1. dailybogratimes@gmail.com : dailybogratimes. :
আলুর বার্ষিক চাহিদা ৮০ লাখ টন, উৎপাদন ১ কোটি ১০ লাখ টন » Daily Bogra Times বগুড়া টাইমস
Logo শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
বাংলাদেশে রয়্যাল এনফিল্ড লঞ্চ হচ্ছে সোমবার ২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে : ড. আসিফ নজরুল হামাস প্রধান নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত ফকির লালন সম্রাট ছিলেন না, তিনি ছিলেন সাধক: মৎস্য উপদেষ্টা বিরামপুরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের বাইসাইকেল ও শিক্ষাবৃত্তি প্রদান দাম নিয়ন্ত্রণে ডিম ও ভোজ্যতেলে শুল্ক-কর অব্যাহতি স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টদের প্রেতাত্মারা এখনও সমাজে রয়েছে রিজভী পাঁচবিবিতে দাফনের ২ মাস পর কবর থেকে বিশালের লাশ উত্তোলন ছেলে হত্যার বিচার চায় পরিবার কানাডার সার্বভৌমত্ব লংঘন করেছে ভারত, বিষয়টি স্পষ্ট : ট্রুডো চাঁপাইনবাবগঞ্জে শাহীন আলম নামে সাংবাদিকে হত্যার হুমকি সারিয়াকান্দিতে বজ্রপাতে একজন নিহত, আহত ২ ৪৬ রানে অলআউট, নিউজিল্যান্ড লজ্জায় ভারত রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগের অংশ হিসেবে আরও ৪ সংস্কার কমিশন ৪৩, ৪৪, ৪৫ ও ৪৬তম বিসিএস বাতিলের দাবি বিএনপির পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারীদের কমপ্লিট ‘শাটডাউনের’ আলটিমেটাম

আলুর বার্ষিক চাহিদা ৮০ লাখ টন, উৎপাদন ১ কোটি ১০ লাখ টন

নিউজ ডেস্কঃ-
  • মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪
আলুর বার্ষিক চাহিদা ৮০ লাখ টন, উৎপাদন ১ কোটি ১০ লাখ টন
print news

দেশে আলুর বাজার টাল- মাতাল চল্লেও, আলুর সর্বোচ্চ বার্ষিক চাহিদা ৮০ লাখ টন। আর সদ্য বিদায় নেয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে আলু উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ টনের কাছাকাছি

আর কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, উৎপাদনে কেজিপ্রতি খরচ পড়ে মাত্র ১০ টাকা ৫১ পয়সা। যদিও রাজধানীর খুচরা বাজারে এখন প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এ পরিসংখ্যান বলছে, গত অর্থবছরে বাংলাদেশে আলু উৎপাদন হয়েছে চাহিদার চেয়ে অন্তত প্রায় ৩০ লাখ টন বেশি। যদিও রাজধানীর খুচরা বাজারে এখন প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে।
দেশে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি মূল্য অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে যাওয়া পণ্যগুলোর অন্যতম আলু। গত অর্থবছরেও পণ্যটির মূল্যে দেখা গেছে বড় ধরনের অস্থিতিশীলতা।

