আদমদীঘিতে স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে, কোচিং টিউশনীতে উপস্থিতি বেড়েছে। এ বিষয়ে অভিভাবকরা তেমন জোড়দার মনিটরিং না থাকার কথা বলেন।
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ বগুড়ার আদমদীঘিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠাগুলিতে
শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে, অন্যদিকে কোচিং সেন্টারে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি
বেড়েছে। বিশেষত মফস্বল পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত হয় না।
অন্যদিকে প্রাইভেট, কোচিং পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত উপস্থিত হয়। এ বিষয়ে অভিভাবকরা
তেমন জোড়দার মনিটরিং না থাকার কথা বলেন। আদমদীঘি উপজেলায় উচ্চ বিদ্যালয়ে ও প্রাথমিক
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও মনিটরিং হয়। উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে তেমন
কোন মনিটরিং নেই।
শিক্ষা বিভাগের বিধি অনুসারে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ৭৫% উপস্থিত অবশ্যই থাকতে হবে।
কমপক্ষে ৬০ শতাংশ অনুপস্থিতি পর্যন্ত নন কলেজিয়েট হিসেবে বিবেচনা করা হবে। বিধি
অনুযায়ী জরিমানা আাদায় কড়ার কথাও বলা আছে।
সরজমিনে আজ (৭ নভেম্বর) উপজেলার কয়েকটি শিক্ষা প্রািতষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ৭৫% শিক্ষার্থী উপস্থিতি নেই। তবে
ক্লাসে শিক্ষক ও কিছু শিক্ষার্থী ছিলেন। স্কুল-কলেজের প্রধানরা বলেন,হরতাল-অবরোধের কারনে
শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কম। এ ছাড়া শহরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলাকালে কোন কোন প্রাইভেট,
কোচিং সেন্টার খোলা থাকে। সান্তাহার শহরের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক নাম না
প্রকাশ করার শর্তে জানান, স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষ তেমন জোড়ালে ভাবে ৭৫% উপস্থিতির যে
বিধি আছে তা শিক্ষার্থীদের জোড়ালোভাবে জানান না। ফলে শিক্ষার্থীরা স্কুলে না আসলে কি
শান্তির বিধান আছে, তা সবাই জানে না। শক্তভাবে বিষয়টি মনিটরিং করতে হবে।
উপজেলার প্রায় সর্বত্র দুপুর থেকে রাত প্রায় ১০টা পর্যন্ত কোচিং সেন্টার আর প্রাইভেটে
শিক্ষার্থীদের যেতে দেখা যায়। প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন কোচিং সেন্টার আর
প্রাইভেটে ক্লাস করে। সেখানে খরচও বেশি। কোন কোন কোচিং আর প্রাইভেট সেন্টারে এক
ব্যাচ পড়ে আর আর এক ব্যাচ দাঁড়িয়ে থাকে। অভিভাবকরাও পর্যন্ত থাকে।
উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের একাদশ শ্রেনীর ছাত্র হুসেন আলী বলেন,আমি
সবেমাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতির ৭৫% নিয়মের বিষয়টি জানতাম
না, মেনে চলার চেষ্টা করবো।
সান্তাহার মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শাহনাজ পারভিন জানান, আমি এই ৭৫% উপস্থিতির বিষয়ে
শিক্ষকদের নিয়ে কমিটি করে দিয়েছি। তারা শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের সাথে মোবাইলে কথা
বলেন,মটিভিশন করেন।। আমার এটা মহিলা কলেজ। মেয়েরা ভাল ক্লাস করে। আর এ বিষয়ে শক্ত
মনিটরিং নেই।
সান্তাহার নাগরিক কমিটির সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ মোসলেম উদ্দীন বলেন, স্কুল-কলেজে নানা রকম
ছুটি, জাতীয় দিবসসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকে। তা ছাড়া প্রায় সব স্থানেই স্কুল-কলেজে
শুনেছি ৭৫% ক্লাস হয়না। আর কোচিং সেন্টারে তেমন ছুটি,অনুষ্ঠান থাকে না।
তা ছাড়া তাঁরা অভিভাবকদের উপস্থিতির বিষয়টি জোড়ালোভাবে জানান। তবে অবশ্যই স্কুল-
কলেজের ক্লাস আগে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তৌফিক আজিজ বলেন, অল্প কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
ছাড়া শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ৭৫% হয়। আর জনবল কম। এখন থেকে এই বিষয়গুলোর উপর আমরা
জোড় দেব।
এ বিষয়ে বগুড়া জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ হযরত আলী বলেন, স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির
বিষয়ে ৭৫% উপস্থিতির একটি বিধান আছে। এ বিষয়ে মনিটরিংও হয়। তবে শিক্ষার্থী,স্কুলের
সংখ্যার তুলনায় আমার কর্মকর্তা কম। এই বিষয়টি জোড়ালো ভাবে দেখা হবে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাষক ( শিক্ষা ও আইটিসি) বগুড়া মোছাঃ আফসানা ইয়াসমিন
জানান, স্কুল-কলেজ শ্রেণী শিক্ষা কার্যক্রম চলা অবস্থায় কোচিং, প্রাইভেট পড়ানো নিষেধ
আছে। সেটি সবাইকে মেনে চলতে হবে। আর স্কুল-কলেজে উপস্থিতির বিষয়টি জোড়ালো
অবস্থায় মনিটরিং করা হবে।