‘শিল্পীদের এসব মন্তব্যেও কষ্ট পেয়েছি। কোথায় তারা গণহত্যাকে ঘৃণা করবেন, শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াবেন—অথচ উল্টো অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছেন।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিয়ে বাংলাদেশি শিল্পীদের একটি অংশের কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পরেছে। শোবিজের আলোচিত বিষয় এখন ‘আলো আসবেই’ নামের শিল্পীদের একটি চ্যাটিং গ্রুপের কথোপকথন।
গ্রুপটিতে যাদের নিয়ে নানারকম মন্তব্য করা হয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান।
সাদিয়া বলেন, ‘গতকাল কয়েকঘণ্টা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছিলাম না। রাতে দেখতে পাই, কয়েকজন আমাকে কথোপকথনগুলো পাঠিয়েছেন। সেগুলো পড়ি। তবে, খুব বেশি অবাক হইনি। এসব লিখে তারা তাদের মানসিক অবস্থার জানান দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের সময় আমি ফেসবুকে সরব ছিলাম। আমার লেখাগুলো মানুষের কাছে গেছে। ক্ষমতার পালাবদল না হলে তারা আমার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতেন, তা আমি বুঝতে পারি। আরও অনেকের বিরুদ্ধেই নিতেন।’
আন্দোলনকারীদের ওপর ‘গরম জল দিলেই হবে’ বলে আলোচিত গ্রুপটিতে মন্তব্য করেছেন চিত্রনায়িকা অরুণা বিশ্বাস। তার এই মন্তব্য সম্পর্কে সাদিয়া বলেন, ‘একজন সিনিয়র শিল্পী লিখেছেন, গরম জল দিলেই হবে। আমি আশ্চর্য হয়েছি। এসব লিখে ছোট মনের পরিচয় দিয়েছেন।’
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া অভিনেতা মিলন ভট্টাচার্য সাদিয়ার ছবি ‘আলো আসবেই’ গ্রুপে দিয়েছেন। এ বিষয়ে সাদিয়া বলেন, ‘দেখুন, মিলন দার সঙ্গে আমি অভিনয় করেছি। একটি সিরিজ করেছি। শুটিংয়ে তাকে অনেক আন্তরিক মনে হয়েছে। অনেক সময় আমার স্ট্যাটাসে তিনি মন্তব্যও করেছেন। দেখা হলে আন্তরিকতা নিয়ে কথা বলেছেন সবসময়। অথচ তিনিই আমার কথা গ্রুপে লিখেছেন। তাহলে কাকে বিশ্বাস করব?’
ওই গ্রুপটিতে আন্দোলনের পক্ষে থাকা শিল্পীদের নিয়ে নানারকম মন্তব্য করা হয়েছে, ভয়-ভীতি দেখানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সাদিয়ার ভাষ্য, ‘শিল্পীদের এমন আচরণে কষ্ট পেয়েছি। শিল্পীদের এসব মন্তব্যেও কষ্ট পেয়েছি। কোথায় তারা গণহত্যাকে ঘৃণা করবেন, শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াবেন—অথচ উল্টো অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছেন।’
মিলন সম্পর্কে সাদিয়া আরও বলেন, ‘মিলন দা আমাকে রাতে সরি লিখেছেন, ভয়েস মেসেজ পাঠিয়েছেন। আমি জবাব দিইনি। কষ্টটা এখনো রয়ে গেছে।’
আন্দোলনের সময়গুলোর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘সেই সময়ে লেখালেখি করায় আমার রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড কী, আমি কে, এসব জানতে চাওয়া হয়েছে। সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া যে সেই সরকারের পতন হয়েছে। তা না হলে আমিসহ আরও অনেককেই বিপদে ফেলত ওরা।’
এক প্রশ্নের জবাবে সাদিয়া বলেন, ‘মানুষ তাদের চিনতে পেরেছে। কিছু শিল্পীর মুখোশ উন্মোচন হয়েছে। তাদের আসল চেহারা প্রকাশ পেয়েছে। গণহত্যার বিরুদ্ধে যদি তারা কথা বলতো, তাহলে মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হতো। তাদের মানসিকতা দেখে লজ্জা পাচ্ছি।’
‘আমি সত্যর পক্ষে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে। যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে, তাদের সঙ্গে আমি নেই। এ জন্যই আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলাম। আমার জায়গা থেকে প্রতিবাদ জানিয়েছি,’ যোগ করেন তিনি।
নতুন করে শুটিংয়ে ফিরেছেন সাদিয়া। ইফতেখার আহমেদ ফাহমির একটি নাটকের শুটিং করেছেন সম্প্রতি। ‘পুতুল পুতুল খেলা’ নাটকটিতে তার বিপরীতে রয়েছেন জোভান।
নাটকের পরিচালক সম্পর্কে সাদিয়া বলেন, ‘ফাহমি ভাই মেধাবী পরিচালক। তার সঙ্গে কাজ করে ভালো লেগেছে।’
সহশিল্পী জোভান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জোভান ভাইয়ের সঙ্গে আগেও নাটক করেছি। তিনি অনেক ডেডিকেটেড শিল্পী।’