প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার বলেছেন, ঋণ একটি মানবাধিকার। কারণ, এটি মানুষের জীবিকার সাথে সম্পর্কিত।
মঙ্গলবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক বার্তায় বলা হয়, আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ২৯-এর এক সাইড ইভেন্টে বক্তৃতাকালে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
বার্তায় বলা হয়, অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস বলেন, 'ঋণ পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত না করে আপনি জীবিকার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না।'
সম্মেলনের বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ড যৌথভাবে 'আ গ্লোবাল কনভারসেশন : অ্যাকসেস টু ফাইন্যান্স ফর স্মল স্কেল ফার্মার্স' শিরোনামের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়াজ হামিদুল্লাহ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। নেদারল্যান্ডসের জলবায়ু দূত বোরবন-পারমার ডাচ যুবরাজ জেইমি বার্নার্ডোও এতে উপস্থিত ছিলেন।
ডাচ যুবরাজ ঋণ, বীমা, বিনিয়োগ, গবেষণা ও অর্থ কীভাবে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে তা তুলে ধরে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ কৃষকের এখন এ সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইভন পিন্টো বলেন, কৃষকরা ঋণ পাওয়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী ধান উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।
ডাচ উদ্যোক্তা উন্নয়ন ব্যাংক এফএমওয়ের অন্যতম পরিচালক জোরিম শ্রাভেন ঋণের অধিকারের প্রতি নৈতিক সমর্থন প্রদানের জন্য অধ্যাপক ইউনূসকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি জনগণের জানার অধিকারের সাথে সম্পর্কিত।
ইন্টার প্রেস সার্ভিসের (আইপিএস) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারহানা হক রহমান এবং আইপিএস-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর নোরাম বলেন, বর্তমানে ৫৫০ মিলিয়ন ক্ষুদ্র কৃষক পরিবার সারা বিশ্বের দুই বিলিয়ন মানুষের খাদ্যের জোগান দিচ্ছে।
ড. ইউনূস বলেন, কৃষককে ঋণ পাওয়ার সুযোগ দেয়া হলে তিনি উদ্যোক্তা হতে পারেন। প্রতিটি ব্যবসার জন্য অর্থ ও বিনিয়োগ প্রয়োজন হয়।
বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণের অগ্রদূত হিসাবে সমাদৃত অধ্যাপক ইউনূস বলেন, কৃষক শুধু ফসল ফলান না, বাজারে বিক্রিও করেন। তাকে ঋণের সুযোগ দেয়া হলে তিনি অন্য কৃষকের কাছ থেকে ফসল কিনতে এবং তার জীবনযাত্রা উন্নয়নে তা বিক্রি করতে পারেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বের দেশগুলোকে গ্রামীণ ব্যাংকের মডেল অনুসরণ করে ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো উচিত যাতে কৃষকদের জন্য ঋণ সহজলভ্য করা যায়। এ কৃষকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী।
'প্রতিটি দেশে একটি সামাজিক ব্যবসা ব্যাংকিং আইন থাকা উচিত' উল্লেখ করে তিনি প্রশংসা করে বলেন, বর্তমানে সারা বিশ্বের অন্তত ১১০টি বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক ব্যবসাকে একটি কোর্স হিসাবে পড়াচ্ছে।
সূত্র : বাসস