1. dailybogratimes@gmail.com : dailybogratimes. :
তাবলিগের দুই পক্ষকে এক করার উদ্যোগ » Daily Bogra Times
Logo বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
এবার ভাঙল এ.আর. রহমানের ২৯ বছরের সংসার প্রতিহিংসার শিকারে বগুড়ায় ২৮ বছরেও উড়ে নাই বিমান মুখোমুখি ভারত ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, নতুন কূটনৈতিক সমীকরণ? নিরাপত্তার শঙ্কা বাড়াচ্ছে অবৈধ স্যাটেলাইট ফোন রাজনৈতিক দলগুলো যদি সংস্কার না চায় তাহলে এখনই নির্বাচন দেওয়া হবে : ড. ইউনূস পেরুকে হারিয়ে জয়ে বছর শেষ করলো আর্জেন্টিনা উরুগুয়ের সঙ্গে ড্র করে ৫ নেমে গেল ব্রাজিল ১৯৭১ এ কোনো ভুল প্রমাণিত হলে জাতির কাছে ক্ষমা চাইবো – জামায়াত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম ‘আনাস’ সালমান এফ রহমানের কোম্পানিকে ৬০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে সরকার সশস্ত্র বাহিনী দিবসে আমন্ত্রণ পেলেন খালেদা-তারেকসহ ২৬ বিএনপি নেতা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিলেন পুতিন গ্রুপে নিলয়ের সঙ্গী হয়েছেন ৫৯ অভিনেত্রী! প্রাথমিকে সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব সাহার জামিন নামঞ্জুর

তাবলিগের দুই পক্ষকে এক করার উদ্যোগ

নিউজ ডেস্কঃ-
  • সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৪
তাবলিগের দুই পক্ষকে এক করার উদ্যোগ
print news

বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের বিভক্তি প্রকট আকার ধারণ করেছে। ঢাকায় দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ বিভক্তিকে আরও গভীরে নিয়ে যাচ্ছে। দাওয়াতি কাজের সঙ্গে যুক্ত এমন সংগঠনের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতকে ভালো চোখে দেখছে না দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ। কয়েক বছর ধরে টঙ্গীর তুরাগ তীরে দুপক্ষই আলাদা ইজতেমার আয়োজন করছে। দুই দফা ইজতেমা আয়োজন নিয়ে প্রতি বছরই সরকারকে ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।

এ অবস্থায় দুই পক্ষকে এক করে ইজতেমা আয়োজনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও তাবলিগের একটি পক্ষ

তবে মধ্যস্থতায় সাদপন্থিরা আলোচনায় বসতে রাজি হলেও জুবায়েরপন্থিরা মীমাংসায় রাজি নন বলে জানা গেছে। ফলে তাদের মধ্যে সমঝোতা হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও তাবলিগ জামাতের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

এদিকে আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব আয়োজন করবেন তাবলিগ জামাতের মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়েরের অনুসারীরা (শুরায়ী নেজাম)। আর ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্ব আয়োজনের অনুমতি পেয়েছেন মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। সাদপন্থিরা আগামী ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা আয়োজনের অনুমতি চেয়েছেন। জোড় ইজতেমা বিশ্ব ইজতেমার ৪০ দিন আগে আয়োজন করা হয়। বিশ্ব ইজতেমা সফল করার বিষয়গুলো নিয়েই জোড় ইজতেমায় আলোচনা হয়। দ্বিতীয় পর্বে আয়োজনের সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাদপন্থিরা।

এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, তাবলিগ জামাত দুই পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়ায় প্রতি বছর পৃথকভাবে ইজতেমা আয়োজন করতে সমস্যায় পড়ছে সরকার। এ ছাড়া কোন পক্ষ আগে আয়োজন করবে, কোন পক্ষ পরে, তা নিয়েও বিরোধ লেগে থাকে। এবারও সাদপন্থিরা প্রথম পর্বে আয়োজন করতে চেয়েছিলেন। জুবায়েরপন্থিরাও একই অবস্থানে। শেষ পর্যন্ত জুবায়েরপন্থিরা প্রথম পর্বে ইজতেমা আয়োজনের অনুমতি পেয়েছেন। এতে অসন্তুষ্ট সাদপন্থিরা।

এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেনকে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। বক্তব্য জানা যায়নি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টারও। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে কালবেলা। তারা তাবলিগের বিভক্তি ও নেতাদের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে দুপক্ষের মধ্যে মীমাংসা চান তারা। দেশের আলেম সমাজও তাবলিগের বিভক্তি দূর করার পক্ষে রয়েছেন।

