বগুড়ার সান্তাহারের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবা হাতের নাগালে পৌছে দেওয়ার জন্য ২০০৪ সালে শহরের ৪নং ওয়ার্ডে রথবাড়ি এলাকায় ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কিন্তু ২০২৩ সালে এসেও সেইহাসপাতাল পুর্নাঙ্গ চালু হয়নি। হাসপাতালটির নির্মাণ কাজ নানা ঘটনা ও নাটকিয়তার মধ্যে
শেষ হয়েছে। কাগজে-কলমে এই হাসপাতালটিতে নয়জন কর্মরত। তাঁরা সরকারের কোষাগার থেকে
বেতনও তুলছে। কিন্তু বাস্তবে একজন ফার্মাসিষ্ট ও একজন মহিলা চিকিৎসক দিয়ে
হাসপাতালটির বহিবিভাগের কার্যক্রম চলছে। আর বাকীরা অন্যত্র চাকুরি করছে,বেতনও উত্তালন
করছেন। কেন হাসপাতালটি পুর্নাঙ্গ চালু হচ্ছে না, সেই বিষয়ে নেই বড় কোন প্রশাসনিক
পদক্ষেপ। হাসপাতালটি চালু না হওয়ায় এই এলাকার মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সরজমিনে আজ (মঙ্গলবার) সকাল ১১ টায় হাসপাতালটিতে গিয়ে দেখা যায়, সান্তাহার ২০ শয্যা
হাসপাতালের ভেতরে অধিকাংশ কক্ষ তালাবদ্ধ। হাসপাতালটির একটি কক্ষে ফার্মাসিস্ট আব্দুল
মান্নান রোগে দেখে ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ওষূধ দিচ্ছেন। বিশাল এই হাসপাতালে সুনসান নিরবতা।
৭জন রোগী শুধূ দেখা গেল। হাসপাতালের সীমানার মধ্যে চিকিৎসকের জন্য তৈরি করা আবাসিক
ভবনগুলি তালাবদ্ধ।
নানা সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালটির নির্মাণের শুরুতে কিছু গুরুত্বপূর্ন আসবাবপত্র এই
হানপাতালের অনুকুলে এসেছিল। বর্তমানেও এই হাসপাতালের জন্য বরাদ্দকৃত আসবাপপত্র বগুড়ায়
এসে পড়ে আসে। বর্তমানে এই হাসপাতালের বর্হিবিভাগে মাত্র কয়েকপ্রকার ওষুধ রোগীদের
দেওয়া হয়।
সান্তাহার নাগিরিক কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ মোসলেম উদ্দীন অবিলম্বে পুনাঙ্গভাবে
হাসপাতালটির চালুে দাবী জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সান্তাহার রথবাড়ি এলাকায় বিভিন্ন ব্যক্তির দানকৃত জমির উপর
২০০৪ সালে হাসপাতালটির ভিত্তিপ্রস্থর হয় ২০০৫ সালে। সিএমএমইউ এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার
কল্পনা মন্ত্রাণালয়ের তত্বাবধানে প্রায় ৩ কোটি ৩৩ লাখ ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে এটির নির্মাণ
কাজ শুরু হয়। প্রায় ৮০ ভাগ নির্মাণ কাজ হওয়ার পর ঠিকাদার বাকী কাজ ফেলে বিল তুলে পালিয়ে
যায়। এমতাবস্থায় ২০০৬ সালে নির্মাণ কাজ সম্মন্ন না হলেও ২০০৬ সালের ২২ অক্টোবর
হাসপাতালটির উদ্ধোধন করেন তৎকালিন স্থানীয় সাংসদ।
অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে হাসপাতালটি। এরপর আবার একই মন্ত্রাণালয় এটির পুনঃনির্মাণ করতে ৩
কোটি ১৩ লাখ ৭৯ হাজার টাকা বরাদ্দ করে। শুরু হয় আবারও নির্মাণ কাজ। প্রথম আলো
বন্ধুসভাসহ , নাগিরিক কমিটিসহ নানা সংগঠন হাসপাতালটি পুনাঙ্গ চালু করার দাবিতে
আন্দোলন,মানববন্ধন পালন করেন। অবশেষে একজন ফার্মমিস্ট ও একজন ও ডেপুটিশনে একজন
চিকিৎসক দিয়ে হাসপাতালটির নামেমাত্র বহিঃবিভাগ চালু করা হয়।
আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফজলে রাব্বী জানান,
হাসপাতালটি পুনঙ্গ চালু করার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টুকটুক তালুকদার বলেন, আমরা এই হাসপাতালটি
চালুকরনের বিষয়ে উপজেলার সভায় আমরা আলোচনা করেছি। তা ছাড়া খোঁজ নিয়ে বুঝতে
পারছি , অবিলম্বে হাসপাতালটি চালু হবে।
বগুড়া জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ শফিউল আযম মুঠোফনে জানান, প্রয়োজনীয়
চিকিৎসক, নার্সসহ অনান্য জনবল এবং অপারেশন থিয়েটারের সামগ্রী ছাড়াও প্রয়োজনীয়
সব সামগ্রির চাহিদাপত্র স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মহপরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। এসব মিললেই
বহুল আলোচিত ও বহুল প্রতিক্ষিত হাসপাতালটি চালু হবে।
মোঃ রবিঊল ইসলাম (রবীন)
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি