1. editor@dailybogratimes.com : dailybogratimes. :
জরিপের ফল : ৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থী রাজনীতির বিরুদ্ধে » Daily Bogra Times বগুড়া টাইমস
Logo বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী  দেশপ্রেমিক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক হলেন নওগাঁর হাবিবুর রহমান পিরোজপুরের ভাসমান পেয়ারা বাজারে ধস, চাষীরা ঋণগ্রস্ত ২৮ শতাংশ কমে গেছে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানি পরিবর্তন হচ্ছে জেলা-মেট্রোপলিটন পুলিশের ইউনিফর্ম-লোগো ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে পয়েন্ট হারিয়েছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা বন্ধ করা হবে ৩ হাজার ৪৯১টি অবৈধ ইটভাটা সংবিধানকে এমনভাবে করব যাতে করে কোন মানুষ সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয় : ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুল রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ক সেমিনার রিমান্ডের নামে আসামিকে জামাই আদর করার অভিযোগ  মহাদেবপুরে স্বামীর লাঠির আঘাতে স্ত্রীর মৃত্যু মিরাজের লাশ না কাটতে মায়ের আকুতি বদলগাছীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে নবাগত ওসি’র মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত দেবীনগরে গুম হওয়া আরিফুল ইসলামকে জিবীত ফিরে পেতে চায় স্ত্রী ও সন্তানেরা।  বাঁধনকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে যা বললেন পিনাকী ভট্টাচার্য দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন হাসিনা, দলবল নিয়ে ঘুরছেন পার্কে

জরিপের ফল : ৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থী রাজনীতির বিরুদ্ধে

নিউজ ডেস্কঃ-
  • বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৯ বার পঠিত
জরিপের ফল : ৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থী রাজনীতির বিরুদ্ধে
print news

ছাত্ররাজনীতি থেকে অনেকটা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন ঢাবির শিক্ষার্থীরা। দাবি উঠেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি জরিপে ৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থীই রাজনীতির বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন। ৯৬ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করেন দলীয় ছাত্ররাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের রাজনীতিবিমুখতার পেছনে ১৬ বছরে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনই বেশি দায়ী

গতকাল মঙ্গলবার ঢাবি সাংবাদিক সমিতিতে ঢাবি সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ছাত্ররাজনীতি ও রাজনৈতিক কার্যক্রম বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অভিমত’ শীর্ষক গবেষণা জরিপের ফল প্রকাশ করে সংগঠনটির গবেষণা টিম।

গবেষণাটি গত ৩ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে ১১ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৮টি বিভাগ ও ১০টি ইনস্টিটিউটের ২ হাজার ২৩৭ জন শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ থেকে ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থীরা এই জরিপটিতে অংশগ্রহণ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদের জরিপে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৬ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করেন দলীয় ছাত্ররাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অন্যদিকে, ৮৩ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে দলীয় ছাত্ররাজনীতিকে ‘একেবারেই নিষিদ্ধ’ রূপে প্রত্যাশা করেছেন। সংস্কারকৃতরূপে বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ছাত্ররাজনীতি প্রত্যাশা করেছেন মাত্র ১৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ছাত্ররাজনীতি যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থাতেই প্রত্যাশা করেছেন মাত্র শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে দলীয় ছাত্ররাজনীতির ‘কোনো গুরুত্ব নেই’ বলে মনে করেন।

জরিপের প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, ছাত্ররাজনীতির মূল প্রভাব হিসেবে ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্ষমতার অপব্যবহারকে উল্লেখ করেছেন। ৮৭ দশমিক ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর মানসিক চাপ, ৮৪ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ভয়ংকর গেস্টরুম কালচার, ৭৭ দশমিক ২ শতাংশ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সহিংসতা, ৭৪ দশমিক ১ শতাংশ দাঙ্গা-হাঙ্গামা, ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থতা, ৬৮ দশমিক ৭ শতাংশ, জাতীয় রাজনৈতিক দলের প্রভাব, ১১ দশমিক ৪ শতাংশ নেতৃত্বে সুযোগ সৃষ্টি, ৪ দশমিক ৬ শতাংশ ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি এবং ৪ দশমিক ৫ শতাংশ অন্যান্য প্রভাব উল্লেখ করেছেন।

জরিপে দেখা গেছে, দলীয় ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের বিকল্প হিসেবে ৮১ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী নিয়মিত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও দলীয় ছাত্ররাজনীতির প্রশ্নে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী ‘শুধু ছাত্র সংসদ চান, তবে দলীয় ছাত্ররাজনীতি চান না’ বলে মতামত দিয়েছেন। এ ছাড়া ক্যাম্পাসভিত্তিক বা হলভিত্তিক দলীয় ছাত্ররাজনীতির কমিটি প্রদানকে ৯৪ শতাংশ শিক্ষার্থী সমর্থন করেন না।

