আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় একটানা বৃষ্টিতে জনজীবন
অনেকটা অচল হয়ে পড়েছে। গত কয়েক দিন তীব্র তাপদাহ চলেছে। জনজীবন ছিল
অবস্বস্থিকর। পাশাপাশি ফসলি জমিও প্রায় ফেটে যেতে বসেছিল। আমন চাষিরা
দুশ্চিন্তায় পড়েছিল। অবশেষে একটানা শরতের বৃষ্টিতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
গত দুই সপ্তাহ উপজেলায় বয়ে গেছে প্রচন্ড তাপদাহ। কৃষকের কপালে দুশ্চিন্তার ছাপ পড়ে।
বৃষ্টি না থাকায় উপজেলার কোন কোন এলাকায় কৃষক জমিতে সেচের ব্যবস্থা করেন।
অবশেষে কাঙ্খিত বৃষ্টি দেখা দিয়েছে এলাকায়।
উপজেলার দমদমা গ্রামের কৃষক মোবারক বলেন, তীব্র গরমের কারণে জমির আবাদনিয়ে
দুশ্চিন্তায় ছিলাম। অবশেষে আল্লাহর রহমতে বৃষ্টি হওয়াতে অনেক উপকার হয়েছে
আবাদের,পরিববেশের। জমিতে বাড়তি সেচ না লাগায় আর্থিকভাবে সা¤্রয় হয়েছে।
তাছাড়া এই বৃষ্টিতে জমির অনেক পোকা মাকড়ের হাত থেকে রেহাই মিলেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিঠু চন্দ্র অধিকারী জানান, সবেমাত্র ধানে থোর আসা শুরু
হয়েছে। একেবারে সঠিক সময়ে বৃষ্টি হয়েছে। এতে ধানের উৎপাদন বাড়বে এবং
কাঙ্খিত লক্ষমাত্রা পূরণ হবে।
গত সোমবার উপজেলায় প্রচন্ড ঝড় বয়ে যায়। উপজেলায় কিছু এলাকায় গাছপালা ভেঙে
গেলেও আবাদের তেমন ক্ষতি হয়নি। বরং ফসলের জন্য তা উপকার বয়ে আনে।ঋতুচক্রে শরতকাল
হলেও গত বৃহস্পতিবার থেকে একটানা বৃষ্টিতে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। একান্ত
প্রয়োজন ছাড়া মানুষ খুব একটা ঘড় থেকে বের হচ্ছেনা। একটানা বৃষ্টিতে
নিন্মমজুরি শ্রমিকরা পড়েছে বিপাকে।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার থেকে আদমদীঘি উপজেলার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে ওঠে।
সন্ধা থেকে একটানা প্রায় সরারাত বৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকে আবার একটানা বৃষ্টি
হচ্ছে উপজেলার সর্বত্ত। অনেকে বৃষ্টিতে আটকা পড়ে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয়।
রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে পড়ে। খেটেখাওয়া মানুষরা পড়ে বিপাকে। আজ বৃহস্পতিবারও
সকাল ১ থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত একটানা বৃষ্টি হয়েছে।
গত দুদিনের বৃষ্টিতে বেশিরভাগ সড়ক কর্দমাক্ত ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। অনেক পথচারীকে বিপাকে পড়তে
দেখা যায়। সান্তাহার-বগুড়া মহাসড়কে একটানা বৃষ্টিতে সড়কে বিভিন্ন স্থানে খনাখন্দ
সৃষ্টি হয়েছে। ছোট যানবাহনগুলি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে চলাচল করছে।কর্মস্থল থেকে
ঘরে ফেরার পথে উপজেলাবাসী বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে পড়েন। যানযটের কারণে সেই
ভোগান্তি আরও বাড়ে।
উপজেলার পৌর শহর সান্তাহার রেলগেটে রহমান নামে একজন রিকসাচালক বলেন, সকাল
থেকে বৃষ্টির কারণে কোন রোজগার হয়নি। অনান্য দিন এই সময়ে তিনশত টাকা মতো
আয় হয়। প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে রিকসা চালালে অসুখ হওয়ার ভয়ে গাড়ি চালাচ্ছি না।
সান্তাহার ডেইলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, একটানা বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজি
আমদানী হয়নি বললেই চলে। ক্রেতাও তেমন নেই। পিয়াজ, মরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে
একটানা বর্ষার কারণে।