গৌরব প্রসাদ সাহা, ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর ধামইরহাটে পদত্যাগের দাবিতে প্রধান শিক্ষক জিন্নাতুন পারভীনকে (৩৮) বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তাঁর স্বামী আশরাফুল হক এগিয়ে এলে তাঁকেও বেঁধে সারাদিন নির্যাতন করা হয়।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার খেলনা ইউনিয়নের রেড়িতলা একাডেমিতে ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
ভুক্তভোগী জিন্নাতুন পারভীন রেড়িতলা একাডেমির প্রধান শিক্ষক ও তাঁর স্বামী আশরাফুল হক আড়ানগর ইউনিয়নের পলাশবাড়ী চিমুনিয়া দাখিল মাদরাসার সহকারী (কম্পিউটার) শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক জিন্নাতুন পারভীন বলেন, “মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয়ে গেলে সহকারী (কম্পিউটার) শিক্ষক কাওসারের নেতৃত্বে কিছু শিক্ষার্থী এবং অভিভাবরা আমার পদত্যাগের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। আমি পদত্যাগ করতে না চাওয়ায় একটি কক্ষে দড়ি দিয়ে বেঁধে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাকে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় আমার স্বামী এগিয়ে এলে তাঁকেও আমার সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়।”
আরেক ভুক্তভোগী তাঁর স্বামী আশরাফুল হক বলেন, “মঙ্গলবার সকালে স্ত্রীকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্কুলে গেলে আমাদের ভয় ভীতি দেখিয়ে বেঁধে রেখে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনে আমাদের দুজনের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় যখম প্রাপ্ত হয়েছি। মোটরসাইকেলসহ কিছু টাকাও তারা কেড়ে নিয়েছে।”
এই ঘটনায় রেড়িতলা একাডেমির সহকারী (কম্পিউটার) শিক্ষক কাওসারের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাহাউদ্দীন ফারুকী বলেন, “খবর পেয়ে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী টিমসহ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিয়ে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।”
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আসমা খাতুন বলেন, “গত এক সপ্তাহ আগে বেড়িতলা একাডেমির প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গত সোমবার এ বিষয়ে আমরা তদন্তও করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “যতটুকু আমি জেনেছি, আজ সকালে প্রধান শিক্ষক স্কুলে গেলে তাঁকে পদত্যাগের জন্য প্রেসার ক্রিয়েট করা হয়। তিনি পদত্যাগ করতে না চাওয়ায় বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয় জানতে পেরে আইনি সহায়তা দিয়ে তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে।”