নানা পদক্ষেপেও বাজার নিয়ন্ত্রণে না আসায় এক পর্যায়ে আলু আমদানির অনুমতি দিয়েছিল সরকার। এ আমদানি উন্মুক্ত আছে এখনো। এরপরও বাজারে পণ্যটির দাম এখন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২০-২৫ টাকা বেশি।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আলুর মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা অবিশ্বাস্য রকম বেশি। তাদের ভাষ্যমতে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য সঠিক হলে উৎপাদনের পর ১০-১৫ শতাংশ নষ্ট হওয়ার পরও দেশে উদ্বৃত্ত আলু থাকার কথা।
আবার আমদানিতেও বাধা নেই। সে হিসেবে দামও কম হওয়ার কথা। কিন্তু বাজারের চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গতকাল পাইকারিতে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৫৪ টাকা দরে। আর খুচরায় তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ মৌসুমে আলুর কেজিপ্রতি উৎপাদন ব্যয় ছিল ১০ টাকা ৫১ পয়সা। গত অর্থবছরের উৎপাদন ব্যয়ের তথ্য প্রকাশ না হলেও সেখানে এ ব্যয়ে খুব একটা হেরফের হয়নি বলে
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। প্রতি একর জমিতে আলু উৎপাদনে গড়ে খরচ পড়ে ১ লাখ ১৪ হাজার টাকার কিছু বেশি। জমি তৈরি, সার, বীজ, মজুরি, সেচ, কীটনাশক, জমির লিজ ব্যয় এবং ঋণের সুদসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে
এ ব্যয় করা হয়। আর একরপ্রতি গড় উৎপাদন হয় ১০ হাজার ৮৯২ কেজি। সে হিসেবে প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে খরচ দাঁড়ায় সাড়ে ১০ টাকা। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খরচ ছিল কেজিতে ১০ টাকা ২৭ পয়সা।

কৃষি ও খাদ্যপণ্যের বাজার পর্যবেক্ষকদের ভাষ্যমতে, আলুর উৎপাদন খরচের অতিরিক্ত মূল্যের বেশির ভাগই চলে যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে। এক্ষেত্রে কোল্ড স্টোরেজ মালিক ও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে দরের এ পরিস্থিতি হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন বিশ্লেষকদের একাংশ

আবার কেউ কেউ বলছেন, উৎপাদনের সরকারি তথ্য নিয়েও বড় ধরনের সংশয় রয়েছে। সঠিক তথ্য না থাকায় সার্বিকভাবে বাজার ব্যবস্থাপনা কঠিন হয়ে পড়ছে, যা আলুর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে।

সাবেক খাদ্য সচিব আব্দুল লতিফ মন্ডল বণিক বার্তাকে বলেন, ‘কোল্ড স্টোরেজ মালিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সিন্ডিকেট হয়ে গেছে হয়তো। চাহিদার তুলনায় বেশি উৎপাদন হলে আলু কোথায় যায়? তার মানে
পুরোপুরি বাজার ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতার কারণেই এমনটা হচ্ছে। ডিম ও পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও আমরা একই সমস্যা দেখতে পাচ্ছি। বাজার ব্যবস্থাপনায় সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। নয়তো সরকারিভাবে জানানো হোক, কী কারণে দাম বাড়ছে?’

স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের দিক থেকে চালের পরই আলুর অবস্থান। বর্তমানে বৈশ্বিক আলু উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম।

চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদনের পরও আলুর মূল্যবৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বণিক বার্তাকে বলেন,
‘এ বছর কৃষক কেজিতে ২০ টাকার বেশি লাভ করেছেন। আর আমরা ভাড়ার বিনিময়ে আলু সংরক্ষণ করে থাকি। কোল্ড স্টোরেজে রাখা আলুর প্রায় ৭০ শতাংশই কৃষক ও ব্যবসায়ীদের।
কৃষক পর্যায়ে আলুর কেজি ছিল ৩০ টাকা। আমরা ১০ টাকা ভাড়া রাখি। আর ৫ টাকা লাভ করার পর স্বাভাবিকভাবেই দাম পড়ে ৪৫ টাকা।

