বিনোদন ডেস্ক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারকাদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি ছিল বেশ চোখে পড়ার মতো। অনেক তারকা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। কেউ আওয়ামী লীগ, কেউ বিএনএম আবার কেউবা স্বতন্ত্র প্রার্থী থেকে নির্বাচনে লড়েছেন। তবে শেষ দৌড়ে শামিল হন চলচ্চিত্র, নাটক ও সংগীতজগতের একাধিক তারকা। কেউ হেসেছেন শেষ হাসি, কেউ প্রথমবারে করেছেন বাজিমাত। কারও আবার জামানত বাজেয়াপ্তের মতো ঘটনাও ঘটেছে। তারকাদের মধ্যে কে কোন আসন থেকে লড়লেন, কে জিতলেন, কে হারলেন ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সঙ্গে ভোটের ব্যবধান কত ছিল, একনজরে তা দেখে নেওয়া যাক।
২০০১ সাল থেকেই আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর। এবারও তিনি নীলফামারী-২ আসনে জয়ী হয়েছেন। এ নিয়ে টানা পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন তিনি। ফলাফলে দেখা গেছে, আসাদুজ্জামান নূর ১ লাখ ১৯ হাজার ৩৩৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়নাল আবেদীন পেয়েছেন মাত্র ১৫ হাজার ৬৮৪ ভোট।
জনপ্রিয় শিল্পী মমতাজ বেগম ২০০৯ সালে নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মনোনীত হন। আর ২০১৪ সাল থেকে মানিকগঞ্জ-২ আসনে নির্বাচিত হয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মমতাজ। এবারও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে নৌকা প্রতীকে লড়েছেন তিনি। মানিকগঞ্জ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে হেরে গেলেন তিনবারের সংসদ সদস্য মমতাজ। মমতাজ বেগমকে হারিয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ। নির্বাচনে ৮৮ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়েছেন জাহিদ আহমেদ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী মমতাজ বেগম পেয়েছেন ৮২ হাজার ১৩৮ ভোট।
অভিনেতা ফেরদৌস এবারই প্রথম সংসদ প্রার্থী হন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবার লড়েই বাজিমাত করেছেন তিনি। ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে জিতেছেন তিনি, পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৮৯৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী শামসুল আলম আম প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ২৫৭ ভোট। এ আসনে ভোট পড়েছে ২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
প্রচারণায় চমক দেখালেও ভোটযুদ্ধে হেরে গেছেন নায়িকা মাহিয়া মাহি। রাজশাহী-১ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া এই নায়িকা পেয়েছেন মাত্র ৯ হাজার ৯ ভোট। একই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৩ হাজার ৫৯২ ভোট। একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রব্বানী পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪১৯ ভোট!
একসময়ের জনপ্রিয় গায়িকা ডলি সায়ন্তনী পাবনা-২ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। নির্বাচন শেষে রাতে ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায় ডলি সায়ন্তনী পেয়েছেন মাত্র ৪ হাজার ৩৮২ ভোট। এই আসনে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফিরোজ কবির। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৬৫ হজার ৮৪২ ভোট। তারকাদের মধ্যে যারা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছেন ডলি সায়ন্তনী। তবে ভোট প্রদান শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন এই গায়িকা।
বরিশাল-২ আসন থেকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের হয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন শিল্পী নকুল কুমার বিশ্বাস। তবে নির্বাচনে অংশ নিলেও এ অঞ্চলের মানুষ নির্বাচিত করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে। নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া মেনন ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৭৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এ কে ফাইয়াজুল হক রাজু (ঈগল প্রতীক) পেয়েছেন ৩২ হাজার ১৯ ভোট।