উল্লাপাড়া উপজেলা সংবাদদাতা : সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় এখন খিড়া ফসল তোলা হচ্ছে । এবারে দেরীতে খিড়া উঠছে । কৃষকেরা গত দিন তিনেক হলো খিড়া ফসল মাঠ থেকে তুলে বিক্রি করছেন। উপজেলার বর্ধনগাছা এলাকার দুটি আড়তে খিড়া ফসল কেনাবেচা হচ্ছে।
এখন আড়তে এক মণ খিড়া ১ হাজার ৫শ থেকে ১ হাজার ৭শ দরে কেনাবেচা হচ্ছে। কৃষকেরা খিড়ার এখনকার দামে বেশ খুশী বলে জানান। বিভিন্ন মোকাম বাজারে এখানকার খিড়া বেচতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানানো হয় এবারের মৌসুমে ২শ ৪০ হেক্টর পরিমাণ জমিতে খিড়া ফসলের আবাদ হয়েছে। এর আবাদী জমি আরো কিছু পরিমাণ বাড়বে বলে জানা গেছে। উপজেলার কয়ড়া, মোহনপুর ও বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে খিড়া ফসলের আবাদ হয়েছে। কৃষকেরা হাইব্রিড ও দেশীয় দুই জাতের খিড়া ফসলের আবাদ করেছেন। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের খিড়া ফসল বেশী পরিমাণ জমিতে আবাদ হয়েছে বলে জানা গেছে। কয়ড়া ইউনিয়নের মহিষাখোলা, কয়ড়া চরপাড়া, রতনদিয়ার, বাঘলপুর ও সড়াতলা মাঠের বহু জমিতে কৃষকেরা দুই জাতেরই খিরা ফসলের
আবাদ করেছেন।
কয়ড়া ইউনিয়নের রতনদিয়ার মাঠে গিয়ে দেখা গেছে কৃষকেরা খিড়া ফসলের জমিতে গাছের পরিচর্যা ও বিভিন্ন
উপকারী ঔষধ স্প্রে করছেন। প্রতিবেদককে শাহান হোসেন বলেন প্রায় এক বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের খিড়া ফসলের আবাদ করেছেন। আজই প্রথম আবাদের আড়াই মণ খিড়া ফসল তুলে বর্ধনগাছা আড়তে পাইকারী ১ হাজার ৫শ ৬০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছেন। এ দামে খিড়া বেচে বেশ খুশী বলে তিনি জানান। একই এলাকার কৃষক শাকিল হোসেন , জহুরুল ইসলাম ও লিটন মিয়া তাদের জমিতে খিড়া ফসলের আবাদ করেছেন। আর দিন পাচেক পর থেকেই জমি থেকে খিড়া তুলে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। আর সপ্তাহ খানেক পরই জমি থেকে পুরোদমে খিড়া উঠবে।
কৃষকেরা জানান, এবারে দেরীতে খিড়া ফসল উঠছে। এবারের মৌসুমের প্রথম দিকে বৃষ্টিপাতে লাগানো খিড়া গাছ নষ্ট হয়ে গেলে আবার নতুন করে বীজ লাগিয়ে আবাদ করা হয়েছে। এতে আবাদ নাবী হয়েছে বলা চলে। কৃষকেরা খিড়া ফসলের ভালো হারে ফলন পাচ্ছেন ও এখনকার দামে বেশ খুশী বলে জানান।
সরেজমিনে বর্ধনগাছা মোড়ে খিড়া আড়তে গিয়ে দেখা গেছে এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী কৃষকদের কাছ থেকে
খিড়া কিনছেন। গত দিন পাচেক হলো এখানকার আড়ত খোলা হয়েছে। দিন তিনেক হলো কৃষকেরা মাঠ থেকে খিড়া তুলে এখানে এনে বিক্রি করছেন। রতনদিয়ার, সড়াতলা, বর্ধনগাছা, বাঘলপুর এলাকার কৃষকেরা আড়তে খিড়া এনে বিক্রি
করছেন। প্রতিবেদককে ব্যবসায়ী ছানোয়ার হোসেন বলেন তিনি প্রায় চল্লিশ মণ খিড়া কিনেছেন। তিনি পাবনার দাশুড়িয়ায় মোকামে নিয়ে বেচবেন। আরেক ব্যবসায়ী আঃ ছালাম প্রায় চুয়ান্ন মণ খিড়া কিনেছেন। তিনি খুলনা মোকামে নিতে ট্রাকে বোঝাই দিয়েছেন। এক মণ খিড়া ১ হাজার ৫শ থেকে ১ হাজার ৭শ টাকা দরে কিনেছেন বলে দুইজন ব্যবসায়ী জানান। এরা সহ এলাকার আরো কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান দিন যেতেই খিড়া ফসলের আমদানি পরিমাণ বাড়বে। এখানকার দুই আড়তের শত শত মণ খিড়া সরাসরি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মোকাম বাজারে নিয়ে পাইকারী বিক্রি করা হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমী বলেন, উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে এ মৌসুমে প্রায়
২শ ৪০ হেক্টর পরিমাণ জমিতে খিড়ার আবাদ হচ্ছে। ফলনও ভাল হয়েছে, কৃষকেরা ভালো হারে খিড়া ফসলের ফলন ও ভালো দামে বিক্রি করছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।