কংকনা রায়, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :
শীত কি জিনিস তা শীত বরাবরই জানান দিয়ে যায় উত্তরাঞ্চলের মানুষকে। শুরু
হয়েছে তীব্র শীত। টানা ক’দিন রোদের দেখা নেই। তাপমাত্রা থাকছে ১০ ডিগ্রি
সেলিসিয়াসের ঘরে। এতে তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডা বাতাসে
বিপাকে পড়েছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার মানুষ।
বিশেষ করে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ অতি কষ্টে পার করছেন কষ্টের দিন।
শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পুরনো গরম কাপড়ের দাম।
এ জন্য চাহিদা থাকার পরও মূল্য বেশির কারণে পুরাতন গরম কাপড়ও কিনতে পারছে
না নি¤œশ্রেণির মানুষরা।
ফুলবাড়ী পৌরশহরসহ গ্রাম অঞ্চলে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার পাশে অস্থায়ী
পুরনো গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে পুরাতন গরম কাপড়ের মজুদ থাকলেও বেশি দাম
হাকাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর পুরাতন গরম কাপড়ের দাম
একটু বেশি হওয়ায় অনেকের পক্ষে চাহিদানুযায়ী পুরাতন গরম কাপড় কিনতে
পারছেন না।
শুক্রবার (১০জানুয়ারি) সকালে দিনাজপুর জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা
রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনাজপুর আবহাওয়া দপ্তরের
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান আসাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সরেজমিন ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদিপুর ইউনিয়নের বারাইহাট এলাকায়
দেখা গেছে, একটি পুরাতন কাপড়ের দোকানে বিপুল সংখ্যক কাপড় থাকলেও
ক্রেতার অভাবে বসে আছেন দোকানদার। দু-চারজন ক্রেতা আসলেও দরদাম করে চলে
যাচ্ছেন। তাদের কাছে দাম বেশি মনে হচ্ছে এ কারণে।
একইভাবে ফুলবাড়ী পৌর শহরের নিমতলা মোড় এলাকার পুরাতন কাপড়ের
দোকানে মানুষ ভিড় করলেও দাম বেশি চাওয়ায় খালি হাতে ফিরছেন শীতার্ত
মানুষ।
এদিকে, উষ্ণতা পেতে মানুষ ভিড় করছেন ফুটপাতের হকার ও পুরাতন গরম
কাপড়ের দোকানগুলোতে কিনতে আসেন সোয়েটার, জ্যাকেট, হুডি, বেজার, শাল,
কানটুপি ও হাত মোজা। পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ীরা সৈয়দপুর ও রংপুর থেকে
পুরাতন কাপড়ের বান্ডিল (বেল) কিনে এনে ফুলবাড়ী বিক্রি করেন। এ বছর পুরাতন
কাপড়ের দাম বেশি হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে চাহিদানুযায়ী গরম কাপড়
কিনতে পারছেন না।
পৌর এলাকার রিকশা চালক নূর ইসলাম জানান, তীব্র এই ঠান্ডা নিবারণের
জন্য একটি জ্যাকেট কিনতে পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানে এসেছেন তিনি।
কিন্তু দাম বেশি হওয়া সত্তে¡ও বাধ্য হয়ে জ্যাকেটটি কিনতে হয়েছে তাকে।
কেনোনা জ্যাকেট পরে রিকশা চালালে শীত কম লাগে।
পৌরশহরের পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ী মঙ্গল চাঁদ প্রসাদ ও মহসিন আলী বলেন,
গত কয়েকদিন থেকে এ এলাকায় প্রচুর শীত নেমেছে। গরম কাপড় মজুদ থাকলেও
খুব কম বিক্রি হচ্ছে। ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে একটি ভালো জ্যাকেট পাওয়া
যায়। সোয়েটার ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এরপরও ক্রেতার দেখা মিলছে
না। অন্যান্য বছরগুলোতে এ সময় ব্যাপক বেচাবিক্রি হলেও এ বছর তেমন বেচাবিক্রি
করা যাচ্ছে না। মজুদকৃত মালামাল পড়ে রয়েছে দোকানে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান বলেন, এই
তীব্র ঠান্ডায় শিশু ও বয়স্করা সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। শিশুদের নিউমোনিয়া ও
বয়স্কদের শ্বাসকষ্ট হতে পারে। তাই এই শীতে সবাইকে গরম কাপড় পরিধান করতে
হবে। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সাধারণ মানুষকে সচেতনতা বিষয়ক পরামর্শ দেওয়া
হচ্ছে।