সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুসকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আটজন পূর্ববাংলা/ সর্বহারা সদস্যকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে রান্ধুনীবাড়ী পুলিশ ক্যাম্পে লুট হওয়া একটি এসএমজিসহ তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, ১১ রাউন্ড তাজা গুলি, দুটি চাকু ও একটি সাউন্ড গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়।
আটক আসামিরা হলেন-পাবনা জেলার চাটমোহর থানার বাঙ্গালা পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত আমীর সরকারের ছেলে মো. জহুরুল ইসলাম তুষার (২৫), একই থানার কাটাখালি পূর্বপাড়া গ্রামের মো. আমীর সরকারের ছেলে মো. রহমত আলী (৪৫), দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী থানার সুজাপুর বানিয়াপাড়া গ্রামের বিকাশ মহন্তের ছেলে বিশ্বনাথ মহন্ত (২৩), সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সুজা দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত গফুর মোল্লার ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম (৪০), রায়গঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণপুর উত্তরপাড়ার মৃত গকুল চন্দ্র দাসের ছেলে শ্রী বলরাম চন্দ্র দাস (৩৮), তাড়াশ উপজেলার গুড়পিপুল গ্রামের মৃত শংকর চন্দ্র দাসের ছেলে উত্তম চন্দ্র দাস (৪০), একই উপজেলার টাগরা দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত জুরান উদ্দিনের ছেলে মো. রহমত আলী (৪৮) ও দেওঘর গ্রামের মৃত গণেশ উরাওয়ের ছেলে শ্রী সুনীল উরাও (৪৫)।শনিবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন ও পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মন্ডল।
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন বলেন, এক বছর আগে তাদের পরিকল্পনা ছিল হত্যাকাণ্ড ঘটানোর। ২০১৯ সালে বগুড়ার শেরপুরে পুলিশের এসআই নান্নুর উপর সর্বহারা পার্টির পরিচয়ে গুলি করা হয়েছিল। ওই মামলার সাক্ষী ছিলেন ভিকটিম আব্দুল কুদ্দুস। /পুলিশের উপর গুলি ছোড়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুই-একজন আসামি এনকাউন্টারে মারাও গেছেন। যাদের আসামি করা হয়েছে এবং আটক করা হয়েছে সর্বহারাদের ধারণা, এটা তাদের উপর অবিচার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তারা ভিকটিম আব্দুল কুদ্দুসের উপর ক্ষুব্ধ ছিল। এ কারণেই আব্দুল কুদ্দুসকে হত্যা করা হয়।
পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল জানান, চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় উপজেলার ভোগলমান বাজারে শত শত লোক সমাগমের মধ্যে মুখোশধারী আগ্নেয়াস্ত্র বহনকারী ১৪/১৫ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী গুলি করে আ. কুদ্দুস সরকারকে হত্যা করে। হত্যা করে বাজারে পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টির লিফলেট এবং সর্বহারা পার্টি জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ ঘটনায় ২০ ফেব্রুয়ারি তাড়াশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
তিনি আরও জানান, শনিবার ভোররাতে তাড়াশ দেশীগ্রাম ইউনিয়নের দোগাড়ীয়া ঈদগাহ মাঠ এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ একটি সন্ত্রাসী দল মহড়া দিচ্ছে/ এমন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ও তাড়াশ থানার বিশেষ টিম এ সন্ত্রাসীদের অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক করে। এসময় তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দানকারী তাড়াশ থানার তালম ইউনিয়নের দেওঘর গ্রাম থেকে শ্রী সুনীল উরাওকে আটক করা হয়।