উল্লাপাড়া উপজেলা সংবাদদাতা :
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় কালিগঞ্জ ঘাটে নদী পারাপারে এই প্রথম কাঠ — বাশের সাকো দেওয়া হয়েছে। যুগের পর যুগ ধরে সারা বছর প্রতিদিন শত শত মানুষ কালিগঞ্জে ফুলঝোড় নদী খেয়া নৌকায় পারাপার হয়েছেন। প্রায় পঞ্চাশ বছরের খেয়া ঘাট পরিচালনায় জড়িত রতন আলী প্রামানিক এবারেই প্রথম লোকজন পারাপারে নিজ টাকায় সাকো দিয়েছেন। তিনি বাংলা ১৪৩২ সালের পর আর খেয়া ঘাট ডাক ধরবেন না।
এবারে নদীর ঘাট এলাকায় পানি কম থাকায় আর তার শখ পূরণে সাকো দিয়েছেন। উল্লাপাড়া উপজেলার বড়হর ইউনিয়নের কালিগঞ্জ গ্রামের পাশ দিয়ে ফুলঝোড় নদী বয়ে গেছে। কালিগঞ্জ এলাকায় সারা বছরই ফুলঝোড় নদীতে পানি থাকে। অতি পরিচিত কালিগঞ্জ খেয়া ঘাটটি জেলা
পরিষদ থেকে প্রতি বছর সরকারীভাবে ইজারা দেওয়া হয়। সারা বছরই নৌকায় পারাপার করা হয়। কালিগঞ্জ খেয়া ঘাটের দুই পাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের পাকা সড়ক পথ আছে। উল্লাপাড়া উপজেলার সাথে কালিগঞ্জ খেয়া ঘাট হয়ে জেলার বেলকুচি , কামারখন্দ উপজেলার সড়ক
পথের যোগাযোগ রয়েছে। কালিগঞ্জ খেয়া ঘাট হয়ে নদীর পূর্ব পাড়ের চর কালিগঞ্জ, বন্যাকান্দি, দমদমা, মনিরপুর, বেতকান্দি, কর্ণসুতী, শাহবাজপুরসহ আরো বিভিন্ন এলাকার লোকজন উল্লাপাড়ায় আসেন। একই ভাবে নদীর পশ্চিম পাড়ের বিভিন্ন এলাকার লোকজন খেয়া ঘাট হয়ে
পূর্ব পাড়ের বিভিন্ন এলাকায় যান। প্রতিদিন নানা পেশার শত শত লোকজন এখানকার খেয়া ঘাটের নৌকায় পারাপার হন। এলাকার বেশী বয়সী বহুজনের সাথে আলাপে জানান যুগের পর যুগ কালিগঞ্জ খেয়া ঘাটে নৌকায় নদী পারাপার হতে হয়েছে। সেখানে খেয়া ঘাটে নদী পারাপারে এই প্রথম কাঠ ও বাশের সাকো দেওয়া হয়েছে। গত পহেলা মার্চ থেকে সাকোটি নির্মাণ পর চলাচলে খুলে দেওয়া হয়েছে। সেদিন থেকে সাকো হয়ে
সবাই পারাপার হচ্ছেন। সাকোটি হয়ে মোটর সাইকেল , বাই সাইকেল নিয়ে পারাপার সহজেই হওয়া যাচ্ছে। এছাড়া কম বোঝাই নিয়ে তিন চাকার রিকসা ভ্যান নিয়ে পারাপার হওয়া যায়। সরেজমিনে ঘাটটিতে গিয়ে দেখা গেছে নানা পেশার লোকজন সাকো হয়ে পারাপার হচ্ছেন। কালিগঞ্জ খেয়া
ঘাটে নৌকায় নিয়মিত পারাপার হওয়া অনেকেই পারাপারে সাকো ব্যবস্থা দেখে আগ্রহ করে এর নির্মাণের সব জানছেন। সাকো পার হয়ে আসা
আঃ রহমান , মনির হোসেন বলেন তারা বছরের পর বছর ঘাটটিতে খেয়া নৌকায় পারাপার হয়েছেন। এখানে কোন কালেই সাকো ছিলো না। এই
প্রথম ঘাটে সাকোয় পার হলেন।
প্রতিবেদককে কালিগঞ্জ খেয়া ঘাটের ইজারা নেওয়া প্রায় পয়ষট্রি (৬৫) বছর বয়সী মো. রতন প্রামাণিক বলেন সরকারী ইজারা ডাকের কালিগঞ্জ খেয়া ঘাটটি প্রতি বছরই ইজারা ডাক হয়। তিনি প্রায় পঞ্চাশ বছর হলো ঘাটটি ইজারা ডেকে ঘাটটি চালাচ্ছেন। তবে এর মধ্যে চার বছর বাদ ছিলেন। খেয়া নৌকায় পারাপার করেন। খেয়া ঘাটের আশে পাশের গ্রামগুলোর বসতি পরিবারগুলোর কাছ
থেকে পারাপার বাবদ ফসল তোলেন। আবার অনেকেই এককালীন নগদ টাকা দেন। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার লোকজন নগদ টাকায় পারাপার হন।
তিনি আরো বলেন খেয়া ঘাট এলাকায় নদীতে এখন পানি কম। এখানে সাকোয় লোকজন পারাপারে তার মনে শখ ছিলো। তাই সাকোটি নিজের টাকায় দিয়েছেন। এর পেছনে প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আসছে বাংলা ১৪৩২ সালের জন্য ঘাটটি ইজারা নিয়েছেন। এরপর আর তিনি ঘাট
ইজারা ডাক ধরবেন না বলে জানান।