উল্লাপাড়া সংবাদদাতা :
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বিভিন্ন মাঠে আগাম করে লাগানো রোপা আমন ধান টাকা শুরু করেছেন কৃষকেরা। এ বছর ধানের ফলন ভালো। কৃষকেরা ধানের ভালো ফলনে খুশী। মনের হাসি খুশীতে মাঠে কৃষকেরা ধান কাটছেন। ধান মাড়াই করার পর নতুন রোপা আমন ধান ১ হাজার ৩শ থেকে ১ হাজার ৩শ ৫০ টাকা মণ দরে বাজারে কেনা বেচা হচ্ছে।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবারের মৌসুমে উপজেলা ১১ হাজার ৫শ ১০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান আবাদ হয়েছে। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, সলঙ্গা, পূর্ণিমাগাতী , হাটিকুমরুল, বড়হর , সলপ ও পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন এলাকায় বেশী পরিমাণ জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করা হয়েছে। এসব এলাকার কৃষকেরা বিভিন্ন জাতের রোপা আমন ধানের আবাদ করেছেন। জানা গেছে নিজস্ব বীজতলার চারা ছাড়াও কৃষকেরা এলাকার হাট থেকে কেনা চারায় আবাদ করেছেন। কৃষকেরা জমিতে বেশী হারে ফলন মেলে এমন নানা জাতের রোপা আমন ধানের আবাদ করেছেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে আবাদ করা রোপা আমন ধানের কয়েক জাত হলো ব্রি ধান ৮৭ , ব্রি ধান ৭৫ , ব্রি ধান ৪৯ , ব্রি ধান ৩৯ , ব্রি ধান ৩২ , বি আর ২২ , এজেড ৭০০৩ জাত। এছাড়া হাইব্রিড ও নানা নামের কাটারী জাতের আবাদ করা হয়েছে।
উপজেলার সলপ ইউনিয়নের কৃষকগঞ্জ , কাজিপাড়া , সদর উল্লাপাড়ার নাগরৌহা , পংরৌহা , ভদ্রকোল , রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের অলিদহ, সলঙ্গা ইউনিয়নের চরবেড়া , গোজা মাঠ এলাকায় কৃষকেরা আগাম করে তাদের আবাদ করা রোপা আমন ধান কাটতে শুরু করেছেন। কৃষকেরা মাঠ থেকে ধান কেটে বাড়ীর উঠোন আঙ্গিনায় নিয়ে মাড়াই করছেন। আবার কৃষকদের কেউ কেউ মাঠেই ধান মাড়াই করছেন। নাগরৌহা মাঠে আবাদকারী কৃষক মোহাম্মদ রব্বানী , ইয়াকুব আলী জানান জমিতে বেশী হারে ফলনশীল রোপা আমন ধানের আবাদ করেছেন। ফলন ভালো হারে হবে বলে আশা করছেন। সলপের আঃ সোবাহান , নাগরৌহার কৃষক হায়দার আলী বলেন তারা দিন দুয়েক আগে ধান কেটেছেন । ভালো হারে ফলন পেয়েছেন।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম শফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন এবারের মৌসুমে উপজেলায় ৮ শ ২৭ মেট্রিক টন রোপা আমন ধান কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় সংগ্রহের সরকারী লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমী বলেন কৃষি নির্ভর উল্লাপাড়া উপজেলায় সব ধরণের ফসলের আবাদ হয় বলা চলে। এখন বোরো (ইরি) ধান হলো বছরের প্রধান আবাদ। এরপর রোপা আমন ও সরিষাফসলের আবাদ সবচেয়ে বেশী পরিমাণ জমিতে করা হয়ে থাকে। সরকারি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা বেশী পরিমাণ জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে। সরকারের কৃষি প্রণোদনায় উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে রোপা আমন ধান বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে। কৃষি প্রণোদনায় ১ হাজার ৪০০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে বিনামূল্যে রোপা আমন ধান বীজ ও রাসায়নিক সার দেওয়া হয়েছিলো। প্রতিজন কৃষককে ধান বীজ ৫ কেজি করে এবং দশ কেজি এমওপি ও ডিএপি দেওয়া হয়।
তিনি আরো বলেন বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পাওয়া ধান বীজে কিংবা নিজ বাড়ির ধানে , এলাকার হাট থেকে কেনা ধান বীজে করা রোপা আমন ধানের নিজস্ব বীজতলার চারা জমিতে লাগিয়েছিলেন। কৃষকদের অনেকেই বিভিন্ন হাটে কিংবা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সরাসরি বীজতলা থেকে চারা কিনে জমিতে লাগিয়েছেন। এখন কম দিনে ধান ফসল ঘরে উ ঠে এমন সব জাতের ধান ফসল কৃষকেরা আগ্রহের সাথে আবাদ করছেন।