একজন শীর্ষস্থানীয় আলেম বলেন, তাবলিগ জামাত দ্বীন প্রতিষ্ঠায় ভালো ভূমিকা রাখছে। এ সংগঠনের জন্ম না হলে বহু মুসলমান কালেমা না পড়েই মারা যেত। তারা ইসলামের দাওয়াত পেয়েছে তাবলিগ জামাতের মাধ্যমে। বিশেষ করে নিরক্ষর মুসলমানরা দ্বীনের মধ্যে প্রবেশ করছে তাবলিগের মাধ্যেমে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে তাবলিগের বিভক্তি সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করেছে। তাবলিগের লোকজন যদি নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি করেন, তাহলে মানুষ ধর্মের প্রতি আস্থা হারাবে। এজন্য দুই পক্ষকে এক করতেই হবে। সরকারকে এ বিষয়ে আন্তরিকভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। সরকার ও তাবলিগের উভয়পক্ষ যদি আলোচনার টেবিলে বসে, তাহলে সমস্যার সমাধান মিলবে।

২০১৭ সালে ভারতের মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভীর একটি বক্তব্য ঘিরে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক তাবলিগ জামাতের নেতাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এর পর থেকে বাংলাদেশে দুই পক্ষ আলাদা হয়ে দুই পর্বে ইজতেমা আয়োজন করছে। বিগত সরকার তাদের দুপক্ষকে এক হয়ে ইজতেমা আয়োজনের অনুরোধ জানিয়েও ব্যর্থ হয়েছিল। শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারও বিভক্ত তাবলিগকে এক করার বিষয়ে জোর দিচ্ছে। তবে তাবলিগ জামাতের নেতাদের কঠিন মনোভাবের কারণে ঐক্য হচ্ছে না। তারা কেউই কাউকে সম্মান দিয়ে কথা বলছেন না।

গত ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী মহাসম্মেলন থেকে মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের উদ্দেশ করে কটাক্ষ ভাষায় বক্তব্য দেন। তাদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন সাদপন্থিরা। এরপর গত ১৫ নভেম্বর কাকরাইল মসজিদে জুমার নামাজ শেষে আগামী ৭ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের ডাক দিয়েছেন সাদপন্থিরা। পাল্টাপাল্টি এসব সমাবেশের ফলে সাধারণ মুসল্লিরা তাবলিগ জামাতের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন। কারণ, প্রায় শত বছরের পুরোনো এ দাওয়াতি সংগঠনের প্রতি ধর্মপ্রাণ মুসলমানের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আছে। কিন্তু ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশে তাবলিগের বিভক্তি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের নতুন করে চিন্তা করতে বাধ্য করছে। অনেক সাধারণ মুসল্লি তাবলিগ জামাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

কর্মকর্তারা জানান, আসন্ন বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ, আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখা, ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তাসহ অন্যান্য প্রসঙ্গে গত ৪ নভেম্বর সভা আয়োজন করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সভায় জুবায়ের ও সাদ উভয়পক্ষ থেকে চারজন করে প্রতিনিধিকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়। কিন্তু সাদপন্থিদের ‘না হক’ আখ্যা দিয়ে তাদের সঙ্গে সভায় বসেননি জুবায়েরপন্থিরা। তারা ৬ নভেম্বর পৃথকভাবে সভার আয়োজন করতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে একটি চিঠিও দিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের দাবি আমলে নেয়নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

একজন কর্মকর্তা বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকেও তাবলিগের নেতারা সম্মান দিয়ে কথা বলতে চান না। তাদের আচরণে কর্মকর্তারাও বিরক্ত। এমন পরিস্থিতিতে দুপক্ষের সমস্যা সমাধান করা খুবই কঠিন। তবে সাদপন্থিরা আলোচনায় বসতে রাজি আছেন। জুবায়েরপন্থিরা সাদপন্থিদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভায়ও বসেননি।

এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বহির্বিশ্বের কাছে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে বিশ্ব ইজতেমা দীর্ঘদিন ধরে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। অতীতের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমার আয়োজনকে আরও সুন্দর ও মহিমান্বিত করতে হবে।

ইজতেমা মাঠ হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বলা হয়, প্রথম পর্বের আয়োজনকারীরা তাদের আয়োজন শেষে বিভাগীয় কমিশনার ঢাকার নেতৃত্বে গঠিত বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতি সংক্রান্ত কমিটিকে ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার মধ্যে ইজতেমার মাঠ বুঝিয়ে দেবেন। দ্বিতীয় পর্বের আয়োজনকারীরা ওই দিন (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে একই কমিটির কাছ থেকে ইজতেমার মাঠ বুঝে নেবেন। দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা শেষে ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে তারা কমিটির কাছে মাঠ হস্তান্তর করবেন। বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সার্বিক কার্যক্রম তদারকি সংক্রান্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

AH/ Daily Bogra Times

আরো খবর
dbt
© All rights reserved by Daily Bogra Times  © 2023
Theme Customized BY LatestNews