আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ বগুড়ার আদমদীঘির ঐতিহাসিক রক্তদহ বিলে
পানি নেই। বিল শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। ফলে এলাকায় মাছের তীব্র
আকাল দেখা দিয়েছে। বেকার হয়ে পড়েছে ২০/২৫ গ্রামের প্রায় ৫
সহ¯্রাধিক মৎসজীবি। অধিকাংশ জেলে পরিবারে এখন চরম দুর্দিন যাচ্ছে।
বিশেষ করে শহর পার্শ্ববর্তী অবস্থিত মাছের ভান্ডার নামে বহুল পরিচিত
ঐতিহাসিক রক্তদহ বিল ও পাশ্ববর্তি ১৩টি খাল দীর্ঘ দিনেও সংস্কার না করার
প্রতি বছর শুস্ক মৌসুমের শুরুতে শুকিয়ে যায়। খাল বিলের তলদেশ ভরাট হয়ে
যাওয়ায় পানি ধারন ক্ষমতা হারিয়ে গেছে।
প্রায় ৯‘শ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ঐতিহাসিক রক্তদহ বিলে এক সময়
প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। এ বিল থেকে মাছের চাহিদা পূরুণ করে বগুড়া,
নাটোর, জয়পুরহাট ও নওগাঁ জেলার দক্ষিণ পূর্ব এলাকার মাছের চাহিদা
পূরুণ হত। এ বিলের বোয়াল, চিতল, আইর, গজার, পাবদাসহ বিভিন্ন
প্রজাতির মাছের সুখ্যাতি রয়েছে।
রত্তদহ বিলের পার্শ্ববর্তি গ্রাম সান্দিড়া. করজবাড়ি, কদমা, পালশা,
কাশিমালা, বিশিয়া, পারইল গ্রামের জেলেরা এ বিলে মাছ শিকার করে
স্বাচ্ছন্দ্যে সংসার চালাত। কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে তাদের সেই সুখ
স্বাচ্ছন্দ্যে। এই বিলে এখন ইরি, বোরো ধানের আবাদ করা হয়। বছরের প্রায়
ছয় মাস বেকার জীবন যাপন করে প্রায় ৫ সহ¯্রাধিক মৎসজীবি। এসব
মৎসজীবিদের অধিকাংশই ভ‚মিহীন। এ পেশার উপরে তারা নির্ভরশীল, কিন্তু বিল
শুকিয়ে যওিয়ায় এদের অনেকেই পৈত্রিক পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছে।
মাছ ব্যবসায়ী ইয়াছিন আলী জানান, রক্তদহ বিল সংস্কারের জন্য এলাকায়
চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্যদের কাছে বহুবার দাবি জানিয়েও কোন লাভ হয়নি।
দমদমা গ্রমের বাসিন্দা ও সাংবাদিক মোঃ খায়রুল ইসলাস জানান, রক্তদহ
বিলটি খনন করা হলে একদিকে মাছের চাহিদা পূরুন হবে অপরদিকে
ভৃর্গস্থ পানি উত্তোলন না করেই বিল এলাকার জমি গুলিতে ইরির আবাদ করা
সহজ হবে। তিনি বলেন, ২০০৩ সাল থেকে ২০০৭ সাল পযর্ন্ত এনজিও সংস্থা
ব্রাক এই বিলের মাছ চাষের দায়িত্ব নিয়েও কোন লাভ হয়নি। মাত্র ছয় মাসেই
বিলটি শুকিয়ে যাওয়ায় মাছ চাষ সম্ভব হয়নি।
স্থানীয়দের দাবি, ৯ শত একর এ বিলটি খনন করা হলে আত্রাই, সাহাগোলা,
রানীনগর থেকে নৌপথে যাতায়াতের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বিল এলাকায়
প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কৃষিপন্য আনা নেওয়া সহজ হবে।