ইরান তাদের আলোচিত পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তেহরান জানিয়েছে, ইউরোপের তিনটি দেশের সঙ্গে এই ইস্যুতে বৈঠক করতে চায় তারা। জাপানের সংবাদ সংস্থা কিয়োদোর প্রতিবেদন অনুসারে, আগামী শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের মতে, ইরানের এই পদক্ষেপ এমন সময়ে এলো, যখন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) সম্প্রতি ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে লাগাম টানতে একটি প্রস্তাব পাস করেছে। গত বৃহস্পতিবার সংস্থার পরিচালক বোর্ডের অনুমোদিত এই প্রস্তাবে ইরানকে ইউরেনিয়াম সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি আগামী বছরের শুরুর দিকে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্যও অনুরোধ জানানো হয়।
জাপানি সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই প্রস্তাব ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি এবং আমেরিকার পক্ষ থেকে আনা হয়েছে। এবার ইরান তাদের মধ্যে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে চায়। সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ইরানের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তেহরান সবসময় বিশ্বাস করে যে, পারমাণবিক সমস্যা কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা উচিত। ইরান কখনো আলোচনার পথ থেকে সরে আসেনি।
সম্প্রতি আইএইএর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ ও ২০২০ সালে ইরানে পাওয়া অঘোষিত কয়েকটি সাইটে ব্যাখ্যা না দেওয়া ইউরেনিয়ামের চিহ্ন পাওয়া গেছে। সংস্থাটি অভিযোগ করেছে, ইরান তাদের ইউরেনিয়ামের মজুত নির্ধারিত সীমার বাইরে বাড়িয়েছে এবং তদন্তে সহযোগিতা করতে যথাযথ ভূমিকা পালন করেনি।
পশ্চিমা দেশগুলোর আপত্তি সত্ত্বেও ইরান তাদের পরমাণু কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ দাবি করে আসছে। তেহরান জানিয়েছে, তারা কখনো পারমাণবিক বোমা তৈরির পক্ষে ছিল না। তবে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন এবং ইরানের ওপর হামলা হলে, তাদের পরমাণু নীতিতে পরিবর্তন আনার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান।
মার্কিন নির্বাচনে রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের পর ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এর আগে ট্রাম্পের সময়ে ইরানের ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। আগামী জানুয়ারিতে ট্রাম্পের ক্ষমতায় ফেরার আগেই পরমাণু ইস্যুতে সমঝোতায় আসতে চায় ইরান।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বৈঠক ইরানের কূটনৈতিক অবস্থান এবং পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।