মোঃ সিফাত রানা চাঁপাইনবাবগঞ্জ - কম খরচে কৃষকের উৎপাদিত শাকসবজি পরিবহনের জন্য কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন চালু হলেও সবজি ছাড়াই শূন্য লাগেজ নিয়ে স্টেশন ছাড়ল ট্রেনটি। শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলস্টেশন থেকে সকাল ৯টা ৪৫মিনিটে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ব্যবসায়ীদের তেমন আগ্রহ না থাকায় প্রথম দিনেই শূন্য লাগেজ ভ্যান নিয়েই ছুটতে হলো ট্রেনটিকে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, রহনপুর-ঢাকা রুটে কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেনে রয়েছে পাঁচটি লাগেজ ভ্যান বগি। এরমধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বগি রয়েছে একটি, বাকি চারটি সাধারণ বগি। অত্যাধুনিক লাগেজ ভ্যানে কৃষিপণ্যের মধ্যে ফল, সবজি ছাড়াও রেফ্রিজারেটেড লাগেজ ভ্যানে হিমায়িত মাছ, মাংস ও দুধ পরিবহনের ব্যবস্থা রয়েছে। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের ঢাকায় যাওয়ার জন্য রয়েছে ব্যবস্থা। সবজির সঙ্গে তাদের বিনা ভাড়ায় যাওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
বিশেষ এই ট্রেনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলস্টেশন থেকে পণ্য পরিবহণে ভাড়া কেজিপ্রতি ১ টাকা ৩০ পয়সা। এর সঙ্গে মাঠ থেকে স্টেশন, স্টেশন থেকে মোকাম আলাদা পরিবহন খরচ ও কুলি খরচ মিলে প্রতিকেজির খরচ দাঁড়ায় ৩ টাকারও বেশি। অন্যদিকে, ট্রাকে মালামাল পরিবহনের খরচ হয় দুই থেকে আড়াই টাকা। ফলে ট্রেনে সাড়া মিলছে না ব্যবসায়ীদের। পাশাপাশি সন্ধ্যার সময়ে ট্রেন চালু ও ব্যাপক হারে প্রচার-প্রচারণা করার দাবি ব্যবসায়ীদের।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, মূল ভাড়া কম থাকলেও কুলি ও অন্যান্য পরিবহন খরচ মিলে সড়কপথের চেয়ে ট্রেনে খরচ পড়ছে বেশি। আরেকদিকে ট্রেনের সময় সকালে হওয়ায় বাজারজাত নিয়েও রয়েছে নানা শঙ্কা। তবে বিকেল কিংবা রাতে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করলে দিনের কৃষিপণ্য তুলে রাতভর পরিবহন করে সকালে মোকামে পৌঁছনো যায়। এ ছাড়া ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়সহ নানা কারণে সময়মতো মালামাল পৌঁছাতে না পারলে ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়েও শঙ্কা করছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। এসব কারণে প্রথম দিনে শাক-সবজি ছাড়াই ট্রেনটিকে শূন্য লাগেজ ভ্যান নিয়েই ছুটতে হয়েছে ঢাকার দিকে।
আজিম উদ্দিন নামের এক কাঁচামাল ব্যবসায়ী বলেন, ট্রেনের মূল ভাড়া কম। তবে ফসলের মাঠ থেকে স্টেশন এবং স্টেশন থেকে মোকাম আলাদা যানবাহনে পরিবহন করতে বাড়তি খরচ রয়েছে। এ ছাড়া ট্রেনে মালামাল তোলা ও নামাতে কুলিদের অনেক টাকা দিতে হয়। কুলিরা যে যার ইচ্ছেমতো টাকা নেয়। তাই কেউ ট্রেনে পণ্য পাঠাতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
সকাল থেকেই বৃষ্টি ও আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় প্রথম দিনে বুকিং না হওয়ার দাবি রেল কর্তৃপক্ষের। কৃষকদের চাহিদার প্রেক্ষিতে দিনের পরিবর্তে রাতে চালুর বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানান রহনপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মামুনুর রশীদ।
তিনি জানান, এই রুটে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলস্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে নাচোল, আমনুরা জংশন, রাজশাহীর কাঁকনহাট, রাজশাহী সদর, সরদহ রোড, আড়ানী, নাটোরের আব্দুলপুর, আজিমনগর, পাবনার ঈশ্বরদী বাইপাস, চাটমোহর, বড়ালব্রীজ ও জয়দেবপুর হয়ে ঢাকা পৌঁছাবে।
প্রসঙ্গত, বিশেষ ট্রেনটি প্রত্যেক শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর রেলস্টেশন থেকে ৯টা ১৫ মিনিটে যাত্রা শুরু করে ১৩টি স্টেশনে যাত্রাবিরতি করে পন্য নিয়ে ঢাকায় পৌঁছাবে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে।