আদমদিিঘ (বগুড়া) প্রতিনিুিধ ঃ বগুড়ার সান্তাহারের পৌর শহরের পোঁওতা রেলগেটের পাশে
একটি পরিতাক্ত জমিতে আস্তানা গেড়েছে বেদে সম্প্রদায়ের একটি দল। ৩১ জন সদস্যর দলটিতে
থাকে ৮টি ঝুপিড়িতে। দলে ১৯ জন পুরুষ ১১ জন শিশু ও মহিলা। মুন্সিগজ্ঞ জেলার লহজং থানার
কোমারভোগ ইউনিয়নের ফড়িয়া গ্রাম থেকে এসেছেন তাঁরা। প্রায় এক মাস আগে এখানে
এসেছেন তাঁরা। এই সময়ের মধ্যে তেমন আয় হয়নি। তাই সকল সদস্যদের মাঝে দেখা দিয়েছে
অনিশ্চিয়তার ছোয়া। বংশ পরস্পরার এই পেশায় আছেন তারাঁ। ২০/২৫ বছর এই সান্তাহার এলাকায়
আসেন তারা। তবে সারা বছর থাকেন না। বর্ষা মৌসুমে স্থান বদল করেন। এরা প্রায় সবাই
ভোটার। কিন্তু অনেকটা সমাজিক ও নাগরিক অধিকার থেকে এরা বঞ্চিত। এই গোত্রের সদস্যারা
সব্ধাসঢ়;ই মুসলমান। ঝুপড়িতে কোন বৈদ্যুতিক আলোর ও ফ্যানের ব্যাবস্থা নেই। নেই কোন
পয়নিক্সাসন ব্যবস্থা। দলে ৩/৪ জন অল্প শিক্ষিত সদস্য আছে।
এই বেদে দলের প্রধান মোঃ জাকির হোসেন (৫৮)। এই দলে রয়েছে বেশিরভাগ তারই আত্মিয়
স্বজন। এই পুরো দলে একমাত্র সালমা (১১) শুধু পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। বাকি সাবাই
অশিক্ষিত।
বেদে সম্প্রদায়ের এই দলটির কাছে গিয়ে দেখা গেল ৬টি ঝুপড়ি গড়ে তোলা হয়েছে। আর দুটি
তৈরির করার জন্য দলের পুরুষ সদস্যরা বাঁশ কাটছে। মহিলা সদস্যরা দুপুরের খাবার তৈরি করছে।
কিছু সদস্য কাজে গিয়েছে।
এই দলের সদস্য সালমা বলেন, আমি ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত পড়াশুনা করেছি। আবার পড়াশুনা করতে চাই।
মানুষের মত মানুষ হতে চাই।
এই দলের প্রধান, বেদে সর্দার জাকির হোসেন বলেন,পদ্মা নদীর ভাঙনে তাদের ভিটামাটি নিচিহ্ন
হয়ে গেছে। তাই বছরের পর বছর তারা যাযাবরের মত এই এলাকায় চলে এসে আশ্রয় নেয়। টোটকা
জাতীয় ওষুধ বিক্রি করে এই সম্প্রদায়ের সদস্যরা। আবার পানিতে বা হারিয়ে যাওয়া বস্ত উদ্ধার
করতে কাজ করে তারা। অনান্য সাধারন কাজও করেন তারা। তবে বর্তমানে আয় কম। তিনি আরো
বলেন, সরকার যদি তাদের সরকারি কোন জমি দান করেন,তাহলে খুবই উপকার হয়।
সেলিম উদ্দীন নামে একজন সদস্য বলেন, স্থায়ীভাবে আমাদের কোথাও থাকা হয়না বলে তেমন
লেখাপড়া করা হয়নি আমাদের। জন্মের পর থেকে যাযাবরের মত জীবন আমাদের।
বেদে বহরে থাকা সদস্য বেলি বলেন, আমরা যেখানেই যাই না কেন, কোন মেম্বার,চেয়ারম্যান
আমাদের খোঁজ নেয় না। আগের মত টোটকা ওষুধও কেউ নিতে চায় না। আমরা খুবই অবহেলিত
সম্পাদায়।
সমাজ কল্যাণ মন্ত্রাণালয়ের তথ্যনুযায়ী, দেশে ৯টি বেদে গোত্রের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এই
গোত্রগুলি হল,মালবেদে, সাপুড়িয়া,বাজিকর,সান্দার,টোলা, মিরশিকারী, মেল্লশ, বরিয়াল সান্দা ও
গাইন বেদে। সান্তাহারে অবস্থানরত এরা মালবেদে গোত্রের সদস্য।