আলু উৎপাদনের তথ্য নিয়ে এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ‘এবার উৎপাদন মোটেও ৮০ লাখ টনের বেশি হয়নি। সরকারের তথ্য সঠিক নয়। উৎপাদন কম হওয়ায় অনেক কোল্ড স্টোরেজ ফাঁকা পড়ে আছে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) তথ্য অনুযায়ী, দেশে আলুর বার্ষিক চাহিদা ৭৫-৮০ লাখ টন। চাহিদার বিপরীতে বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলু উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৯ লাখ ৬৪ হাজার টনের কিছু বেশি।
এ অবস্থায় আলুর দাম এভাবে বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি অযৌক্তিক বলে স্বীকার করছেন সরকারি কর্মকর্তারাও।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘দেশে কোনো পণ্যের উৎপাদনের সঙ্গে দামের সামঞ্জস্য নেই। গত বছরের তুলনায় কোল্ড স্টোরেজে আলুর মজুদ বেশি আছে।
ফাস্ট ফুড এবং রাস্তার পাশের অনেক নতুন নতুন রেস্টুরেন্টে আলুর ব্যবহারও অনেক বেড়েছে। তবে দাম এত বাড়াটা অযৌক্তিক। এটা বাজার ব্যবস্থাপনার বিষয়।’

এছাড়া উৎপাদনের তথ্য ও সরবরাহের প্রকৃত চিত্রের মধ্যে ব্যবধান বাজারে আলুর মূল্যবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের। পাশাপাশি মজুদদারিও বাজারে পণ্যটির সরবরাহ ঘাটতি তৈরিতে অনেকাংশে দায়ী বলে মনে করছেন তারা।

কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, ‘কেজিতে ১৫-২০ টাকার বেশি কৃষক পান না। সে হিসেবে বাজারে আলুর দাম হতে পারত কেজিপ্রতি ২৫-৩০ টাকা।
কিন্তু এটা ৩৫ টাকার বেশি হলেও বুঝতে হবে এখানে কারসাজি হচ্ছে। উৎপাদনও পর্যাপ্ত না। এটা বেশি দেখানো হয়েছে। এটার প্রভাব পড়ছে বাজারে। ব্যবসায়ী ও কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা সিন্ডিকেট করছে।
মজুদদারি করায় বাজারে সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে দাম বেড়ে গেছে।’

চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় গত কয়েক বছর স্বল্প পরিসরে আলু রফতানি করছিল বাংলাদেশ। গত বছর আলু রফতানির জন্য রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিও করেছে সরকার।
এর আগে ক্ষতিকর রোগের উপস্থিতি শনাক্ত হওয়ায় ২০১৫ সালের ৬ মে থেকে আলু রফতানিতে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রাশিয়া।
দেশটির নিষেধাজ্ঞার কারণে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রফতানির পরিমাণ ৯১ হাজার টন থেকে ৪০ হাজার টনে নেমে আসে।
পরে আলুকে ব্যাকটেরিয়ামুক্ত ও নিরাপদ করতে সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করায় ২০২২ সালের মার্চে রাশিয়া এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। তবে এখন রফতানির পরিবর্তে উল্টো আলু আমদানির অনুমতি দিয়ে রেখেছে সরকার।

আলুর বর্তমান বাজার পরিস্থিতির পেছনে সিন্ডিকেট বা মজুদদারিকে দায়ী করার মতো কোনো বিষয় নেই বলে মনে করছেন সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ও কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. শামসুল আলম। তিনি বলেন, ‘দেশে আলুর সিন্ডিকেট করা সম্ভব না। দেশে সাড়ে চারশোর বেশি কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে।
সবাই এক সঙ্গে বিক্রি করে না। তাই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে উৎপাদন ঘাটতি ছাড়া আর কোনো কারণ নেই। একসময় আমরা আলু রফতানি করতাম। এখন অনেক কৃষক লাভজনক হওয়ায় ভুট্টা চাষের প্রতি ঝুঁকছে। মূল্যের প্রতি কৃষক ব্যাপকভাবে সংবেদনশীল। সবকিছুতে মজুদদারির দোষ দেয়াটা ঠিক হবে না। বরং মজুদ করাটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিপণন কার্যক্রম।’

AH/ Daily Bogra Times

আরো খবর
dbt
© All rights reserved by Daily Bogra Times  © 2023
Theme Customized BY LatestNews