বগুড়ার আদমদীঘির বিভিন্ন গ্রামের তরুণদের বেকারত্ব বেড়েছে। সেই সাথে বেড়েছে তাদের ভবিষ্যত চিন্তা। পড়াশুনা শেষ করেছে -চাকুরী পাচ্ছে না এমন সংখ্যা উপজেলায় কয়েকশত। অনেকের সরকারী চাকুরীর বয়স শেষ । দির্ঘদিন চাকুরী না পাওয়ায় তাঁরা হতাশায় ভুগছে। এই সব তরুণরা এখন চকিুরীর আশায় ভিটেমাটি বিক্রি করে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে।
আদমদীঘি উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করা
তরুণরা একটি চাকুরীর আশায় নিজের ভিটেমাটি বিক্রি করে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে।
শষ্যভান্ডার হিসাবে খ্যাত এই উপজেলায় কল-কারখানা কম হওয়ায় স্থানীয় ভাবে চাকুরীর আশা
কম। এক সময় প্রচুর স্কুল-কলেজ সৃষ্ঠি হওয়ায় অনেক বেকার যুবকরা এই সকল শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানে চাকুরী পেয়েছে। অনেকে রাজধানীতে পাড়ি জমিয়েছে চাকুরীর আশায়।
কিন্তু সেখানেও কর্মসংস্থান না হওয়ায় বাধ্য হয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছে অনেকে। আবার
অনেকে অন্যের দেখাদেখি বিদেশ যাচ্ছে। আবার অনেকে করোনায় বেকার হয়ে বিদেশে
পাড়ি জমাচ্ছে।
একজন আদম ব্যবসায়ী বলেন, এমনিতেই এই উপজেলার মানুষেদের মধ্যে বিদেশ গিয়ে
চাকুরী পাওয়ার প্রবনতা বেশি। এখন অনেক বেকার তরুনরাও চাকুরী পাওয়ার আশায়
বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। এটা অনেকটা ভাগ্যান্বেষণে বিদেশে পাড়ি দেওয়া। উপজেলার
সান্তাহার ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামের বিপুল, কলসা গ্রামের পাপ্পু, দমদমা গ্রামের
ফিরোজ, দোগাছি গ্রামের গোলাম ফারুক অভি প্রমুখ বলেন, তাদের সরকারী চাকুরীর
বয়স সীমা পার হয়ে যাওয়ায় এবং দিনের পর দিন চাকুরীর পরীক্ষা দিতে দিতে তারা হতাশ।
দেশে চাকুরীর চেষ্ঠা করছে, কিন্তু শুধু চকিুরীর পরীক্ষা দিয়ে আর চাকুরী হচ্ছে না। এই
জন্য অনেকটা হতাশ হয়ে তারা বিদেশ গিয়ে চাকুরীর করার চিন্তা করছে।
মালয়েশিয়া থেকে মুঠোফনে সান্তাহার তারাপুরের বাসিন্দা বিপুল বলেন, সান্তাহার
আপ্রকাশি সংস্থায় চাকুরি করতাম। সংস্থাটি দেউলিয়া হয়ে যাওয়াতে বাধ্য হয়ে
বিদেশে এসেছি। কিন্তু মনটা পড়ে থাকে স্বদেশে। কুয়েত প্রবাশি নিহেরুল
মুঠোফনে বলেন, এলাকায় চাকুরির জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। অবশেষে বিদেশে এসেছি।
আয় ভাল এখানে।
সান্তাহার প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও প্রবীন সাংবাদিক মোঃ গোলাম আম্বিয়া লুলূ
জানান, সন্তাহার আপ্রকাশি সংস্থা াবন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেশ কিছু তরুণ বেকার হয়ে
পড়েছে। এ ছাড়া এলাকায় নতুন করে কোন কল-কারখানা সৃষ্ঠি না হওয়ায় বেকার যুবকদের
জন্য কোন চাকুরীর সুযোগ সৃষ্ঠি হয়নি। ফলে অনেক বেকার তরুণ বিপদগামী হচ্ছে।
অনেকে নেশায় আক্রান্ত হচ্ছে। আবার অনেকে ভিটেমাটি বিক্রি করে বিদেশে চাকুরীর
আশায় পাড়ি জমাচ্ছে।
সান্তাহার নাগরিক কমিটির সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ মোসলেম উদ্দীন বলেন,
বর্তমানে একটি ছাত্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়পশুনা শেষ করতে সরকারী চাকুরীর বয়স প্রায়
শেষ হয়ে যাচ্ছে। অনেক টাকা পযসা খরচ করে, অনেক কষ্ঠ করে লেখাপড়া শেষ করে সে যখন
চাকুরী পায় না , তখন সে হতাশ হতাশ হয়ে পড়ছে। অনেকদিন সরকারী চাকুরী বন্ধ ছিল,
এখন চাকুরীর সাকুর্লার আছে। কিন্তু শুধু চাকুরীর পরীক্ষা দিলেই চাকুরী হচ্ছে না,
এটাই বাস্তবতা। অনেক তরুণ কোনদিন ঢাকা শহড়ে যায়নি, কিন্তু চকিুরীর আশায়
মালয়েশিয়ায় চলে গেছে। আবার একই পরিবারের ৩/৪জন সদস্যই বিদেশে চলে গেছে।
আবার দেশে এখন শিক্ষিত তরুণদের সংখ্যার তুলনায় চাকুরীর বাজার যথেষ্ঠ সংকুচিত। এই
অবস্থায় তরুণরা অনেকটা বাধ্য হয়ে বিদেশ যাচ্ছে চাকুরীর আশায়।