ইফতারের আগে রোজাদার ব্যক্তির দোয়া কখনো বিফলে যায় না। এই সময় দোয়া কবুল হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সময়। বিশেষ করে ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে রোজাদার ক্ষুধা-পিপাসায় ক্লান্ত-শ্রান্ত থাকে। তাই এই সময়ে দোয়া কবুলের সম্ভাবনা বেশি।
হাদিসে আছে, মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া নিশ্চয়ই ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৭৫৩)
অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না (বরং কবুল করা হয়); পিতার দোয়া, রোজাদারের দোয়া এবং মুসাফিরের দোয়া।’ (বায়হাকি, হাদিস: ৩/৩৪৫)
এ জন্য আমাদের উচিত ইফতার সামনে রেখে আল্লাহর কাছে মনের সব আশা ব্যক্ত করে দোয়া করা এবং এই দোয়া পাঠ করে ইফতার গ্রহণ শুরু করা। দোয়াটি (উচ্চারণ) হলো- ‘আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু।’
বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেওয়া রিজিকের মাধ্যমে ইফতার করছি।
তবে অনেকে উপরোক্ত দোয়াটির সঙ্গে আরেকটি অংশ যুক্ত করেন। তা হলো- ‘ওয়াবিকা আমানতু ওআলাইকা তাওয়াক্কালতু।’ (এবং তোমার প্রতি ইমান এনেছি এবং তোমার ওপরই ভরসা)।
ইফতারের পরও হাদিসে বিশেষ একটি দোয়া পড়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) যখন ইফতার করতেন, তখন বলতেন ‘(উচ্চারণ) জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতালাতিল উ’রুকু; ওয়া ছাবাতাল আঝরু ইনশাআল্লাহ।’
অর্থ: ‘(ইফতারের মাধ্যমে) পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপশিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সাওয়াবও স্থির হলো’ (আবু দাউদ)।
কিন্তু কখনও যদি আমরা ইফতারে অন্য কারও মেহমানদারি গ্রহণ করি, তখন এই দোয়া পড়তে হয়, ‘(উচ্চারণ) আকালা ত্বাআমাকুমুল আবরারু, ওয়া সাল্লাত আলাইকুমুল মালায়িকাতু, ওয়া আফত্বারা ইংদাকুমুস সায়িমুন’ (আবু দাউদ)।
মুসলিম জীবনে দোয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। দোয়া করার ফজিলত সম্পর্কে হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) বলেছেন, দোয়া ছাড়া অন্য কিছুই ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে না এবং নেক আমল ছাড়া অন্য কিছু বয়স বাড়াতে পারে না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২১৩৯)। এ জন্য উচিত বেশি বেশি দোয়া করা।