এ ছাড়া দলীয় ছাত্ররাজনীতি পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকায় প্রায় ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থীই খুবই অসন্তোষজনক হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ছাত্ররাজনীতি প্রকৃত অর্থেই জাতীয় নেতৃত্ব তৈরি করতে সক্ষম নয় বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। রাজনৈতিক কার্যক্রমের ফলে শিক্ষার্থীদের নেতিবাচক অভিজ্ঞতাই বেশি হওয়ায় ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন না।

গবেষকরা জরিপের ফলাফল অনুযায়ী চারটি সুপারিশ প্রদান করেন, সেগুলো হলো দলীয় ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধকরণ; ডাকসু পুনর্জীবিত ও সংস্কার; শিক্ষা ও গবেষণা উন্নয়ন কমিটি গঠন; শিক্ষা ও গবেষণার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা।

এ বিষয়ে ঢাবি গবেষণা সংসদের সভাপতি ফাহিম হাসান মাহদী বলেন, ‘আমরা জরিপ করতে গিয়ে দেখেছি, শিক্ষার্থীরা মনে করছেন রাজনীতির কারণে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তারা গেস্টরুম কালচারের মধ্য দিয়ে গেছে। তাদের জোর করে কর্মসূচিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এসবে অংশগ্রহণ না করলেই, ভিন্নমত হলেই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব নেতিবাচকতার কারণেই মূলত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ চান।

ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব পলিটিকসের পিএইচডি শিক্ষার্থী ও তরুণ গবেষক নাসরিন জেবিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থী রাজনীতিবিমুখ এটি সত্যিই অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, বরং দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্যও ক্ষতিকর। আমরা পলিটিক্যাল বিয়িং এবং রাজনীতি আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের নিয়ন্ত্রক। রাজনীতি থেকে দূরে থাকা মানে নিজের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রকে নিয়ন্ত্রণহীন রাখা। রাজনীতিসচেতনতা ছাড়া একটি সমৃদ্ধ সমাজ কল্পনা করা অসম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, তরুণদের এই বিমুখতার পেছনে মূল কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ‘উইনার টেকস অল’ পলিটিকস সংস্কৃতি। ভিন্ন মতাবলম্বীরা যে পরিমাণ নির্যাতন, নিপীড়ন এবং সাপ্রেশনের শিকার হয়েছে, তা তরুণদের মধ্যে রাজনীতি থেকে দূরে থাকার মনোভাব জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্টরুম সংস্কৃতি, যা শিক্ষার্থীদের ওপর পৈশাচিক নির্যাতনের প্রতীক হয়ে উঠেছে, তরুণদের রাজনৈতিক পরিবেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করেছে। এখানে রাজনৈতিক দলগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শুধু নিয়েছে অবস্থান, সমর্থন, পড়ালেখার পরিবেশ, সময় এমনকি স্বাধীন চিন্তার অধিকারও। ফলে তারা রাজনীতিকে তাদের মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কল্যাণের অন্তরায় হিসেবে দেখছে।

এ বিষয়ে ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আইনুল ইসলাম বলেন, যে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি অতীতে হয়েছে, বিশেষ করে গত ১৫ বছরে ছাত্রলীগের যে রাজনীতির কারণে গণরুম, গেস্টরুম কালচার তৈরি হয়েছে। বাধ্যতামূলক রাজনীতিতে ব্যবহার করার যে প্রবণতা ব্যাপকভাবে চলেছে, এটার কারণেই মূলত ছাত্ররা রাজনীতিবিমুখ হয়ে গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য ক্যাম্পাসে মূলত ছাত্ররাজনীতি ছিল না, যা ছিল তা লেজুড়বৃত্তিক। ছাত্রদের বাধ্যতামূলক দলীয় রাজনীতিতে ব্যবহার করার প্রচেষ্টায় চলেছে। এই অপরাজনীতির ক্ষোভ দীর্ঘদিন বয়ে বেড়ানোর পর এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রকাশ করেছে এবং রাজনীতিবিমুখ হয়ে গেছে। ফলে তারা রাজনীতির নাম শুনলেই ভয় পাচ্ছে যে আবারও এমন কালচার শুরু হয়ে যায় কি না।

তিনি আরও বলেন, ‘ প্রকৃতপক্ষে রাজনীতিমুক্ত হওয়া সম্ভব না। আমরা যদি ডাকসু নির্বাচন চায়, সেখানে একাধিক প্যানেল থাকবে। বিভিন্ন নামে বিভিন্ন মত অংশগ্রহণ করবে। সেখানেও রাজনীতি থাকবে। ছাত্রদের রাজনীতি শেখার জায়গায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আমরা রাজনীতি বর্জন করতে পারব না। আমরা যা পারব, তা হচ্ছে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি, ক্ষমতাভিত্তিক রাজনীতি।’

এনাম হক / ডেইলি বগুড়া টাইমস

আরো খবর
© All rights reserved by Daily Bogra Times  © 2023
Theme Customized BY LatestNews