নিউজ ডেস্কঃ- এমবিবিএস ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষা আজ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরই মধ্যে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র ডাউনলোড শেষ হয়েছে। সকাল ১০টায় শুরু হয়ে এক ঘণ্টার এ পরীক্ষা চলবে বেলা ১১টা পর্যন্ত। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের পর কোনো পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যে জানা যায়, সারা দেশে ১৯টি পরীক্ষাকেন্দ্রের ৪৪টি ভেন্যুতে একযোগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। দেশের ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে মোট আসন সংখ্যা পাঁচ হাজার ৩৮০টি। এ ছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে অনুমোদিত ৬৭টি মেডিকেল কলেজে মোট আসন ৬ হাজার ২৯৫টি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য, শিক্ষা অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়ে পরীক্ষার্থীদের জন্য কিছু নির্দেশনাও দিয়েছে। এক ঘণ্টায় ১০০ নম্বরের এ পরীক্ষায় ১০০টি এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে ভর্তিচ্ছুদের। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য কাটা যাবে অতিরিক্ত দশমিক ২৫ বা ১ দশমিক ২৫ নম্বর।
লিখিত ভর্তি পরীক্ষায় ১০০টি প্রশ্নের প্রতিটি ১ নম্বর করে মোট (এইচএসসি বা সমমান সিলেবাস অনুযায়ী) ১০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বিষয়ভিত্তিক বিভাজন পদার্থবিদ্যা ২০, রসায়নবিদ্যা ২৫, জীববিজ্ঞান ৩০, ইংরেজি ১৫ ও সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ) ১০ অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। লিখিত পরীক্ষার প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা যাবে। লিখিত পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের কম পেলে অকৃতকার্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের কম পেলে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তির যোগ্য বিবেচিত হবেন না। এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম নম্বর (পাস নম্বর) গতবারের মতো এবারো ৪০ রাখা হয়েছে। মাইগ্রেশনের জন্য তিনবার সময় পাবেন শিক্ষার্থীরা। বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির জন্য সব কলেজকে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা সব কলেজে চয়েজ একবারে দিতে পারবেন, সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতেও একই নিয়ম বহাল। সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি থাকা দ্বিতীয়বার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ১০ নম্বর কাটা হবে। এ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় জেলা কোটা বাতিল করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নির্ধারিত সময়ে আসন পূরণ করা না গেলে সেসব আসনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাবেন। ৯ই ফেব্রুয়ারি পরীক্ষার কেন্দ্র/ভেন্যুর গেট খোলা হবে সকাল ৮টায়। পরীক্ষার দিন সকাল সাড়ে ৯টার পর কোনো পরীক্ষার্থী হলে প্রবেশ করতে পারবেন না। পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্রের রঙিন প্রিন্ট কপি নিয়ে আসতে হবে। কেন্দ্র/ভেন্যুতে পরীক্ষার্থীদের (ছেলে ও মেয়ে) পৃথক পৃথক তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। পরীক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র ও বলপয়েন্ট কলম ব্যতীত অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে যেন প্রবেশ করতে না পারেন, সে লক্ষ্যে মেটাল ডিটেক্টরের পাশাপাশি আর্চওয়ে দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রবেশের বিষয়টি তদারকি করা হবে। ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র/ভেন্যুতে সকাল ৮টা থেকে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করতে ইনভিজিলেটর (কক্ষ পরিদর্শক) সকাল আটটা থেকে পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত কক্ষে অবস্থান করে প্রবেশপত্রে পরীক্ষার্থীর ছবির জলছাপ ও রঙিন ছবির সঙ্গে পরীক্ষার্থীর চেহারা মিলিয়ে পরীক্ষাকক্ষে প্রবেশের অনুমতি দেবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কেন্দ্রে উপস্থিত থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। পরীক্ষার্থী, ইনভিজিলেটর, ভেন্যুর কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মন্ত্রণালয়/অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কোনোভাবেই মোবাইল, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ব্লুটুথ, এয়ারফোন ইত্যাদি বহন করবেন না। ভর্তি পরীক্ষার হলে ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজের সঙ্গে জড়িত কেউ মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র/ভেন্যুতে ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি প্রবেশ করতে পারবেন না। পরীক্ষার দিন পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোর আশপাশের ফটোকপির মেশিন বন্ধ থাকবে। পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেকোনো প্রকার অসদাচরণ/প্রতারণা/গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িত কাউকে চিহ্নিত করা গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
গুণগত মানের দিকে নজর দেবো, সংখ্যার দিকে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে গতকাল শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, কোনো মেডিকেল কলেজ নতুন করে খোলার পক্ষে আমি একদম না। আমি মনে করি, আমাদের মেডিকেল কলেজগুলোতে এখনো শিক্ষকের সংকট আছে। আমি যদি সেই সংকট দূর করতে না পারি; একজন শিক্ষার্থীকে যদি আমি পড়াতেই না পারি, সে ডাক্তার হয়ে আপনার-আমার যে কারও চিকিৎসা করতে পারে না। আমি গুণগত মানের দিকে নজর দেবো, সংখ্যার দিকে না। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শর্ত পূরণ করতে না পারায় দুটি মেডিকেল কলেজের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া, চারটির ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। আইটি মেডিকেল কলেজ উত্তরা, ধানমণ্ডির নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, রংপুরের নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ ও রাজশাহীর শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। ঢাকার কেয়ার মেডিকেল কলেজ ও আশুলিয়ার নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি কোয়ালিটি ডাক্তার তৈরি করার পক্ষে। তার জন্য যা যা করার আমি করবো। হঠাৎ করে মেডিকেল কলেজ বানানো, সেটার পক্ষে আমি না।