গাবতলীতে সংবাদ সম্মেলনে গ্রেফতারকৃত গোলজারের স্ত্রীর দাবী ঋণদাতা নয়, স্ত্রী উপর ক্ষোভেই স্বামী মালেক আত্মহত্যা করেছে।
আমিনুল আকন্দ,গাবতলী (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়া গাবতলীর বহুল আলোচিত কৃষক
আব্দুল মালেক (৪৫) তার স্ত্রী কারণেই ক্ষোভে-অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন। অথচ মালেকের
স্ত্রীর সাজানো এক মামলায় আমার স্বামী এখন জেলহাজতে রয়েছে। তাকে ৭দিনের রিমান্ড
চাওয়া হয়েছে।
১২ জুলাই বুধবার গাবতলী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে
এমনটাই দাবী করেছেন উপজেলার দূর্গাহাটা ইউনিয়নের চকবেড়া মধ্যপাড়া গ্রামের
পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত টাইলস্ধসঢ়; মিস্ত্রি গোলজার রহমানের (৪০) স্ত্রী মোছাঃ
সম্পা বেগম (২৮)। সম্পা বেগম লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার দুই ছেলে। এক ছেলে
প্রতিবন্ধী। গত ৬মাস আগে গাবতলীর পাররানীরপাড়া গ্রামের আ: মালেকের স্ত্রী মোছাঃ
রিমা বেগম (৩০) প্রতিবেশি হওয়ার সুবাদে আমার স্বামীর কাছ থেকে ৩৬হাজার টাকা
ধার নিয়ে সংসারের কাজে না লাগিয়ে অন্যত্র খরচ করে ফেলে। তাই টাকা ধার নেয়ার
বিষয়টি রিমা বেগম তার স্বামী আ: মালেকের কাছে গোপন রাখেন।
এমন অবস্থায় ঈদুল আযহার পরপরই রিমা বেগম তার চাচাতো বোন গাবতলীর চকবেড়া
মধ্যপাড়া গ্রামের রঞ্জু খাঁ এর স্ত্রী সাথী আকতারের (৩৫) কাছ থেকে আত্মীয়ের বাড়ীতে
বেড়াতে যাবার কথা বলে ১ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল নিয়ে আসে। কিন্তু গহনা
ধার দেয়ার বিষয়টি সাথীর স্বামী জানতে পেরে গহনা ফেরত নিয়ে আসার জন্য স্ত্রীকে
চাপ দেয়। বাধ্য হয়ে সাথী বেগম ওইদিন রাতেই রিমা বেগমের কাছ থেকে গহনাগুলো
ফেরত নিয়ে আসে। রিমা বেগমের বাবা গাবতলীর উনচুরখী গ্রামের আব্দুর রহিম টাকা
কর্জ নেয়ার বিষয়টি শুনতে পেরে সব টাকা গোলজার রহমানকে পরিশোধ করে দিয়ে
মেয়েকে ঋণমুক্ত করেন।
এদিকে টাকা ধার নিয়ে আজেবাজেভাবে ব্যয় করা এবং গহনার কেলেংকারী নিয়ে স্ত্রী
রিমা বেগমের উপর প্রচন্ড ক্ষেপে যান তার স্বামী আব্দুল মালেক। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের
মধ্যে তুমুল ঝগড়া-বিবাদ হয়। এক পর্যায়ে গত ০৮/০৭/২৩ ইং তারিখ রাত ৯টায় খাওয়া-
দাওয়া শেষে রিমার স্বামী একলা একঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর আ: মালেক স্ত্রীর উপর ক্ষোভে-
অভিমানে ৮ই জুলাই দিবাগত রাতে ঘরের তীরের সাথে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এ ঘটনায় স্থানীয় একটি স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনায় রিমা বেগম বাদী হয়ে আমার
স্বামীকে প্রধান অভিযুক্ত করে গাবতলী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এজাহারে
তিনি উল্লেখ করেছেন, আমার স্বামী নাকি কর্জের টাকা আদায়ের জন্য রিমা বেগমকে
বাঁশঝাড়ে রশি দিয়ে বেধে রাখে। যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলক।
এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, উল্লেখিত সাথী বেগমের কাছ থেকে দাওয়াতে
যাবার মিথ্যা কথা বলে নিয়ে আসা গহনাগুলো নাকি গত ৬মাস আগে আমার স্বামী
গোলজার রহমানের নিকট জমা দিয়ে দাদনের টাকা নিয়েছে। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও
সাজানো ঘটনা। কারণ সাথী বেগমের কাছ থেকে মিথ্যা অজুহাতে নিয়ে আসা
গহনা এবং তা ফেরত দেয়ার বিষয়টি তো গত জুন মাসের শেষের (ঈদুল আযহার পরে) ঘটনা।
কোনক্রমেই ৬মাস আগের ঘটনা নয়। তাহলে ৬মাস আগে গোলজারকে ১লাখ টাকা মূল্যের
১ভরি ওজনের চেইন ও কানের দুল জমা দেয়ার অভিযোগটিও সম্পূর্ণ সাজানো। অথচ
সাজানো এই মামলায় আমার স্বামী এখন জেলহাজতে রয়েছে। তাকে ৭দিনের রিমান্ড
চাওয়া হয়েছে।
এজাহারের বর্ণনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য গাবতলী মডেল থানার ওসি সনাতন চন্দ্র সরকার
এবং মামলাটির তদন্তকারী অফিসার এস আই শরিফুল ইসলাম ঘটনাস্থল চকবেড়া মন্ডলপাড়া
গ্রামে যান। সেখানে তারা বাঁশঝাড়ের আশপাশের বসবাসকারী নছর উদ্দিন প্রাং এর
ছেলে আসলাম প্রাং (৪৫) এবং জাহিদুল মন্ডলের স্ত্রী জিন্না বেগমসহ বিভিন্নজনকে
পৃথক পৃথকভাবে প্রকাশ্য ও গোপনে জিজ্ঞাসাবাদ করে রিমা বেগমকে বাঁশঝাড়ে বেঁধে
রাখার কোনই সত্যতা পাননি।
প্রিয় কলম সৈনিক ভাইয়েরা, আমি আপনাদের মাধ্যমে আব্দুল মালেক আত্মহত্যার প্রকৃত বিবরণ সবাইকে জানানোর জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি। যাতে করে নির্দোষ আমার স্বামী গোলজার রহমান সাজানো ওই মামলা\ থেকে রেহাই পান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গোলজার রহমানের বড়বোন ফেরদৌসী আকতার, মামা মকবুল হোসেন, খালাতো ভাই রাজু আহম্মেদ, ভাগ্নে নুর আলম ও সোহাগ।