আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ শিশুদের স্মার্টফোনে আসক্তি বেড়েই চলেছে। ফলে শিশুদের মানসিক ও স্বাস্থ্য
ঝুঁকি বাড়ছে। অভিভাবকদের অসচেতনতা, খেলাধুলায় সময় না দেওয়া, প্রযুক্তির সহজলভ্যতা, শিশুদের একাকিত্বতা ও ফোনের অধিক ব্যাবহার এর জন্য দায়ী বলছেন বিশেষজ্ঞরা। শিশুদের এমন অভ্যাস নিয়ে অভিভাবকরাও উদ্বীগ্ন।
উপজেলার সচেতন মানুষ ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে একটা সময় এটা অভ্যাসে বা আসক্তিতে পরিণত হয়। অনেক দিন ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে শিশুদের কারও কারও শারীরিক ও মানসিক সমস্যাও দেখা দেয়। শারীরিক সমস্যাগুলো হলো- ঘুমের অসুবিধা, পরিপূর্ণ ঘুম না হওয়া, পিঠ, কোমরে কিংবা মাথা ব্যথা, চোখ ব্যথা বা চোখের জ্যোতি কমে যাওয়া, ওজন বেড়ে যাওয়া, পুষ্টিহীনতা ইত্যাদি রয়েছে।
সান্তাহার নাহার মেডিকেয়ার সেন্টারের চিকিৎসক ডাঃ হামিদুর রহমার রানা এ বিষয়ে
বলেন, শিশুদের মধ্যে মোবাইল ফোনের ব্যবহার অনেকাংশেই বেশি। গ্রামাঞ্চল থেকে শহরাঞ্চলের শিশুরা বেশি মোবাইল ব্যবহার করে। দেখা যাচ্ছে, এক-দুই বছরের বাচ্চারা বেশি মোবাইল ফোনে আসক্ত হচ্ছে। এক-দেড় বছরে বাচ্চারা কিছু কথা বলা শুরু করে। এ সময়টায় মোবাইলে আসক্ত হলে কথাগুলো হারিয়ে যায়, স্পিচ ডিলে সমস্যা, আবার অনেক বাচ্চা কথাই বলে না।
প্রথম ৫ বছর একটি বাচ্চার স্বাভাবিক বিকাশ ঘটে। হাঁটা, বসা, চলা, কথা বলা ও বুদ্ধি হওয়া এগুলোর সবই তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যায়। এ সময়টাকে যদি কাজে লাগানো না যায় তাহলে সেটা আর কখনোই ফিরে আসবে না। এ বয়সেই বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশ ও সব ধরনের বৃদ্ধি ঘটে। পাঁচ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে কথা বলতে, মস্তিষ্কের বিকাশে ও আচরণগত বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, প্রথম পাঁচ বছর বাচ্চার মস্তিষ্ক থাকে একেবারে নরম কাদামাটির মতো। এ সময়ে তাকে যেভাবে যা বোঝানো ও শেখানো হবে, তাই শিখবে। পাঁচ বছরের পর বাচ্চার ব্রেন শক্ত হয়ে যায় তখন আর নতুন করে বিকাশ ঘটে না। তিন থেকে পাঁচ বছর বয়স হচ্ছে বাচ্চার ব্রেনের বিকাশে সবচেয়ে ভালো সময়। সেই সময়টাতেই বাচ্চারা মোবাইল ধরার ফলে তাদের বিকাশ অনেকাংশে বাধাগ্রস্ত হয়। মস্তিষ্কের বিকাশে ও আচরণগত বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।