আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ বগুড়ার আদমদীঘিতে অবশেষে কাঙ্খিত বৃষ্টির দেখা মিলেছে।
খরতাপে দগ্ধ জীবনে শ্রাবণের বৃষ্টিতে স্বস্থি মিলেছে কৃষকসহ জনজীবনে। প্রচন্ড তাপদাহ
থাকায় উপজেলায় প্রাণীকুলে নেমে এসেছিল চরম বিপর্যয়। দীর্ঘদিন একটানা খড়ায় এলাকার
জমির মাটি ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছিল। উপজেলার কৃষকেরা আমন ধান চাষাবাদ ও পাট জাগ
দেয়া নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিল। অবশেষে গতকাল ( শুক্রবার) থেকে শুরু হয়েছে শ্রাবনের বৃষ্টি।
প্রকৃতিতে এসেছে মনোরম পরিবেশ। উপজেলার কৃষকদের মুখে দেখা দিয়েছে হাসি।
দীর্ঘদিন পর একটানা বৃষ্টিতে কর্মজীবী মানুষের মাঝেও ফিরে এসেছে স্বস্থি। উপজেলার প্রায়
সবখানে বৃষ্টি শুরু হয়েছে গতকাল। আজও ( শনিবার) একটানা বৃষ্টি হচ্ছে। অনেককে মনের
আনন্দে বৃষ্টিতে ভিজতে দেখা গেছে। উপজেলার কৃষি বিভাগ বলছে, এ বৃষ্টির ফলে পাট,আমন
ধান,শাক-সবজি ও অনান্য ফসলের ব্যাপক উপকার হবে।
উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের কলসা রথবাড়ি মাঠে আমন আবাদের মাঠে কাজ করছিল কৃষক
কছির উদ্দীন। তিনি বলেন, এই উপজেলায় অনেক দিন পর বৃষ্টি হচ্ছে। তবে ভারি বর্ষনের প্রয়োজন।
মাঠ শুকিয়ে গিয়েছিল। চড়া দামে শ্যালো মেশিন থেকে পানি নিয়ে জমি তৈরি করেছি। আজ
বৃষ্টি হওয়াতে আর পানির জন্য টাকা খরচ করতে হবে না। আর প্রাকৃতিক বৃষ্টির অনেক গুন।
আদমদীঘি সদর ইউনিয়নের কৃষক সাইদুর রহমান জানান, বৃষ্টির জন্য দোয়া করেছি। অনেক
মানুষ নামাজ পড়েছে। কারন আমন ধানের উপর অনেক কৃষক পরিবার নির্ভরশীল। এ বৃষ্টিতে ধান
মরে যাওয়া থেকে বেঁচে গেল। এ দিকে গত দুদিনে উপজেলার মাঠজুড়ে কৃষকদের আমন আবাদের
খেতে ব্যস্ত সময় পার করছে। কেউ ধানের বীজ তুলছে। কেউ জমি তৈরি করছে। কেউ জমিতে ধান
রোপণ করছে। এক বৃষ্টিতে মাঠের দৃশ্য বদলে গেছে।
আদমদীঘি উপজেলা কৃষি অফিসার মিঠু চন্দ্র অধিকারী বলেন, একটানা অনাবৃষ্টিতে কৃষক
কিছুটা বিপাকে পড়েছিল। গতকাল থেকে যে বৃষ্টি হয়েছে, তা কৃষকদের মাঝে একটা নির্মল
স্বস্থি ফিরে এসেছে। এই বৃষ্টির ফলে আমন আবাদে আর্শিবাদ স্বরুপ হয়ে এসেছে। আমন
আবাদ, পাটজাগ দেওয়াসহ শাকসবজি সহ বিভিন্ন বৃক্ষের উপকার হবে। তিনি জানান, গতকাল
থেকে আজ পর্যন্ত ৫০ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এবারে আদমদীঘি উপজেলায়
১২,১০০ হেক্টর আমন আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।