চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর থানায় আটক আপন ছোট ভাইকে দেখতে গিয়ে এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত ও হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার ৭ দিন পর সেই সেনা কর্মকর্তার নিকট দু:খ প্রকাশ করেছেন গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল বাসার। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) বেলা সাড়ে ১১টায় ওসির কক্ষে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের উপস্থিতিতে দু:খ প্রকাশ করে ঘটনার সমাধান হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসের ১১ ফেব্রুয়ারী রাতে জুয়া খেলার অপরাধে আটক হয় গোমস্তাপুর উপজেলার ভেড়িবাজার গ্রামের সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মো. আইনাল হকের ছোট ভাই। পরদিন সকালে ১২ ফেব্রুয়ারী ছোট ভাইকে দেখতে ও খোঁজখবর নিতে থানায় যান আইনাল হক। এসময় বিভিন্ন কথাবার্তা বলার জের ধরে তাকে এক পুলিশ সদস্য কলার ধরে ওসির কক্ষে নিয়ে যায়। ওসির কক্ষে নিয়ে গিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ আইনাল হকের।
এনিয়ে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আইনাল হক বলেন, এলাকার কিছু সমস্যা নিয়ে থানায় কথা বলতে যায় এবং ঘুষবানিজ্য বন্ধসহ বিনা অপরাধে যাতে কাউকে হয়রানী করা না হয়, এবিষয়ে পুলিশের সাথে কথা বলি। এসময় ওসিসহ আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য উচ্চবাক্য ও অশোভন আচরণ করে। এমনকি আমার শার্টের কলার ধরে জোরপূর্বক ওসির রুমে নিয়ে গিয়ে যায় দুজন পুলিশ সদস্য। এসময় আমাকে তুই-তোকারি করে নানারকম বাজে মন্তব্য করেন ওসিসহ সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা। এর প্রতিবাদ জানালে পুলিশ সদস্যরা আমাকে চুপ থাকতে বলেন।
তিনি আরও বলেন, আমার পরিচয় ও সেনাবাহিনীতে কর্মক্ষেত্র নিয়েও বিদ্রুপ করেন সেখানে উপস্থিত এক নারী পুলিশ সদস্য। এসময় হাত দিয়ে পিস্তলে গুলি করার ইশারা দেখায় এক পুলিশ সদস্য।
এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনার বিবরণ দিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পুলিশ মহাপরিদর্শক ও ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের নিকট এর বিচার দাবি করেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আইনাল হক। তিনি জানান, এর জের ধরেই মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) থানায় ওসির কক্ষে হাত ধরে ক্ষমা চেয়ে সমাধান করেন ওসি খায়রুল বাসার। এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাসহ, স্থানীয় বাসিন্দা ও আইনাল হকের ঘনিষ্ঠ লোকজন ওসির কক্ষে ও কক্ষের সামনে অবস্থান করছিলেন।
ওসির কক্ষে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক মোত্তাসিন বিশ্বাস। তিনি জানান, ওসি ও সাবেক সেনা সদস্য আইনাল হকের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। তা সমাধান হয়ে গেছে।
এনিয়ে গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল বাসার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জুয়া খেলার সময় ১০ জনকে আটক করে পুলিশ। এদের মধ্যে একজন আইনাল হকের ভাই ছিল। এর জের ধরে তিনি (আইনাল হক) থানায় এসে তার ভাইকে ছেড়ে দেয়া ও জব্দকৃত টাকা ফেরতের দাবি জানান। তাতে অস্বীকৃতি জানালে বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। এর সূত্র ধরেই সমন্বয়কদের নিয়ে আজ (মঙ্গলবার) থানায় আসেন তিনি। এসময় পুলিশের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেন। এমন কিছু হয়ে থাকলে উল্লেখ করে দু:খ প্রকাশ করেছি তার কাছে। কলার ধরে ওসির রুমে নিয়ে লাঞ্ছিত ও হুমকি দেয়ার কথা অস্বীকার করেন তিনি।