যে বুধবার পশুর হাট বাসানো হয়। হাট চলাকালে হঠাৎ পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে, বিভিন্ন মহলের অভিযোগের কথা তুলে পশুর হাট অবৈধভাবে বসানো হয়েছে জানিয়ে পণ্ড করে দেওয়ার চেষ্টা করে। এর একপর্যায়ে হাটে উপস্থিত জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং বিষয়টি নিয়েই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৩ রাউন্ড শটগানের গুলি বিনিময় করেন। সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
পশু কিনতে আসা গ্রাহক সুজন মিয়া বলেন, হঠাৎ পুলিশ অন্যায়ভাবে হাটে প্রবেশ করে পশুর হাট পণ্ড করে দেয়। এতে করে কয়েকটি গরু হারিয়ে গেছে এবং অনেকের টাকা পয়সা খোয়া গেছে।
হাট ইাজারাদার মাইদুল ইসলামের দাবি, পশুর হাট বসানোর ক্ষেত্রে কোনো বাঁধা-নিষেধ নেই, সে কারণে কুরবানির পশুরহাট বসানো হয়েছে। তারপর কেন পশুর হাট বসানো যাবে না, সেই মর্মে হাইকোর্টের একটি লিগ্যাল নোটিশ উপজেলা নিবার্হী অফিসারকে দেওয়া হয়েছে। এরপরও বেআইনিভাবে হাটে এসে পুলিশ পশুর হাট পণ্ড করে দেয়।
সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুব আলম বলেন, জাতীয় জরুরী সেবা নম্বরে বিভিন্ন মহলের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কুরবানির পশুর হাট না বসানোর জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু জনতা পুলিশের সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান করেন। এ সময় তাদের আক্রমণে আমাদের এসআই আবুল কালাম আজাদ, এএসআই মাসুদ রানা, কনস্টেবল মনির হোসেন, সোলায়মান হোসেন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৩ রাউন্ড শটগানের গুলি বিনিময় করেন।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, কেন মজুমদার হাটের ইজারাদার কুরবানির পশুর হাট বসাতে পারবেন না, সে মর্মে হাইকোর্ট একটি লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপির মতামতের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মতামত না পাওয়ার আগেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।