প্রতি রমজানেই বাজারে শসার চাহিদা স্বাভাবিক দরের চেয়ে বেড়ে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম ছিল না। কিন্তু রমজান শেষ হওয়ার কয়েকদিন পর থেকেই হুট করে বাজারে শসার দাম কমে গেছে। শসা উৎপাদন করে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার শসা চাষিরা।
কয়েক দিন আগে ভালো দাম পেলেও বর্তমানে শসার দাম কমে যাওয়ায় খানসামা উপেজেলার পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ১ থেকে দেড় টাকায়।
শসা চাষিদের অভিযোগ, ১০ থেকে ১৫ দিন আগে বাজারে শসার দাম ভালো থাকলেও গত সপ্তাহ থেকে দাম কমতে শুরু করে। রমজানের শুরুতে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি শসা ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি করলেও কয়েক দিন ধরে প্রতি কেজি শসা এক থেকে দেড় টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা কেজি দরে। এতে লোকসান গুণছেন শসা চাষিরা।
খানসামার ভাবকি ইউনিয়নের চাকিনীয়া গ্রামের কৃষক সাকিব ইসলাম বলেন, কষ্টে উৎপাদিত ৫০ কেজি এক বস্তা শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করতে কষ্টে আমাদের বুক ফেটে যাচ্ছে। শসার ফলন ভালো হলেও বর্তমান বাজারে দাম না থাকায় খরচের টাকাও তুলতে পারছি না। শসা ছিঁড়তে যে খরচ, সে টাকাই তো উঠছে না। শসা চাষ করে লাভ তো দূরের কথা খরচও উঠল না।
একই এলাকার কৃষক এনামুল হক বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে সবজির দাম চড়া থাকায় বড় আশা করে শসা চাষ করেছিলাম। এখন এক টাকা কেজি দরে শসা বিক্রি করতে হচ্ছে। এক বিঘা জমিতে শসা চাষ করতে খরচ হয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। আশা ছিল শসার ফলন ভালো হয়েছে, ভালো দাম পাব। কিন্তু রমজান শেষে পাইকাররা শসা কিনতে চাচ্ছে না। এরই মধ্যে আমার ৩০ হাজার টাকা লস হয়েছে।
পাইকারি ব্যবসায়ী আরিফুল হক বলেন, বাজারে শসার ব্যাপক সরবরাহ রয়েছে। ক্রেতাদের চাহিদা না থাকায় শসার দাম নেই বললেই চলে। আজ ১ টাকা কেজি দরে শসা কিনেছি।
খানসামা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন আক্তার বলেন, এ বছর খানসামা উপজেলায় ৫০ হেক্টর জমিতে শসা চাষ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ জমির ফসল তোলা হয়েছে। চাহিদার বিপরীতে বাজারে শসার সরবরাহ কয়েক গুণ বেশি হওয়ায় বাজারের শসার দাম কমে গেছে। কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। পাইকাররা জমি থেকে মাত্র ১ টাকা থেকে ২ টাকা কেজি দরে শসা কিনে খুচরা বাজারে তা ১০ টাকায় বিক্রি করছেন।