রেস্টুরেন্টের ব্যবসায় গিয়ে ভয়ঙ্কর প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন টালিউড অভিনেত্রী ইয়ামিন হক ববি। এ ঘটনায় শাহিনা ইয়াসমিন, তার ছেলে জাওয়ান আল মামুনসহ ৭ জন ও অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনের নামে মামলা করেছেন তিনি।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে রাজধানীর রেডঅর্কিড রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজের প্রতারিত হওয়ার ঘটনা নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
নায়িকা ববি বলেন, সৎভাবে জীবনযাবন অব্যাহত রেখে আর্থিক সচ্ছলতার আশায় আমি গুলশান-২ এর ১১৩ নম্বর রোডের ওয়াই এন সেন্টারের একটি রেস্টুরেন্ট ক্রয় করি। রেস্টুরেন্টে অপারেশন পার্টনার হিসেবে রয়েছেন আমার পূর্বপরিচিত মির্জা বাশার। আগের রেস্টুরেন্টের মালিক আমানের সঙ্গে তার রেস্টুরেন্টের সমুদয় আসবাবপত্র (ইন্টেরিয়র ও অন্যান্য) ৫৫ লাখ টাকা মূল্য ধরে একটি চুক্তি হয়। একই সময়ে রেস্টুরেন্ট ভবনের (বিল্ডিং) মালিকের স্ত্রী শাহিনা ইয়াসমিন ও ছেলে জাওয়াদ আল মামুনের সঙ্গে ভবন রেস্টুরেন্ট মালিকসহ আলোচনা করি। তখন শাহিনা ইয়াসমিন ও জাওয়াদ রেস্টুরেন্টটি আমাকে ভাড়া নিতে উৎসাহিত করেন এবং চলমান রেস্টুরেন্ট হস্তান্তর করলে তারা পরবর্তী সময়ে আমাদের নামে নতুন চুক্তিপত্র করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তাদের প্রতিশ্রুতির পর আমরা আমানকে ১৫ লাখ টাকা দেই এবং টাকা পাওয়ার পর দিন আমানের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী তাকে দুটি চেকও দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, গত এপ্রিল মাসে আমান আমাদের কাছে রেস্টুরেন্ট হস্তান্তর করেন। আমরা এপ্রিল থেকে রেস্টুরেন্টের ভাড়া প্রতি মাসে আড়াই লাখ ও বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য খরচ পরিশোধ করছি। ভবনের মালিক আমাদের নামে ভাড়া জমা নিয়ে রসিদও দেন। রেস্টুরেন্টে ওঠার পর আমরা ডেকোরেশন পরিবর্তনের কাজ শুরু করি। যাতে প্রায় ১ মাস সময় লাগে। ডেকোরেশনে প্রায় ৫০ লাখ টাকা খরচ হয়। এ পর্যায়ে আমরা রেস্টুরেন্ট পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করি এবং ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য আমরা ভবনের শাহিনা ইয়াসমিন ও জাওয়াদ আল মামুনকে চুক্তিপত্র, ফায়ার সেফটি ও বাণিজ্যিক অনুমতির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেওয়ার অনুরোধ করি।
তিনি অভিযোগ করেন, আমরা যখন ট্রেড লাইসেন্স করতে এসব কাগজপত্র চেয়েছি তখন থেকে হঠাৎ করেই পূর্বের রেস্টুরেন্ট মালিক আমান, মালিক শাহিনা ইয়াসমিন, জাওয়াদ, ভবনের দায়িত্বে থাকা জয়, সাকিবসহ অন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা আমাদের হয়রানি শুরু করেন। প্রথমে আমান তাকে পরিশোধ করা ১৫ লাখ টাকার বিষয়ে অস্বীকার করেন। অন্যদিকে শাহিনা ও জাওয়াদের নির্দেশে ভবনের দায়িত্বে থাকা কর্মচারী জয়, সাকিব, হারুন ও তাদের সহযোগীরা বারবার আমার রেস্টুরেন্টের বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে দিয়ে আমাকে হয়রানি শুরু করেন। এর মধ্যে গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ওয়ান গ্রুপ থেকে বারবার সন্ত্রাসী ও লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে রেস্টুরেন্টে এসে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। গুলশানের মতো জায়গায় এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে দেখে আমি ভীত হয়ে যাই এবং এরা আসলে কাদের লোক তা জানার চেষ্টা করি। তখনই আমরা প্রথম জানতে পারি, শাহিনা ইয়াসমিন বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের স্ত্রী এবং এই ভবনের মালিক গিয়াস উদ্দিন আল মামুন নিজেই।