গৌরব প্রসাদ সাহা, ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর ধামইরহাটে চিরকুটে বিএনপি ও কৃষক দলের নেতাদের নাম লিখে মামুনুর রশীদ (৪৫) নামের এক যুবকের বিষপানে আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। আজ বুধবার সন্ধ্যায় এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন নিহতের স্ত্রী খাতিজা বেগম। পরিবারে স্ত্রী এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। অকাল মৃত্যুতে এলাকায় বন্ধু বান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে নেমেছে শোকের ছায়া।
মামুন উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড ভাতকুন্ডু এলাকার মৃত মহির উদ্দীনের ছেলে। তিনি জাহানপুর ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক দলের সভাপতি ছিলেন।
চিরকুটে মামুন লিখেছেন, "আমাইতাড়া বাজার কেবল নেটওয়ার্ক ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা হানজালার নির্দেশে এবং শামীম ভাইয়ের কথামতো উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি তরিকুল ইসলাম, পৌর কৃষক দলের সভাপতি আরমান হোসেন রিপন, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ও বাবুল ভাইকে বিভিন্ন সময় ১০ ও ২০ হাজার টাকা করে মোট ৬৫ হাজার টাকা দিয়েছি। টাকা নিয়েও কাজ না হওয়ার কারণে আমার মৃত্যুর জন্য তারা দায়ী।"
স্বামীর মৃত্যুর বিচার চেয়ে খাতিজা বলেন, "গত ১৭ তারিখ সোমবার রাত সাড়ে ১১ টার সময় বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে (খিরা) ফসলের মাঠে স্বামীকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। এরপর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়পুরহাট সদর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেফার করেন মামুনকে। এরপর শরীরের অবনতি ঘটলে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান মামুন বিষ পান করায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হলে আজ বুধবার বেলা ১১ টার সময় পারিবারিক কবরস্থানে মরহুমের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।"
নিহতের ছেলে আবু তাহের ও স্থানীয়রা বলেন, "বরেন্দ্রের ডিপ টিউবয়েলের নিয়োগের কথা বলে কে বা কারা ৭০ হাজার টাকা নিয়েছে। গত ১২ তারিখ বরেন্দ্রের নিয়োগ হওয়ার কথা থাকলেও তা না হওয়ার কারণে মনখারাপ ছিল মামুনের। সম্ভবত এ কারণেই তিনি বিষ পান করে থাকতে পারেন। এ বিষয়ে একটি চিরকুট লিখে গেছেন তিনি।"
চিরকুটের সূত্র ধরে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান তারা।
চিরকুটে অভিযুক্ত হানজালা মুঠোফোনে বলেন, "ডিপটিওবয়েলের বিষয়ে আমি কারও কাছ থেকে কোন প্রকার টাকা-পয়সা নেইনি। কাউকে বলিওনি যে ডিপের বিষয়ে টাকা পয়সা লাগবে।"
ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাইসুল ইসলাম সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, "ওই ব্যক্তি বগুড়া মেডিকেলে মৃত্যুবরণ করেছেন। আমরা তাদের বগুড়াতে পোস্টমর্টেম করতে বলেছি। এ বিষয়ে পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"