আদমদীঘি(বগুড়া) প্রতিনিধি : হিন্দুধর্মাল্বীদের অন্যতম প্রধান উৎসব হল রথযাত্রা। হিন্দু পঞ্জিকা
অনুসারে আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে পালিত হয় রথযাত্রা। জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রার রথযাত্রা
বিশেষ মাহাত্ব রয়েছে। পুর্ণ্য লক্ষ্যে আশায় বগুড়ার আদমদীঘিতে শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব
উদযাপন হয়েছে। উপজেলা সদরের তালসন রাধাগোবিন্দ মন্দির ও সান্তাহার পৌর শহরের রথবাড়ী
রাধাগোবিন্দ মন্দিরের আয়োজনে বৃহৎ আকারে এবং সান্তাহার রেলওয়ে মন্দির, বশিপুর রাধাগোবিন্দ মন্দির,
চাঁপাপুর ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর রাধাগোবিন্দ মন্দির ও মিতইল রাধাগোবিন্দ মন্দিরে শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের
রথযাত্রা উৎসবের আয়োজন করেন।গত রোববার সকালে ধর্মীয় পাঁক পরিক্রমা সহ বিভিন্ন মাঙ্গলিক
আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে শুরু হয় রথযাত্রার অনুষ্ঠান মালা।
ঢাক-ঢোলক বাদ্য, শঙ্ক উলুধ্বনি দিয়ে শ্রী শ্রী জগন্নাথ, বলরাম সুভদ্রারকে রথারোহন করানো হয়। এরপর মন্দির প্রাঙ্গন থেকে রথের প্রথম টানের মধ্যদিয়ে
মুল অনুষ্ঠান শুরু হয়। উপজেলার রথযাত্রা উৎসবে কয়েক হাজার নারী-পুরুষের সমাগম ঘটে।
উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অসিত দেবনাথ বাপ্পা ও সাধারণ সম্পাদক মিহির কুমার সরকার
জানান, রথযাত্রার পূণ্য তিথিতে নিজ নিজ রথে প্রভু জগন্নাথ, দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রাকে নিয়ে সপ্তাহ কালের
জন্য মাসির বাড়ী বেড়াতে যাওয়ার উৎসবই রথযাত্রা। রথযাত্রা হিন্দু ধর্মের, বিশেষত প্রভু জগন্নাথের ভক্তদের
কাছে একটি পূণ্য উৎসব এবং পূণ্যতিথি। এই পুণ্য তিথিতে শ্রী জগন্নাথ ধাম পুরী ছাড়াও পৃথিবীর অন্যান্য স্থানে
মহাসমারোহের সঙ্গে রথযাত্রা পালিত হয়। হিন্দুশাস্ত্র মতে রথের দড়ির স্পর্শে (দড়ি টানলে) পুণ্য লাভ হয়। তারই
ধারাবাহিকতায় পুণ্যতা লাভের আশায় আদমদীঘি উপজেলার হিন্দুধর্মালম্বীরা শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের এই
রথযাত্রার আয়োজন করেন।
সান্তাহার রাধামাধব মন্দিরের সভাপতি প্রদীপ কুমার ভৌমিক বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রথযাত্রার
আয়োজন করা হয়েছে। ভক্তরা রথের দড়ি টেনে পন্যতা লাভ করুক এলক্ষেই রথযাত্রা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা
হয়েছে। রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে সপ্তাহ ব্যাপী মন্দির প্রাঙ্গনে বসানো হয়েছে হরেক রকমের দোকান। আদমদীঘি
উপজেলা সদরে রথের প্রথম টান শেষে চড়কতলা রাধাগোবিন্দ মন্দিরে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরন করা হয়।
রথযাত্রা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম খান
রাজু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সালমা বেগম চাঁপা,
প্রানীসম্পদ অফিসার আমিরুল ইসলাম, থানার অফিসার ইনর্চাজ রাজেশ কুমার চক্রবর্তী, ইউপি চেয়ারম্যান
জিল্লুর রহমান, রথযাত্রা উদযাপন কমিটির সভাপতি শিবেশ কুমার মৈত্র ঈদল, পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারন
সম্পাদক মিহির কুমার সরকারসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার ভক্তবৃন্দ।
আগামী ১৫ জুলাই সোমবার রথের উল্টো টানের মধ্য দিয়ে সপ্তাহ ব্যাপী ধর্মীয় উৎসবের সমাপ্তি হবে।