জামান মৃধা, ডিমলা (নীলফামারী)ঃ-
নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঘোষিত কর্মসূচির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ডিমলা উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪ টায় উপজেলার বিজয় চত্বর থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা।
জানা যায়, গত ২৯ জানুয়ারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ফেব্রুয়ারি মাসে লিফলেট বিতরণ, প্রতিবাদ-বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ, অবরোধ ও হরতালের মত কর্মসূচি ঘোষণা করে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ। এছাড়া ফেইসবুক পেইজে ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি নিয়ে প্রচারও চালাচ্ছে দলটি।
এই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ১ফেব্রুয়ারি শনিবার নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের রামডাঙ্গা এলাকায় নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ১৫/২০জনের একটি দল লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করে। স্থানীয় ছাত্র-জনতা ও পুলিশের তৎপরতায় মুহূর্তেই সটকে পড়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঐ সকল নেতাকর্মীগণ। রাতে পুলিশি অভিযানে রামডাঙ্গার ওই এলাকার আব্দুল হামিদের ছেলে আল-আমিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ডিমলা উপজেলায় লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগের ঘটনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ ছাত্ররা উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বিজয় চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করে উপজেলার প্রধান সড়ক হয়ে থানার সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা 'লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই', 'অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন', 'কুত্তালিগের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন', 'ছাত্র সমাজের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন', 'আবু সাইদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ', ছাত্রলীগের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না' ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।
নিষিদ্ধ সংগঠনের ঘোষিত কর্মসূচির প্রতি প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা যুগ্ম সমন্বয়ক রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, খুনি হাসিনার দোসর লীগ ১-৫ ফেব্রুয়ারি লিফলেট বিতরণ ও ৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জুলাই আন্দোলনের রক্তের দাগ এখনো শুকিয়ে যায়নি। তারা এরকম কর্মসূচি পালনের সাহস পায় কিভাবে? ছাত্রলীগের এমন পোস্ট ও কর্মসূচির বিরুদ্ধে আমাদের এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
সাধারণ শিক্ষার্থী ও প্রশাসনকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার থাকার আহ্বান জানিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা প্রতিনিধি শাকিল আহমেদ প্রধান বলেন, জুলাই-আগস্টে পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। পুলিশ প্রশাসনের উচিত তাদের সেই অবস্থান থেকে বের হয়ে ছাত্রজনতার পক্ষে দাঁড়ানো। ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসরদের উপর কড়া নজরদারি রেখে তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
উল্লেখ্য, ছাত্রজনতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ড. ইউনুসকে বিদায়ের লক্ষ্যে শেখ হাসিনার আহ্বানে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ফেব্রুয়ারিতে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করে নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ১-৫ ফেব্রুয়ারিঃ- লিফলেট ও প্রচারপত্র বিলি, ৬ফেব্রুয়ারি: প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ, ১০ফেব্রুয়ারি: বিক্ষোভ সমাবেশ, ১৬ফেব্রুয়ারি: সড়ক, রেল, জল, বিমান, বন্দরে অবরোধ, ১৮ফেব্রুয়ারি: দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল।